আমাদের কি কি মৌলিক দক্ষতা অর্জন করা জরুরি

সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুগণ আমাদের কি কি মৌলিক দক্ষতা অর্জন করা জরুরি সে বিষয়ে আজকের আর্টিকেল লেখা হবে। সমাজে দক্ষ লোকের অনেক অভাব। যার কারণে প্রতিটি বিষয়ে অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দেওয়া প্রয়োজন।
দক্ষ লোকেরা সকল কাজে সফল হন। কোন বিষয়ের দক্ষতা সম্পর্কে জানতে আজকের আর্টিকেল ভিজিট করুন।

ভূমিকা

আজকের আর্টিকেল আমাদের কি কি মৌলিক দক্ষতা অর্জন করা জরুরি। সমাজের দক্ষ লোক গুলো সকল কাজে সফল হন। আমাদের মাঝে দক্ষ লোকের অভাব। কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা গ্রহণ করার পরে পর্যাপ্ত দক্ষতা থাকলে দেশ পরিচালনার ভার গ্রহণ করতে পারে।
এছাড়াও সমাজের দক্ষ লোকের দ্বারা বিভিন্ন রকম উন্নয়নের কাজ করা সম্ভব। যে দেশে যত বেশি দক্ষ লোক রয়েছে সে দেশ ও জাতি তত এগিয়ে গিয়েছেন। বিশ্বের উন্নত দেশগুলি সব সময় দক্ষ লোক তৈরিতে ব্যস্ত। আমাদের দেশ গড়তে প্রচুর দক্ষ লোকের প্রয়োজন রয়েছে। মৌলিক দক্ষতা সম্পর্কে জানতে আজকের আর্টিকেল ভিজিট করুন।

আমাদের কি কি মৌলিক দক্ষতা অর্জন করা জরুরি

জীবন চলার পথে আমরা বিভিন্ন সমস্যায় পতিত হই। এগুলোর সমস্যার সমাধানের জন্য আমাদের দক্ষতা প্রয়োজন। এমন একটি জ্ঞান অর্জন যা আমাদের বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শী করে তোলে। দক্ষতার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি সাফল্যের শিখরে পৌছতে পারেন। আমাদের কি কি মৌলিক দক্ষতা অর্জন করা জরুরি সে বিষয়ে আলোচনা করা হলো।

বেসিক কম্পিউটারের দক্ষতা অর্জনঃ বর্তমান বিশ্বের সকল শিক্ষায় কম্পিউটার নির্ভরশীল। এছাড়াও বিভিন্ন অফিস আদালত কলকারখানা পরিচালিত হয় কম্পিউটারের মাধ্যমে। বিশেষ করে স্কুল কলেজ বাসা বাড়িতে সব সময় কম্পিউটার প্রয়োজন হয়। চাকুরী করতে হলেও কম্পিউটারের দক্ষতা অর্জন করতে হয়।

স্কুল-কলেজের বিভিন্ন নোট জমির খাজনা বিভিন্ন অফিস আদালতের হিসাব ব্যাংক ও বিমার হিসাব ব্যবহার করার জন্য কম্পিউটার প্রয়োজন। যার কারণে একজন ব্যক্তিকে কম্পিউটার সম্পর্কে পর্যাপ্ত দক্ষতা অর্জন করতে হবে। কম্পিউটারের দক্ষতা থাকার জন্য যেগুলো বিষয় সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।

*কম্পিউটার সম্পর্কে ধারণা।
*টাইপিং, মাইক্রোসফট ওয়ার্ড।
*মাইক্রোসফট এক্সেল।
*মাইক্রোসফট পাওয়ারপয়েন্ট।

ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা অর্জনঃ বিশ্বের সবচাইতে জনবহুল ভাষা হল ইংরেজি। যার কারণে ইংরেজি ভাষার সমাদর বিশ্বব্যাপী রয়েছে। বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের সঙ্গে কথা বলতে লাগলে ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করতে হয়। নিজের মাতৃভাষা দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি ইংরেজি ভাষাতেও পর্যাপ্ত দক্ষতা অর্জন করতে হবে।

সর্বদা শাবলীর ভাষায় ইংরেজি কথা বলতে পারা এবং ইংরেজি লিখতে পর্যাপ্ত দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। দেশে ফ্রিল্যান্সিং দ্রুত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনলাইনের প্ল্যাটফর্ম ভাল করতে লাগলে ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা থাকতে হবে। এছাড়াও এক্সপোর্ট ও ইমপোর্ট ব্যবসার ক্ষেত্রে ইংরেজি জানা প্রয়োজন।

বিশ্বের সবচাইতে দামি বিশ্ববিদ্যালয় হার্ভার্ড, ইয়েল, প্রিন্সটন, ক্যামব্রিজ, বা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতে হলে ইংরেজি ভাষায় লেখাপড়া করতে হবে। যার কারণে ইংরেজি ভাষায় আমাদের পর্যাপ্ত দক্ষতা অর্জন করা প্রয়োজন।

প্রাথমিক চিকিৎসায় দক্ষতা অর্জনঃ প্রত্যেকটি মানুষ তার প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যাপারে দক্ষতা অর্জন করার প্রয়োজন। আমরা যেকোনো সময় দুর্ঘটনায় পড়তে পারি। এছাড়া আমাদের পরিবার-পরিজন অথবা নিকট আত্মীয় বিভিন্ন দুর্ঘটনায় পড়তে পারে। এ অবস্থায় কি করা উচিত অথবা কি করা উচিত নয় এগুলো সাধারণ জ্ঞান আমাদের থাকা প্রয়োজন।

দুর্ঘটনা স্থলের ডাক্তার পাওয়া যায় না। আমরা যদি প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা ব্যাপারে দক্ষতা অর্জন করি তাহলে এগুলো বিষয়ক প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করতে পারবো। যার কারণে ভুক্তভোগীরা বড় ক্ষতি অথবা মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচতে পারে। এই জন্য আমাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যাপারে অত্যন্ত দক্ষতা অর্জন করা প্রয়োজন।

যোগাযোগ দক্ষতা অর্জনঃ অন্যের দেওয়া তথ্য অথবা যোগাযোগ ব্যাপারে সার্বিক ধারণা অর্জনের জন্য দক্ষতা প্রয়োজন। দক্ষতা অর্জন সম্পর্কিত শিক্ষা আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অন্য দেশের মতো দেওয়া হয় না। অথচ আমাদের শিক্ষার্থী চাকরিজীবী বা ব্যবসায়ী সবাইকে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে যোগাযোগ দক্ষতা অর্জন করা প্রয়োজন।

কোন লক্ষ্য অর্জনের উন্নত শিকড়ে পৌঁছতে হলে অবশ্যই যোগাযোগ দক্ষতা থাকার প্রয়োজন। স্কুল কলেজ মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় যে কোন বয়সের শিক্ষার্থীদের কে যোগাযোগ দক্ষতা অর্জন করা অত্যন্ত প্রয়োজন। যোগাযোগ দক্ষতার মাধ্যমেই একজন এক জায়গা থেকে প্রতিষ্ঠিত না হতে পারলে অন্য জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।

এছাড়াও যোগাযোগ দক্ষতার মাধ্যমে বিভিন্ন লব্ধ জ্ঞান আদান-প্রদান চাকুরী আদানে প্রদান সহ ব্যবসা-বাণিজ্যে পর্যাপ্ত যোগাযোগ দক্ষতা অর্জন করতে হবে।

মানি ম্যানেজমেন্টে দক্ষতা অর্জনঃ সাধারণত নিজের অর্জিত টাকাকে কিভাবে খরচ করবেন অথবা ইনভেস্ট করবেন সে ব্যাপারে পর্যাপ্ত দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। আপনি আপনার টাকা বিলাসিতাই খরচ করবেন অথবা ভুল জায়গায় ইনভেস্ট করবেন অথবা ভালো জায়গায় ইনভেস্ট করবেন এগুলো ব্যাপারে আপনাকে পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকতে হবে।

আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় মানি ম্যানেজমেন্ট শেখানো হয় না। স্কুল কলেজ লাইফ থেকে মানি ম্যানেজমেন্ট গুলো ভালোভাবে শিক্ষা দেওয়া প্রয়োজন ছিল। যার কারণে একজন শিক্ষিত লোক হঠাৎ করে তার লব্ধ টাকাকে ব্যবসায় ইনভেস্ট করে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। যার কারণে মানি ম্যানেজমেন্ট ব্যাপারে আমাদের অত্যন্ত দক্ষ হতে হবে।

ফটো/ ভিডিও এডিটিং বিষয়ে দক্ষতাঃ আমরা প্রফেশনালি না হয়েও ব্যক্তিগত কাজে ফটো বা ভিডিও এডিটিং বিষয়ে দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। সাধারণত বিভিন্ন জায়গায় সফরের সময় ফটো উঠানো অথবা ভিডিও এডিটিং প্রয়োজন হয়। এছাড়াও অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ফটো ও ভিডিও এডিটিং করে অর্থ উপার্জন করেন।

বিভিন্ন বড় বড় অনুষ্ঠানে ফটো ও ভিডিও এডিটিং করা হয়। অতএব যেকোনো সময় ক্যামেরা অথবা মোবাইল দিয়ে ফটো ও ভিডিও এডিটিং করা যাবে যদি এগুলো বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব হয়।

ইলেকট্রিক সংক্রান্ত দক্ষতা অর্জনঃ বাসা বাড়ি ও বিভিন্ন অফিস আদালতে আমরা বিদ্যুৎ ব্যবহার করে থাকি। আমাদের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে অসংখ্য বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করি। আমাদের প্রায় ছোটখাটো বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। বেসিক ধারণা থাকলে আমরা ছোটখাটো সমস্যা গুলো এড়িয়ে চলতে পারি।

এছাড়া ছোটখাটো কাজের ইলেকট্রিশিয়ান নিয়ে আসলে অনেক বিরম্বনায় পড়তে হয়। এইজন্য ছোটখাটো বৈদ্যুতিক কাজের জন্য ইলেকট্রিক সংক্রান্ত দক্ষতা থাকা প্রয়োজন।

সাঁতারে দক্ষতা থাকাঃ সাঁতার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে বিষয়ে অত্যন্ত দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। সাধারণত আমাদের দেশ নদীমাতৃক দেশ হওয়ার জন্য নৌপথে বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। এক্ষেত্রে ছোটখাটো দুর্ঘটনায় সাঁতার কাটা জানলে উদ্ধার হওয়া সম্ভব হয়।

এছাড়াও সামরিক চাকুরীর ক্ষেত্রে সাঁতার কাটা জানা আবশ্যক। সাঁতার কাটা না জানলে বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। এইজন্য সাঁতারের ব্যাপারে অত্যন্ত বেশি দক্ষতা থাকা প্রয়োজন।

রান্না ব্যাপারে দক্ষতা অর্জনঃ আপনি যদি নারী হন তাহলে আপনাকে অবশ্যই রান্না ভালোভাবে জানতে হবে। এছাড়া নারী ও পুরুষ উভয়ে যদি ভাল রান্না করতে পারেন তাহলে রান্না ব্যাপারে বিভিন্ন চাকরি বা ব্যবসা করতে পারবেন। এছাড়াও বাসায় বা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ভাল রান্না করতে পারলে তার চাহিদা অনেক বেশি।

বিশেষ করে সবাই ভালো রান্না করা খাবার খেতে পছন্দ করে। তার কারণে নারী পুরুষ উভয়েরই রান্না ব্যাপারে অনেক দক্ষতা অর্জন করা প্রয়োজন।
যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধির উপায় ‌‌‌‌‌
ব্যক্তিগত ও পেশাদার উভয় ক্ষেত্রে ভালো যোগাযোগ দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। দক্ষতা ভালো থাকলে স্বচ্ছতার সাথে নিজেকে বিভিন্ন জায়গায় প্রকাশ করে বিভিন্ন রকম সফলতা নিয়ে আসা সম্ভব হবে। যার ফলে বিভিন্ন জায়গায় সুসম্পর্ক রক্ষা করা যাবে। আমাদের কি কি মৌলিক দক্ষতা অর্জন করা জরুরি জানা প্রয়োজন। যোগাযোগ বৃদ্ধির উপায় আলোচনা করা হলো।
নিজেকে বুঝতে শেখাঃ কোন কাজ করতে অথবা অন্যকে বুঝতে দিতে নিজেকে প্রথম বুঝতে হবে। কোন জিনিস জয় করে কিভাবে সামনে এগোনো যায় তা চেষ্টা করতে হবে। নিজেকে বুঝতে পারলে ও আত্ম সচেতনতা থাকলে আত্মনিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। যার কারণে মানসিক দিক দিয়ে আরো অনেক বেশি স্থিতিশীলতা অর্জন করা সম্ভব হবে।

যার ফলে ঠান্ডা মাথায় অনেকের সঙ্গে আলাপ চালিয়ে যেতে পারবেন এবং তাদের মন জয় করতে পারবেন। যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এটি একটি ভালো উপায়।

পর্যবেক্ষণ ও শোনার ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ ভালো যোগাযোগের অন্যতম শর্ত হলো পারস্পরিক অংশগ্রহণ। যার কারণে সব সময় অন্যকে কথা বলার সুযোগ দিতে হবে এবং ভালো করে সেটা মন দিয়ে শুনতে হবে। ওপরে কি বলতে চাচ্ছে তার সরাসরি বলতে নাও পারে সে ক্ষেত্রে তাদের মুখ কণ্ঠস্বর এবং তাদের ভাগ ভাব ভঙ্গি দেখে কি বলতেছে তা ধারণা করতে হবে।

যারা মুখে না বললে তাদের আচরণ এবং কি প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে তার উপর নির্ভর করে সেগুলো ধারণ। তাহলে উভয়ের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি হবে না।

চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলুনঃ ভালো যোগাযোগ স্থাপনের জন্য যখন কথা বলবেন তার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলবেন। চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলার অর্থ হলো তার কথা ভালো করে শোনা হচ্ছে। যার কারণে তিনি যে আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ সেটা মনে করবেন। যার কারণে উভয়ের মধ্যে যোগাযোগ সম্পর্ক আরো বেশি উন্নত হবে।

বক্তব্য পরিষ্কার রাখুনঃ ভালো যোগাযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে উভয়ের মধ্যে কথা বলার সময় আপনার বক্তব্য পরিষ্কার করে তুলুন। কথা বলার সময় ধীরে ধীরে স্পষ্ট করে কথা বলুন। আপনার কথা অপরপক্ষ বুঝতে পারছে কিনা সেগুলো জানতে চান। অপরপক্ষ আপনার কথা বুঝতে না পারেন তাহলে ভালো করে বুঝিয়ে বলুন।

কৌশলী হোনঃ যোগাযোগ মাধ্যম এর গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো কৌশলী হওয়া। আপনি যদি কৌশলী হতে পারেন তাহলে অন্যরা আপনার কথা আগ্রহ সহকারে শুনবে। যোগাযোগ দক্ষতা থাকলে অন্যের প্রতিক্রিয়া ও মনোভাব শহরের সহজে বোঝা যাবে।

ইতিবাচক ও সহযোগিতাশীল হোনঃ মানুষ আপনাকে পছন্দ করলে আপনার কথা শুনতে আগ্রহী হবে। যার কারণে অন্যদের ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব রাখুন। এছাড়াও অন্যের ব্যাপারে সহযোগিতা শীল এবং শ্রদ্ধাশীল হোন। তাহলে উক্ত ব্যক্তিগণ আপনাদের আপনার সঙ্গে সব সময় থাকতে চাইবে। যার কারণে যোগাযোগ দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব হবে।

বডি ল্যাঙ্গুয়েজঃ কারো সঙ্গে কথা বলতে লাগলে বডি ল্যাঙ্গুয়েজ এর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আপনি যখন নিজেকে অন্যের কাছে উপস্থাপন করবেন তখন সুন্দর সাবলীল ভাষায় কথা বলবেন। সেই ক্ষেত্রে ভালো করে দাঁড়ান অথবা ভালো করে বসুন, হাত কিভাবে নড়াচড়া করবেন সব বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।

নিরবচ্ছিন্নভাবে কথা বলুনঃ কারো সঙ্গে কথা বলার সময়ই তার দিকে মনোযোগ দিয়ে কথা বলুন। যদি সম্ভব হয় আপনার ফোনটি সাইলেন্ট করে কথা বলুন। কারো সঙ্গে কথা বলার সময় অন্যের সঙ্গে কথা বললে মনোযোগ নষ্ট হয়ে যায়। এজন্য কথা বলার সময়ই নীরবচ্ছিন্নভাবে একাগ্রচিত্তে কথা বলুন। নীরবচ্ছিন্নভাবে একাগ্রচিত্তে কথা বললে যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধি করার সহজ হবে।

সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করুনঃ বিভিন্ন রকম সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করলে বিভিন্ন লোকের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক ও যোগাযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়াও অন্যদের আচরণ ব্যাপারে ধারণা করা যাবে এবং সেখান থেকে অনেক কিছু শেখা যাবে। কিভাবে কথা বললে যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে সে ব্যাপারে অনেক ধারণা পেতে পারেন।

দরকারি ১০টি প্রয়োজনীয় মানবীয় জীবন দক্ষতা

আজকের আর্টিকেল আমাদের কি কি মৌলিক দক্ষতা অর্জন করা জরুরি। একজন মানুষের দুই ধরনের দক্ষতা থাকে একটি কারিগরি দক্ষতা ও অপরটি মানবিক দক্ষতা। সাধারণত আমরা কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপড়ার মাধ্যমে কারিগরি দক্ষতা অর্জন করি। এর বাইরে একটি লোকের যে দক্ষতা গুলো থাকে সেগুলো মানবিক দক্ষতা। মানবিক দক্ষতা গুলো আলোচনা করা হলো।
যোগাযোগ দক্ষতাঃ সাধারণত লেখাপড়া যেই হোক না কেন সবারই যোগাযোগ দক্ষতা অর্জন করা অনেক দরকার। সাধারণত ভাষাগত দক্ষতা, ইতিবাচক দক্ষতা, শারীরিক ভাব ভঙ্গি প্রকাশ করার দক্ষতা, লেখার দক্ষতা, গল্প করার দক্ষতা, সোনার আগ্রহ, পাবলিক স্পিকিং সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা, ইমেইল লেখা, নিজের বক্তব্য তুলে ধরা ইত্যাদি যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।

যারা লেখাপড়া করেন তাদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই এগুলো দক্ষতা অর্জন করা প্রয়োজন। বিশেষ করে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় কথা বলার দক্ষতা অর্জন করা প্রয়োজন।

নেতৃত্ব বিকাশের দক্ষতাঃ যেকোনো অবস্থান থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য গুণাবলী থাকা দরকার। যদি কোন প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজার হতে চান অথবা দক্ষ কর্মী হতে চান তাহলে অবশ্যই নেতৃত্বের দক্ষতা থাকা দরকার। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব দেন স্থানীয় সরকারের নেতৃত্ব দেন।

বিভিন্ন রকম পরামর্শ দেওয়া-নেওয়া সংগ্রাম নিরসনের কৌশল জানা কূটনীতি মতামত দেওয়ার নেওয়া ইত্যাদি সম্পর্কে পর্যাপ্ত দক্ষতা অর্জন করা প্রয়োজন। অনুষ্ঠান পরিচালনা বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্ব দেওয়া ইত্যাদি করতে চাইলে অবশ্যই নেতৃত্ব বিকাশের দক্ষতা থাকা প্রয়োজন।

পেশাগত দক্ষতা অর্জনঃ পেশাগত দক্ষতা বলতে কোন প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা, পরিকল্পনা করা, মিটিং, পরিকল্পনা, প্রযুক্তির ব্যবহারের আগ্রহ, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের কোথায় কি হচ্ছে সে সম্পর্কে জানা গবেষণা করার আগ্রহ, ব্যবসায়ের রীতি নীতি সম্পর্কে জানা, প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং নেওয়া গ্রাহক সেবার নানান দিক পর্যালোচনা, ইত্যাদি ব্যাপারে সার্বিক দক্ষতা অর্জন করা প্রয়োজন।

দক্ষতা থাকলে লেখাপড়া শেষে কোন কর্মস্থলে যেতে ভয়-ভীতি থাকে না। এছাড়াও পেশাগত দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে বিভিন্ন কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করতে সুবিধা হয়। এই জন্য পেশাগত দক্ষতা থাকা প্রয়োজন।

ব্যক্তিগত দক্ষতাঃ আপনি কতটা ইতিবাচক অথবা নেতিবাচক পরিবেশে নিয়ে কতটুকু নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন সে ব্যাপারে আপনার ব্যক্তিত্বকে রক্ষা করতে হবে। সাধারণত ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্ট ব্যক্তি সচেতনতা আবেগের নিয়ন্ত্রণ আত্মবিশ্বাস উৎসাহ আপনি কতটা সহানুভূতিশীল এবং বন্ধুত্বপূর্ণ এসব ব্যবস্থাপনা বোঝায়।

এই জন্য নিজেকে ব্যক্তিগতভাবে প্রস্তুত করতে হবে। নিজেকে দুর্বলতার কোন স্থানে দেওয়ার সুযোগ দেওয়া যাবে না। আর এগুলোকে এতে রক্ষা হতেই ব্যক্তিগত দক্ষতা অর্জন করা প্রয়োজন।

নিজেকে উপস্থাপনের দক্ষতা অর্জনঃ নিজেকে অন্যের কাছে ভালো করে উপস্থাপন করতে হবে। আপনি একজন দক্ষ মানুষ সেটি অন্যের কাছে নিজেকে উপস্থাপনের মাধ্যমে প্রমাণ হবে। নিজের ভালো ও শক্তির জায়গাগুলোকে কাজে লাগিয়ে অন্যের কাছে ভালো করে উপস্থাপন করলে অন্যের কাছে ব্যান্ডিং হতে পারেন।

ইতিবাচক চিন্তা করা শিখতে হবেঃ চলার পথে সকল সিদ্ধান্ত গুলো ইতিবাচক করতে হবে। এ ছাড়াও চিন্তার শক্তি বিকাশ এর জন্য অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ড্যানিয়েল কাহনেম্যানের থিংকিং ফাস্ট এন্ড স্লো বইটি পড়তে পারেন। এই বই পড়লে চিন্তার গবেষণার বিকাশ, ইতিবাচক চিন্তা করা শিখার এবং সবার মাঝে যা ছড়িয়ে দেওয়ার দক্ষতা অর্জন করা যাবে।

সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনের দক্ষতা অর্জনঃ জীবনে আপনি কতটা সফল হবেন তা নির্ভর করে আপনার সৃজনশীলতা ও উদ্ভবনের দক্ষতার উপর। সৃজনশীলতার সঙ্গে বুদ্ধিমত্তার বিশাল সম্পর্ক রয়েছে। উদ্ভাবনী শক্তিতে দক্ষ হলে যে কোন মানুষের সঙ্গে কাজ করা সম্ভব হয়। আর এজন্য সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবন সম্পর্কে দক্ষতা অর্জন করা প্রয়োজন।

সংবেদনশীলতাঃ সংবেদনশীলতা হলো জীবনের বড় একটি শক্তি। কোন কাজ করতে যে ব্যর্থ হলে আপনি কতটি ভেঙ্গে পড়বেন না, স্বাভাবিক থাকবেন, সেটি আপনার ভালো মন্দের উপর নির্ভর করবে। যেকোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও মানসিক অনুভূতি ইতিবাচক থাকতে হবে যাতে পুরাই আপনি সেখান থেকে উঠে আসতে পারেন।

সমস্যার সমাধান ও সিদ্ধান্ত গ্রহণঃ আপনি যেকোনো সময় বিভিন্ন রকম সমস্যায় পতিত হতে পারেন এবং সেখান থেকে আপনার সমাধানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরে সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করতে পারলে আর উঠে দাঁড়াতে পারবেন না। যার কারনে সব সময় আপনার মনোবল এবং সমস্যার সমাধানের মানসিকতা সম্পর্কে দক্ষতা থাকতে হবে।

শেখার আগ্রহঃ সবচাইতে বড় দক্ষতা হলো কোন কিছু শেখার আগ্রহ থাকা। কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় লেখাপড়া করার পরে আমরা অনেকেই অহংকারবশত শিক্ষার আগ্রহ হারিয়ে ফেলি। বাস্তবে শেখার আগ্রহ সবসময় থাকা প্রয়োজন। শিখার কোন শেষ জানতে পারবেন আবার ভিন্ন শেখার আগ্রহ থাকলে আরেকটি জানতে পারবেন। যার কারনে সব সময় শেখার আগ্রহের দক্ষতা থাকা।

লেখক এর মন্তব্য

সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুগণ আমাদের কি কি মৌলিক দক্ষতা অর্জন করা জরুরি এ বিষয়ে আজকের আর্টিকেল লেখা হল। আমাদের চলার জীবনে ভালো দক্ষতা অর্জন করলে সকল ক্ষেত্রে সফল হওয়া যাবে। এছাড়াও দক্ষ লোকদের চাহিদা সমাজে অনেক বেশি। দক্ষ লোকদের সবাই সমাদর করেন।

যার কারণে সর্বক্ষেত্রে আমাদের ভালো দক্ষতা অর্জন করা প্রয়োজন। আজকের আর্টিকেলে বিভিন্ন ধরনের দক্ষতা অর্জনের ব্যাপারে আলোচনা করা হয়েছে। দক্ষতার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানতে আজকের আর্টিকেল ভিজিট করুন। আশা করি অনেক ভাল লাগবে এবং অনেক কিছু জানতে পারবেন। ভালো লাগলে বন্ধুদের মাঝে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url