পিঠ ব্যথা দুরকরার ১২টি ঘরোয়া উপায়

সুপ্রিয় পাঠকগণ পিঠ ব্যথা দুরকরার ১২টি ঘরোয়া উপায় বিষয়ে আজকের আর্টিকেল লেখা শুরু করলাম। পিঠ ব্যথা যে কোন সময় আমাদের সবারই হয়ে থাকে।
যার কারণে পিঠ ব্যথা থেকে বেঁচে থাকার জন্য বিভিন্ন রকম চেষ্টা করা প্রয়োজন। পিঠ ব্যথা সম্পর্কে জানতে আমাদের সঙ্গে থাকুন।

ভূমিকা

আজকের আর্টিকেল পিঠ ব্যথা দুরকরার ১২টি ঘরোয়া উপায়। সাধারণত আমাদের বয়স ৪০ বছর অতিক্রম করলে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পর্যাপ্ত ব্যথা অনুভূত হয়। বিশেষ করে পিঠের ব্যথা আমাদের স্বাভাবিক কাজকর্মে অন্তরায় হয়। পিঠের ব্যথা হলে, কারণগুলো ভালো করে জেনে পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে ভালো চিকিৎসা করা প্রয়োজন। 
এছাড়া পিঠের ব্যথা দূর করার জন্য ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার খাওয়া প্রয়োজন। সাধারণত ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের অভাবের কারণেও পিঠের বিভিন্ন রকম ব্যথার কারণ হতে পারে। আমরা সাধারণত সূর্যের আলো থেকে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি পেতে পারি। পিঠের ব্যাথা সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জানতে আমাদের সঙ্গে থাকুন।

পিঠের ডান পাশে ব্যথার কারণ

আজকের আর্টিকেল পিঠ ব্যথা দুরকরার ১২টি ঘরোয়া উপায়। আমাদের প্রায় দৈনন্দিন পিঠের বিভিন্ন রকম ব্যথা হয়। পিঠের ব্যথা কোন না কোনদিন হয়না এমন লোক পাওয়া অনেক কষ্টকর। এগুলো ব্যথা বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। শুরুতে পিঠের ব্যথা অল্প হলেও আস্তে আস্তে তা বেড়ে যায়। পিঠের ব্যথা বেড়ে গেলে দৈনন্দিন কাজকর্ম ও চলাফেরা অনেক সমস্যা হয়।

পিঠের ব্যাথা সাধারণত পিঠের মাঝখানে পিঠের ডান পাশে অথবা পিঠের বাম পাশে পিঠের উপরে অথবা পিঠের নিচে বিভিন্ন রকম হতে পারে। পিঠের যেখানে হোক না কেন কারণ জেনে তার চিকিৎসা করা অত্যন্ত প্রয়োজন। পিঠের ডানপাশে ব্যথার কারণ আলোচনা করা হলো।

অতিরিক্ত ভার গ্রহণঃ প্রতিদিন কাজ করার সময় অতিরিক্ত ভার বহন করলে পিঠের ডান পাশে ব্যথা হয়। সাধারণত পোশাক বেশি দিন পড়লে আস্তে আস্তে পাতলা হয়ে ছিড়ে যায়। এরকমভাবে প্রতিদিন অতিরিক্ত ভার গ্রহণ করলে পিঠের পেসি গুলো দুর্বল হয়ে ব্যথায় রূপান্তরিত হয়। এছাড়া পেশি ভার গ্রহণের ফলে টান পড়ে ব্যথা হয়।

অনেক সময় পেশাদার খেলোয়াড়ের খেলার সময় পিঠের টান পড়ে পিঠের ডান পাশে ব্যথা হয়। প্রত্যেকদিন রাজমিস্ত্রির দিনমজুর কাঠমিস্ত্রি তাদের কাজ করার সময় পিঠে টান পড়ে। দিনমজুরের অনেক সময় অভার ভার গ্রহণ করার ফলে পিঠের টান পড়ে এ অবস্থায় পিঠের ডান পাশে ব্যথা হয়।

মেরুদন্ডের অসামঞ্জস্যতাঃ স্কোলিওসিস হওয়ার ফলে পিঠের মেরুদন্ডের অসামঞ্জস্যতা হয়ে পিঠের ডান পাশে ব্যথা হয়। শুয়ে থাকার সময় অনেক সময় মেরুদন্ডে ঢেকে যায় যার কারণে দুই পাশের সমান হওয়ার পরে না যার কারণে পিঠের ডান পাশে ব্যথা হয়। এছাড়া উঁচু নিচুতে হাঁটার সময় এক মেরুদন্ডের এক পার্শ্ব ডুবে যায় ওরা অপর পাশ উপরে উঠে পিঠের ডান পাশে ব্যথা হয়।

পাঁজরের হাড়ের সমস্যার জন্যঃ মেরুদন্ডের সঙ্গে পাঁজরের হাড় যুক্ত থাকে। এক্ষেত্রে পাঁজরের হাড় যদি ভেঙ্গে যায় অথবা পাঁজরের হাড়ের তরুণাস্তিতে ব্যথা লাগে তাহলে পিঠের ডান পাশে ব্যথা হয়। পাঁজরের হাড়ের কারণে ব্যথা হলে সে ব্যথা খুব তাড়াতাড়ি গোটা পিঠ ছড়ে যায়। ব্যথা বেশি হলে চলাফেরা অত্যন্ত কষ্ট হয়।

অস্টিওআর্থ্রাইটিসঃ বয়স ৪০ বছর পার হলে প্রতিনিয়ত ভারী কাজ করলে পিঠের মেরুদন্ডের উপর চাপ পড়ে পিঠের ডান পাশে ব্যথা হয়। ভারি ভার বহনের ফলে মেরুদন্ডের ছোট ছোট জয়েন্টের মধ্যে টান পড়ে এবং ক্ষয় হতে থাকে যেটি আমরা অস্ট্রিও আর্থ্রাইটিস বলে থাকি। অস্টিও আর্থারাইটিস হওয়ার ফলে পিঠের ডান পাশে পর্যাপ্ত ব্যথা রাখা হয়।

স্নায়ুর বিভিন্ন সমস্যার কারণেঃ পিঠের মেরুদন্ডের ভিতরে স্প্রিং এর মত অংশ থাকে যাকে আমরা ডিস্ক বলি। জিস্ককে অতিরিক্ত চাপ পড়ার ফলে ভিতর থেকে জেল বের হয়ে পার্শ্ববর্তী রগে চাপ দেয়। আর এভাবে চাপ দেওয়ার ফলে পিঠে ব্যথা হয়ে সরে যায়। এই ব্যথা ঝিনঝিন করে অথবা অবস হয়ে জ্বালাপোড়া করতে পারে। এই ব্যথা হওয়ার ফলে চলাফেরায় অত্যন্ত কষ্ট হয়।

অস্বাস্থ্যকর ভাবে চলাফেরা করাঃ ‌ অনেকেরই বসে থাকা অথবা দাঁড়িয়ে থাকার ভঙ্গি ভালো নয় সেজন্য তাকে অস্বাস্থ্যকর চলাফেরা বলা হয়। বসে থাকা অথবা দাঁড়িয়ে থাকার ভঙ্গি ভালো না হলে পিঠের ডান পাশে ব্যথা হয়। এক্ষেত্রে অনেক সময় কুঁজো হয়ে বসা হয় অথবা দাঁড়িয়ে থাকার সময় দুই পায়ের সমান ভর দেওয়া হয় না।

একপাশে ভর বেশি এক পাশে কম যা হয় যার কারণে পিঠের ডান পাশে ব্যথা হয়। অস্বাস্থ্যকর এই চলাফেরার কারণে মেরুদন্ডের চাপের তারতম ঘটে। যার কারণে পিঠের পেশিগুলো পিঠকে ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়। গুলোতে চাপ লাগে এবং পিঠের মেরুদন্ডে ব্যথা ও পিঠের ডান দিকে ব্যথা হয়।

অলস জীবন যাপনঃ আমাদের মধ্যে অনেকেই অলস জীবন যাপন করেন। অধিকাংশ সময় শুয়ে বসে কাটান। এভাবে অলস জীবন যাপন করার ফলে কায়িক পরিশ্রম কম হয় যার কারণে মাংসপেশিগুলো আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে যায়। পরিশেষে পিঠের ডান পাশে হালকা ব্যথা শুরু হয় এবং আস্তে আস্তে ব্যথা গুলো বেড়ে যায়।

পেশাগত কারণঃ আমরা দৈনন্দিন বিভিন্ন লোক বিভিন্ন পেশায় কাজ করি। অনেকের কাজের ধরন ভিন্ন হয় পিঠের ডান পাশে ভার বেশি পরে। এছাড়াও ভায়োলিন বাজান, গিটারিস্ট বাজান, কম্পিউটারে কাজ করার সময়ে ডানহাতে মাউস বেশি পরিমাণ ব্যবহার করতে হয়। যার ফলে শরীরের ডান পাশে অতিরিক্ত চাপ পড়ে এবং পিঠের ডান পাশে পর্যাপ্ত ব্যথা হয়।

ফুসফুসের সংক্রমনের কারণেঃ বক্ষ পিঞ্জর এর ভিতর ফুসফুস অবস্থিত। যার কারনে ফুসফুসের নিউমোনিয়া হলে অথবা ফুসফুসের বিভিন্ন প্রদাহের কারণে পিঠের ডান পাশে পর্যাপ্ত ব্যথা হয়।

কিডনিতে পাথর হওয়ার কারণেঃ অনেক সময় কিডনিতে বিভিন্ন রকম প্রদাহ হয়। কিডনিতে প্রদাহ অথবা কিডনিতে পাথর হলে পিঠের ডান পাশে পর্যাপ্ত ব্যথা হয়। এই ব্যথাগুলোর সাধারণত কোমরের ডান পাশে থেকে পিঠ পর্যন্ত হয়।

অতিরিক্ত মানসিক চাপ থাকলেঃ অতিরিক্ত মানসিক চাপ থাকলে পিঠের পেশিগুলো উপর ও মাংসপেশির উপর পর্যাপ্ত চাপ পড়ে। যার ফলে পিঠের মাংসপেশিগুলো অত্যন্ত শক্ত হয় এবং স্পাজম হতে পারে। সবচেয়ে বেশি টাইট হয় ঘাড় ও পিঠের মাংস পেশি। মাংসপেশী টাইট হওয়ার ফলে পিঠের ডান পাশে ব্যথা ও যন্ত্রণা বৃদ্ধি পায়।

পিঠ ব্যথা দুরকরার ১২টি ঘরোয়া উপায়

প্রত্যহ চলাফেরা ও বিভিন্ন কাজকর্মের দ্বারা আমাদের পিঠ ব্যথা বেড়ে যায়। কোন না কোন সময় পিঠ ব্যথা হয় না এমন লোক পাওয়া কষ্টকর। প্রথম কাজকর্ম ও বিভিন্ন ভার গ্রহণের ফলে মেরুদন্ডের পেশীগুলোতে আঘাতপ্রাপ্ত হয় এবং পিঠে ব্যথা হয়। যার কারণে পীরের ব্যথা থেকে বাঁচার জন্য চলাফেরা অত্যন্ত স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে করা প্রয়োজন।
এছাড়া পিঠ ব্যথা হলে খুব তাড়াতাড়ি তার চিকিৎসা করা প্রয়োজন। পিট ব্যথার জন্য চলাফেরা অনেক কষ্ট হয় এবং আস্তে আস্তে ব্যথা বেড়ে যায়। পিঠ ব্যথা দুরকরার ১২টি ঘরোয়া উপায় আলোচনা করা হলো।

মেরুদণ্ড সোজা করে রাখাঃ বসা ও চলাফের ভঙ্গি উন্নত করতে হবে এবং চলাফেরা ও বসার সময় মেরুদন্ড সোজা করে রাখা প্রয়োজন। এছাড়া উঠা বসার সময় উভয়দিকে সমানভর রাখা প্রয়োজন। দীর্ঘক্ষণ মোবাইল বা কম্পিউটারে কাজ করার সময় ব্যাক পেইন হতে পারে। যার কারণে কম্পিউটার ও মোবাইলে কাজ করার সময় মাঝেমাঝে দাঁড়িয়ে বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন।

অফিসে কাজ করার সময় অন্য সময় চেয়ারে বসার সময় সোজা হয়ে বসিয়ে থাকতে হবে। ফোন ব্যবহারের সময় চেষ্টা করতে হবে সোজা হয়ে ফোন করা। কম্পিউটারে কাজ করার সময় মনিটর একটু উঁচু জায়গায় রাখতে হবে যেন সোজা হয়ে বসা যায়।

নিয়মিত ব্যায়াম করাঃ নিয়মিত ব্যায়াম করার মাধ্যমে পেট ও পিঠের চারপাশের পিসি গুলো সোজা রাখতে সাহায্য করে এবং শরীরের ভার গ্রহণের সক্ষমতা বৃদ্ধি করে। নিয়মিত ব্যায়াম করার মাধ্যমে বেশি গুলো অধি হয় এবং পিঠের ব্যথা থাকে না। সপ্তাহের কমপক্ষে ও পিঠের ব্যায়াম করা প্রয়োজন। মেরুদন্ডকে শক্তিশালী করার জন্য পাইলটস সাঁতার ও স্ট্রেচিং নিয়মিত করা প্রয়োজন।

ধূমপান ত্যাগ করা প্রয়োজনঃ ধূমপান করার ফলে ধূমপানের নিকোটিন মেরুদন্ডের ডিক্সের রক্ত প্রবাহকে কমিয়ে দেয় যার কারণে ধুমপাই দের পিঠের ব্যথা বেশি হয়। ধূমপানের ফলে রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায় ও পেশিতে পুষ্টি কম পৌঁছায়। অনেক দুর্বল হয়ে যায় এবং পিঠের ব্যথা বেড়ে যায়। এজন্য ধূমপানের অভ্যাস দূর করা প্রয়োজন।

ভারী বস্তু উত্তোলনের সময় সাবধানতা অবলম্বন করাঃ দিনমজুরিদের জন্য ভারি বস্তু বহন করার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। ভারী ব্রিফকেস, ল্যাপটপ, ব্যাগ, সুটকেস, বাজারের ব্যাগ, গুলো ব্যবহারের সময় ঘা ড় ও মেরুদন্ডে অত্যন্ত বেশি চাপ প্রয়োগ করে।

কোন ভারি বস্তু বহনের সময়ই দুই হাতে সমান করে নিলে মেরুদন্ডের সমান চাপ পড়ার কারণে ব্যথার পরিমাণ কম হয়। এছাড়া ভারী বস্তু ব্যবহারের সময় চাকাওয়ালা গাড়ি ব্যবহার করা যেতে পারে।

টেবিলের উপর ঝুঁকে না পড়াঃ অফিসের চেয়ারে বসে বসার সময় অথবা দাঁড়ানোর সময় সামনে খুব বেশি না ঝুকা ভালো। এছাড়া পিঠের পিছনে কিছু চাপ দিয়ে সোজা হয়ে কাজ করা প্রয়োজন। টেবিলের দিকে বেশি হেলে পুড়ে কাজ করলে পিঠের ব্যথা বেড়ে যায়। এইজন্য সর্বদা চেয়ারে বসার সময় পেট এবং মেরুদন্ড সোজা করে বসা প্রয়োজন।

দীর্ঘ সময় বসা যাবে নাঃ ডেক্সে কাজ করার সময় দীর্ঘক্ষণ না বসে মাঝে মাঝে উঠে দাঁড়িয়ে হাঁটাহাঁটি করা প্রয়োজন। দীর্ঘক্ষণ কাজ না করে মাঝে মাঝে দাঁড়িয়ে হাঁটাহাঁটি করলে পিঠের ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। এছাড়া বসে থাকার মাঝে মাঝে হাঁটাহাঁটি করলে বেশি রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় যার কারণে অনেক শক্তিশালী হয় ও পিঠ ব্যথা থেকে বাঁচা যায়।

ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি গ্রহণঃ অনেক সময় দেহে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি এর অভাবে পিঠ ব্যথা হয়। ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম শোষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এইজন্য ক্যালসিয়ামের অভাব হলে মাঝে মাঝে ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট খাওয়া প্রয়োজন।

এছাড়াও ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার যেমন দুধ, দই, টাটকা শাকসবজি, চর্বিযুক্ত মাছ, ডিমের কুসুম, গরুর কলিজা ও পনির নিয়মিত খাওয়া যেতে পারে। ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ করার জন্য সূর্যের রোদে থাকা প্রয়োজন।

গরম পানিতে গোসলঃ পিঠের ব্যথা দূর করার জন্য কুসুম কুসুম গরম পানিতে গোসল করা যেতে পারে। নিয়মিত সাঁতার কাটার ফলে পিঠের পেসি গুলো অনেক শক্তিশালী হয়।

গরম ভেজা কাপড় ব্যবহার করাঃ পিঠের ব্যাথা হলে গরম কাপড় ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়াও গরম পানিতে কাপড় ভিজিয়ে রেখে উক্ত কাপড় পিঠের ব্যথার স্থানে ব্যবহার করলে পিঠের ব্যথা কমে যায়। এছাড়াও গরম পানির ব্যাগ ব্যথারস্থানে ব্যবহার করলে পিঠের ব্যথা কমে যায়।

কর্পূর ও নারিকেলের তেল ব্যবহারঃ নারিকেলের তেলের সঙ্গে কর্পূর মিশ্রিত করে পাঁচ মিনিট আগুনে ফুটিয়ে নিতে হবে। এই মিশ্রণ ঠান্ডা করে একটা বোতলের সংরক্ষণ করে এক থেকে দুই সপ্তাহ পিঠ ব্যথার স্থানে ব্যবহার করলে ব্যথা কমে যায়। সাধারণত ঘুমানোর আগে পিঠের ব্যথার স্থানে মালিশ করা যেতে পারে।

ইউক্যালিপটাসের তেল ব্যবহারঃ গোসলের সময় বালতি এক বালতি কুসুম কুসুম গরম পানি নিয়ে সেখানে কয়েক ফোঁটা ইউক্যালিপটাসের তেল ব্যবহার করে উক্ত পানি দিয়ে গোসল করতে হবে। ইউক্যালিপটাসের তেলের সঙ্গে পানি ব্যবহার করে গোসল করার ফলে পিঠের ব্যাথা সহ সারা শরীর ব্যথা কমে যাবে। মানসিক দিক দিয়ে অনেক প্রফুল্লতা দেখা যাবে।

দুধ হলুদ ও মধু ব্যবহারঃ নিয়মিত একগ্লাস কুসুম কুসুম গরম দুধে এক চিমটি হলুদ ও কয়েক ফোঁটা মধু মিশিয়ে নিয়ে খাওয়া প্রয়োজন। এভাবে প্রতিদিন খেলে পিঠের ব্যথার পাশাপাশি শরীরের অন্যান্য জায়গায় ব্যথা কমে যাবে। এছাড়া এই অভ্যাসের কারণে সর্দি-কাশি থাকবে না।

উপরের পিঠে ব্যথার কারণ

আজকের আর্টিকেল পিঠ ব্যথা দুরকরার ১২টি ঘরোয়া উপায়। বিভিন্ন কারণে উপরের পিঠে ব্যথা হতে পারে। উপরের পিঠে হালকা ব্যাথা থেকে শুরু করে আস্তে আস্তে তীব্র ব্যথা হয়। তীব্র ব্যাথা হলে খুব তাড়াতাড়ি ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে উপরের পিঠে ব্যথা নিরাময় করা সম্ভব। উপরের পিঠে ব্যথা হওয়ার কারণগুলো বর্ণনা করা হলো।
পেশির কারণে সমস্যাঃ পেশির সমস্যার কারণে উপরের পিঠের ব্যথা বেড়ে যায়। উপরের পিঠের পেশী যদি টান লাগে তাহলে ব্যথা শুরু হয়। সাধারণত ভুলভঙ্গিতে বসা দাঁড়ানো অথবা ভারী জিনিস উঠানোর সময় পেশীতে টান লাগতে পারে।

এছাড়াও কম্পিউটারে বেশিক্ষণ ধরে বসে থাকা মোবাইল নিয়ে বেশি সময় বসে থাকা ডেক্সটপে হেলে পরে কাজ করা ইত্যাদির কারণে পেশিতে অস্বাভাবিক চাপ তৈরি হয়। যার কারণে পেশি আঘাতপ্রাপ্ত অথবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে উপরের পিঠে ব্যথা বৃদ্ধি পায়।

মেরুদন্ডের জয়েন্টের সমস্যার কারণেঃ উপরের পিঠে ব্যথার গুরুত্বপূর্ণ কারণ মেরুদন্ডের জয়েন্টে বা অস্থিসন্ধিতে বিভিন্ন রকম সমস্যা তৈরি হওয়া। মেরুদন্ডের উপরের অংশে ছোট ছোট জয়েন থাকে এই জয়েন কে ফোসেট জয়েন্ট বলে। এই জয়েন্টগুলো আমাদের শরীরকে নাড়াচাড়া করতে এবং স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করে।

অতিরিক্ত বয়সের কারণে, অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে ও বিভিন্ন রকম আঘাতের কারণে জয়েন্ট গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যার কারনে জয়েন্টের চারপাশে প্রদাহ সৃষ্টি হয় এবং উপরের পিঠে ব্যথা হয়।

অস্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের কারণেঃ অস্বাস্থ্যকর এর জীবন যাপন বলতে ভুলবঙ্গীতে বসা কারণে উপরের পিঠে ব্যথা হতে পারে। ডেস্টবেঙ্গল থেকে দীর্ঘক্ষণ ধরে ঝুঁকে বসে থাকা অতিরিক্ত কম্পিউটারের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকা মোবাইল ফোন ব্যবহার করা ইত্যাদি কারণে মেরুদন্ডের উপরে চাপ পড়ে। যার কারনে ব্যথা পরিমাণ বৃদ্ধি হয়।

দুর্ঘটনার কারণেঃ সড়ক দুর্ঘটনা ভারী বস্তু নিয়ে পড়ে যাওয়ার খেলাধুলায় আঘাত মেরুদন্ডের হাড় বা মাংসপেশীকে গুরুত্ব ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এ ধরনের আঘাতের কারণে মেরুদন্ড ছিড়ে যেতেও পারে হাড় ভেঙ্গে যেতে পারে হাড় ভেঙ্গে যেতে পারে, জয়েন্টের স্থানচ্যুতি হতে পারে।

এগুলো আঘাতের কারণে পরবর্তীতে উপরের পিঠে ব্যথা হতে পারে। এছাড়াও স্নায়ুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ফলে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা হতে পারে।

হাড়ের সংক্রমণ অথবা টিউমার এর কারণেঃ বিভিন্ন কারণে হাড়ের উপর ব্যক্তিদের সংক্রমণ হওয়ার ফলে তীব্র উপরের পিঠে ব্যথা হয়। এছাড়াও মেরুদন্ডের টিউমার হওয়ার ফলে হাড়ে হাড়ের গঠন ও স্থায়িত্ব দুর্বল হয়। টিউমার মেরুদন্ডের স্নায়ু ও রক্তনালী গুলোর উপর চাপ সৃষ্টি করে। যার ফলে উপরের পিঠে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়।

হার্নিয়েটেড ডিস্ক সমস্যার কারণেঃ মেরুদন্ডের হাড়ের মধ্যে ডিস্ক নামক একটি নরম পদার্থ থাকে। এই ডিস্ক হারগুলোর স্থিতিস্থাপকতায় সহায়তা করে। কোন কারনের ডিস্কের বাহিরের অংশ ছিড়ে গেলে ভেতরের জেলির মত অংশ বাহির হয়ে আসে। যার কারনে কাছাকাছি স্নায়কের চাপ দেয়। এই চাপের ফলে প্রদাহ ও ব্যথা হয়। এই প্রদাহ গুলো আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পেয়ে তীব্র উপরের পিঠে ব্যথা হয়।

শ্বাস প্রশ্বাস রোগের কারণেঃ শ্বাসজানিত সমস্যার কারণে উপরের পিঠে ব্যথা হয়। নিউমোনিয়া ফুসফুসের সংক্রমণ ফুসফুসের আবরণের প্রদাহ উপরের পিঠ ব্যাথা হওয়ার অন্যতম কারণ। এছাড়া টিস্যুর মধ্যে প্রদাহ হলে শ্বাস নেওয়ার সময় উপরের পিঠে পরিত্যাক্ত ব্যথা হয়।

অস্টিওপরোসিস এর কারণেঃ হাড়ের ঘনত্ব কমে যে দুর্বল হয়ে পড়াকে অস্ট্রিওপরোসিস বলা হয়। পোস্ট অস্ট্রিওপ্রসেসের কারণে মেরুদন্ডের হার প্রভাবিত হয়। মেরুদন্ডের হাড় দুর্বল হলে সহজে ভেঙ্গে যেতে পারে যার কারণে উপরের পিঠের তীব্র ব্যথা সৃষ্টি হয়। অস্টিওকপ্রসেসের কারণে মেরুদন্ডের কশরুকা সংকুচিত হয় এবং উপরের পিঠের ব্যথা আরো বৃদ্ধি করে।

লেখকের মন্তব্য

সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুগণ পিঠ ব্যথা দুরকরার ১২টি ঘরোয়া উপায় বিষয়ে আজকের আর্টিকেল লেখা হল। পেট ব্যথা যা হওয়ার কারণে অত্যন্ত দুর্ভোগ তৈরি হয়। এছাড়া পিঠ ব্যথা হওয়ার কারণে কাজকর্ম ও চলাফেরায় অত্যন্ত কষ্ট হয়। স্বাভাবিক কাজকর্মে বড় বাধা তৈরি হয়। যার কারণে পিঠ ব্যথা প্রতিরোধে যাবতীয় ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

আজকের আর্টিকেলে পেট ব্যথার ঘরোয়া উপায় গুলো বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। এছাড়াও পিঠের বিভিন্ন অংশে ব্যথার কারণ গুলো বর্ণনা করা হয়েছে। আশা করি আজকের আর্টিকেল থেকে অনেক কিছু জানতে পারবেন এবং ভালো লাগবে। কোন কিছু জানার থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাবেন। ভালো লাগলে বন্ধুদের মাঝে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url