তাফসীর ফী যিলালিল কোরআনের লেখক সাইয়েদ কুতুব (রহঃ)

প্রিয় বন্ধুগন তাফসীর ফী যিলালিল কোরআনের লেখক সাইয়েদ কুতুব (রহঃ) বিষয়ে আজকের আর্টিকেল লেখা শুরু করলাম। সাইয়েদ কুতুব (রহঃ) দীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করতে যেয়ে পর্যাপ্ত নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। নির্যাতনের পরেও দ্বীন কায়েমের আন্দোলন থেকে একটু বিচ্যুত হননি।
তিনি বিখ্যাত আলেম ও সাহিত্য বিশারদ ছিলেন। তার সম্পর্কে জানতে আজকের আর্টিকেলের সঙ্গে থাকুন।

ভূমিকা

আজকের আর্টিকেল তাফসীর ফী যিলালিল কোরআনের লেখক সাইয়েদ কুতুব (রহঃ)। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানুষকে সৃষ্টি করে দুনিয়াতে আল্লাহর এবাদত এর জন্য পাঠিয়েছেন। যার কারণে আল্লাহর দিন কায়েমের জন্য আমাদের সকল ধরনের নির্যাতন নিপীড়ন সহ্য করতে হবে।
দুনিয়াবী জীবনে নির্যাতন ও নিপীড়নের মাধ্যমে পরকালীন মুক্তি পাওয়া যায়। সাইয়েদ কুতুব (রহঃ) দীন কায়েমের আন্দোলন করতে যে নিজে নির্যাতিত হয়েছেন। এছাড়াও তার তিন বোনকে অত্যাধিক নির্যাতন করা হইছে। এরপরেও উনারা দিন কায়েমের আন্দোলন থেকে বিচ্যুত হননি।

তাফসীর ফী যিলালিল কোরআনের লেখক সাইয়েদ কুতুব (রহঃ)

ফি যিলালিল কুরআন আরবি ভাষায় রচিত তাফসীর যার লেখক সাইয়েদ কুতুব ইব্রাহিম হুসেন সাজলি (রহঃ)। সারা বিশ্বে তিনি সাইয়েদ কুতুব (রহঃ) নামে পরিচিত। তাফসীর ফী যিলালিল কোরআনের লেখক সাইয়েদ কুতুব। এই তাফসীর গ্রন্থটি ৩০ পারায় ৩০ টি খন্ডে রচিত। এই তাফসীর কি কয়েকবার পুনমুদ্রিত করা হয়েছে।

সাধারণত সামাজিক দিক বর্তমান প্রেক্ষাপট ভঙ্গিমা ও মানুষের প্রয়োজনীয় চাহিদার ওপর বিশ্লেষণ করে এই তাফসীর গ্রন্থটির রচনা করা হয়েছে। এই তাফসীরটি অতি প্রাঞ্জল ভাষায় যুগের চাহিদার উপর বিশ্লেষণ করে মুসলিম উম্মার করণীয় দিক সম্পর্কে চিন্তাধারা রেখে প্রণয়ন করা হয়েছে।

যার কারণে এই তাফসীর গ্রন্থটি সকল ইসলাম প্রিয় এবং ইসলামী আন্দোলন মুখী লোকদের দিক নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে। অপরপক্ষে ইসলামের দুশমন এবং পাশ্চাত্যবাদী কাফের মুশরিকদের গার জ্বালার কারন হয়েছে। পৃথিবীর বিশিষ্ট উম্মাহ এবং জ্ঞানীদের মধ্যে সাইয়েদ কুতুব অন্যতম।

তিনি সর্বদা ইসলামের প্রতি অবিচল ও অটল ছিলেন। ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধারের জন্য কাফের মুশরিকদের সঙ্গে কখনো আঘাত করে চলেন নি। এই তাফসীর গ্রন্থটি কয়েকবার সংস্কার করা হয়েছে। সাইয়েদ কুতুব (রহঃ) অত্যন্ত কঠোর পরিস্থিতি এবং কঠোর নির্যাতনের মুখেও এই তাফসীর লিখতে পিছপা হননি।

তিনি সর্বদা আল্লাহ ও রাসূল (সাঃ) এর উপর অটল বিশ্বাস রেখে একটি প্রাণবন্ত হৃদয় এবং সংবেদনশীল বিবেকের মাধ্যমে কুরআনের মহত্ব সন্ধানে ব্যস্ত ছিলেন। যার কারণে আরো সুন্দর এবং সাবলীল ভাষায় কোরআনকে উপস্থাপন করার জন্য প্রথম সংস্করণ করা হয়েছে।

তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পরে দ্বিতীয়বার এই তাফসিরটি সংস্কার করেছেন। কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পরে তিনি তাফসীরের ভিতর কিছু ভাষাগত মান বৃদ্ধি এবং কিছু বাক্য সংশোধনের জন্য ও আইন শাস্ত্রীয় কিছু সমস্যা দূর করার জন্য ইবনে কাশিদের সঙ্গে মিল রেখে দ্বিতীয়বার সংস্কার করেন।

দ্বিতীয়বারের সংস্কারের সময় তিনি ব্যাখ্যাগুলো গভীরভাবে চিন্তা করে সাবলীল ভাষায় উপস্থাপন করেন। পুরোপুরি সংস্কার আর সংস্করণ করার পূর্বেই তিনি পুনরাই গ্রেফতার হন। তৃতীয় বার সাইয়েদ কুতুব মৃত্যুর পরে তার ভাই মোহাম্মদ কুতুব অত্যন্ত সতর্কতার সাথে শরয়ী সংস্কার করেন।

এই সংস্করণ হয়েছিল ১৩৯৮ হিজরী ও ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে। সাধারণত ভাষাগত কিছু ভুল ও শব্দগত বিভিন্ন অর্থ ও বিভিন্ন আয়াতের ব্যাখ্যায় কিছু ত্রুটি গুলোর সংস্কার করা হয়েছে। দার আল উসুল আল ইলমিয়া ২০১৯ সালে ছয়টি খন্ডে নতুন আইনী সংস্কার করেন। পূর্ববর্তী সংস্করণগুলি সংশোধন ও কিছু কিছু ত্রুটি সংশোধন করা হয়েছিল।

যাতে বিভিন্ন হাদিস অনুসরণ করা হয়েছে। যতদিন বিশ্ব থাকবে ততদিন সাইয়েদ কুতুব (রহঃ) রচিত ফি জিলালিল কুরআন এর চাহিদা আস্তে আস্তে বাড়বে। ফি যিলালিল কুরআন একটি অনবদ্য তাফসীর গ্রন্থ যা শিক্ষা লাভ করার মাধ্যমে মানুষকে তার দিন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অনুপ্রাণিত করে।

ফি যিলালিল কুরআনের ভূমিকা

আজকের আর্টিকেল তাফসীর ফী যিলালিল কোরআনের লেখক সাইয়েদ কুতুব (রহঃ)। ফি জিলালিল কুরআন এর রচয়িতা কুতুব রহমতউল্লাহ সারাটি জীবন কুরআন অধ্যায়ন কুরআনের শিক্ষা লাভ এবং কুরআনের আন্দোলন প্রতিষ্ঠার কাজে নিজেকে ব্যয় করেছেন। তিনি সর্বদা যে কোন কষ্টের থেকেও কোরআন থেকে একটুও বিচ্যুত হননি।
আর ও পড়ুনঃ ফুসফুস ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে
তিনি বলেন আমি আল্লাহু রাব্বুল আলামিন এর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি যে যিনি তার নাযিলকৃত কুরআন অধ্যায়ন এবং কুরআনের অনুসরণ করে নিজেদের জীবন ব্যয় করার মত একটি মূল্যবান সম্পদ অর্জন করতে পেরেছি। আমার মত একটি অধম ব্যক্তিকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কোরআন বোঝার যে জ্ঞান দিয়েছেন।

আমি সেই জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এর কাছে চির কৃতজ্ঞ। কুরআন বুঝার ক্ষেত্রে আমি সর্বদা সকল পাপাচার জাহিলিয়া ত থেকে মুক্ত থাকার চেষ্টা করেছি। এছাড়া আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাকে সর্বদাই কোরআন শিক্ষা লাভে ব্যস্ত থাকার সুযোগ দিয়েছেন। অনেকেই দুনিয়াতে বসবাস করে কোরআন এর শিক্ষা লাভ করার কোন চিন্তা করে না।

এছাড়াও তারা জাহিলিয়াতে নিজেদের গা ভাসিয়ে দে পার্থিক বিভিন্ন স্বার্থ উদ্ধারে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এছাড়াও প্রার্থীর স্বার্থ ও জাহিলিয়াতের মধ্যে ডুবে যে সকল প্রকার জুলুম-নিপীড়ন ও অত্যাচার করতে ব্যস্ত থাকে। শিশু যেমন তার খেলনা নিয়ে ব্যস্ত থাকে তেমনি এই সকল ব্যক্তি জাহেলিয়াতের সকল কৃষ্টি কালচার ও খারাপ কাজে সর্বদা ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

আমি আশ্চর্য হই কোরআন সব সময় মানুষদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে ডাকে। কোরআন সবসময় ন্যায় ও নিষ্ঠার পথে লোকদেরকে ডাকে। এরপরেও কিছু লোক কোরআন থেকে দূরে চলে যেয়ে অন্ধকার পথে নিমজ্জিত হয়। তিনি আরো বলেন কুরআন অধ্যায়নকালে আমি একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি।

যে মানুষের জীবন কাঠামো জীবন বিধান নির্ধারণ করেছে তার সাথে আল্লাহতালার সৃষ্টির গভীর মিল এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ রয়েছে। এছাড়াও তিনি বলেন মানবতার বিপর্যয় সৃষ্টি হয় প্রাকৃতিক নিয়ম-নীতির বিরুদ্ধাচরণ করার ফলে। মূলত শয়তান মানবজাতিকে জাহান্নামের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করে।

অথচ আমরা যদি কোরআন অধ্যায়ন এবং কোরআন দিয়ে নিজেদেরকে গড়ে তুলি তাহলে শয়তান আমাদেরকে জাহান্নামের দিকে ঠেলে দিতে পারে না। কোরআন অধ্যয়নের ফলে জানা যায় বিশ্ব জগতের ব্যাপকতা অসীম এবং অদৃশ্যমান বিশ্ব এই দৃষ্টিমান বিশ্বের চাইতে অনেক ব্যাপক।

মানবীয় জীবন দুনিয়ার এগুলো রাস্তা থেকে পরিবর্তন করে আখেরাতের অসীম ব্যাপকতা ও সাফল্য দিক থেকে পৌঁছানোর চেষ্টা করে। মমিন ব্যক্তি সার্বক্ষণিক কোরআন ও হাদিস অধ্যয়ন করে তাদের ত্রুটি বিচক্ষণ বিকৃতি গুলো দূর করবে। জীবন থেকে শিক্ষা লাভের মাধ্যমে পরকালীন জীবনের শান্তিতে থাকার চেষ্টা করবে।

তারা সর্বদা আল্লাহ তায়ালার হুকুম এর দিকে আকৃষ্ট হবে এবং আল্লাহর হুকুমের সামনে সর্বদা সেজদারত অবস্থায় থাকবে। আল্লাহতালা বলেন আসমান সমূহ ও জমিনের মাঝে যত কিছু রয়েছে ইচ্ছায় হোক কিংবা অনিচ্ছায় হোক সবকিছুই তার সামনে মাথানত করেছে এবং তারই আশ্রয়তলে সবাই সকাল সন্ধ্যা অবনতমস্তকে নিমগ্ন আছে। (সূরা আর রাদ ১৫)

এই স্বাত আসমান ও জমিনে এবং তার মধ্যে যত সৃষ্টিজীব রয়েছে সবাই তার তাজবিহ পাঠ করে। এই সমগ্র সৃষ্টি কুলের মাঝে এমন একটি বস্তুও নেই যা প্রশংসার সাথে তার তাজবীহ আদায় করছে না। (সূরা বনি ঈসরাইল) এশাও তিনি বলেন যে আমি কুরআন অধ্যয়নকালে একথা অনুধাবন করেছি।

যে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের মানুষকে এমন সম্মান ও মর্যাদা দান করেছেন যার সাথে তারা ইতিপূর্বে কখনো পরিচিত হতে সক্ষম হয়নি। মানুষকে সৃষ্টি করেছেন এবং রুহ দান করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন যখন আমি তাকে (মানব আকৃতিতে) ঠিক করে নিব এবং তাতে আমার রুহ দান করব তখন তোমরা তার সামনে সেজদাবনত হয়ে পড়বে। (সূরা আল হিজর-২৯)

এরপরে আল্লাহ তায়ালা মানব জাতিকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি নিয়োগ করেছেন। আল্লাহতালা এই সম্পর্কে বলেন আমি জমীনের বুকে আমার একজন প্রতিনিধি নিয়োগ করতে যাচ্ছি এবং যা কিছু এই বিশ্ব জগতে রয়েছে তার সবটুকুতেই আমি তোমার অধীনস্থ করে রেখেছি (সূরা আল বাকারা ৩০)

যার কারণে আমাদেরকে প্রতিনিধিত্ব পালন করে একটি ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। আর এই ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করতে যেয়ে সাঈদ কুতুব (রহঃ) বাতিলের কারাগারে শাহাদাত বরণ করেছেন।

সাইয়েদ কুতুব (রহঃ)এর জন্ম ও শিক্ষা লাভ

সাইদ কুতুবের (রহঃ) জন্মঃ সাইয়েদ কুতুব ইব্রাহিম হোসেন সাজলে (রহঃ) অক্টোবর ১৯০৬ সালে মিশরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তাফসীর ফি যিলালিল কুরআন এর লেখক। তিনি দরিদ্র গ্রামীণ মুসলিম পরিবারের সদস্য ছিলেন। তার পূর্বপুরুষরা আরব উপদ্বীপ থেকে এসে মিশরের উত্তরাঞ্চলে বসবাস শুরু করেন।
তার পিতার নাম হাজী ইব্রাহিম কুতুব। তিনি কৃষি কাজ করতেন। তার মাতার নাম ফাতিমা হোসাইন ওসমান মহিলা ছিলেন। তাহারা দুই ভাই এবং তিন বোন ছিলেন। তাহারা দুই ভাই হলেন সাইয়েদ কুতুব (রহঃ) এবং মোহাম্মদ কুতুব (রহঃ)। আর বোনেরা হলেন হামিদা কুতুব আমি না কুতুব ও অন্য বোনের নাম জানা যায়নি।

ভাই-বোনদের মধ্যে সবচাইতে বড় হলেন সাইয়েদ কুতুব। তাহারা ভাইবোন সবাই উচ্চ শিক্ষিত ছিলেন। এছাড়াও ইসলামী আন্দোলনের তাদের ত্যাগ অনেক বেশি।

সাইয়েদ কুতুবের (রহঃ) শিক্ষা জীবনঃ সাইয়েদ কুতুব নিজ গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষাজীবন শুরু করেন। মায়ের ইচ্ছা অনুযায়ী প্রথমে তিনি কোরান হেফজ করেন। পরবর্তীতে সাইয়েদ কুতুব (রহঃ) তাজহিযিয়াতু দারুল উলুম মাদ্রাসায় শিক্ষা সমাপ্ত করেন। এরপরে খাইরুল বিখ্যাত মাদ্রাসার তালুল উলুমে ভর্তি হন। 

১৯৩৩ সালে ওই মাদ্রাসা থেকে বিয়ে ডিগ্রি লাভ করেন এবং সেখানেই অধ্যাপক নিযুক্ত হন। কিছুদিন অধ্যাপনা করার পরে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্কুল ইন্সপেক্টর নিযুক্ত হন। ওই পদটি অত্যন্ত সম্মানজনক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাকে আধুনিক শিক্ষা পদ্ধতি পড়াশোনার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো হয়। 

তিনি দুই বছরে উক্ত কোর্স শেষ করে পুনরায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরে আসেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকালে তিনি বস্তুবাদী সমাজের দুরবস্থার লক্ষ্য করেন এবং তিনি দৃঢ় বিশ্বাস পোষণ করেন যে একমাত্র ইসলামী সত্যিকার অর্থে মানব সমাজকে কল্যাণের পথে নিয়ে আসতে পারে। আজকের আর্টিকেল তাফসীর ফী যিলালিল কোরআনের লেখক সাইয়েদ কুতুব।

সাইয়েদ কুতুব (রহঃ) এর রাজনৈতিক জীবন

আজকের আর্টিকেল তাফসীর ফী যিলালিল কোরআনের লেখক সাইয়েদ কুতুব। সাহেবদের কুতুব (রহঃ) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরার পর ইসলামী আন্দোলন মুসলিমিন দলের আদর্শ উদ্দেশ্য ও কর্মসূচি যাচাই করা শুরু করেন। ১৯৪৫ সালে তিনি দলের সদস্য হন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সরকার যুদ্ধ শেষে মিশরকে স্বাধীনতার দেওয়ার ওয়াদা করেন।

যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরে আনুল মুসলিমিন দল ব্রিটিশ কে মিশর ত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। যার ফলে এখন মুসলিমিন এর জনপ্রিয়তা অত্যন্ত বেড়ে যায়। মাত্র দুই বছরে এই দলের কর্মী সংখ্যা ২৫ লাখ ের পৌঁছে যায়। এছাড়াও সাধারণ সদস্যর সমর্থক ও সুধীদের সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়ে যায়।

ব্রিটিশ সরকার ও মিশরের স্বৈরাচারী সরকার এফ ওয়ানের জনপ্রিয়তা দেখে অত্যন্ত ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। যার ফলে এখনো মুসলিমিন এর বিরুদ্ধে সম্মিলিত ষড়যন্ত্র শুরু করে। ১৯৫২ সালের মিশরের সামরিক বিপ্লব সংঘটিত হয়। ওই বছর এখানে মুসলিমীন পুনরায় সেখানে বহাল থেকে যায়।

ডক্টর হাসানুল হুদাইবি দলের মোর্শেদু এ আম নির্বাচিত হন। দলের আদর্শ প্রচার ও আন্দোলনের সম্প্রসারণ বিভাগ তাদের সুষ্ঠু পরিচালনার কারণে অতি তাড়াতাড়ি অগ্রসর হতে থাকে। সাইয়েদ কুতুব (রহঃ) নিজেকে এ আন্দোলনের কাজে উৎসর্গ করেন।

সাইয়েদ কুতুব (রহঃ) কে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন

সাইয়েদ কুতুব (রহঃ)১৯৫৪ সালে মুসলিমিন পরিচালিত সাময়িকী এখন মুসলিমিন এর সম্পাদক নিযুক্ত হন। ছয় মাসের মধ্যে উক্ত পত্রিকাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। উক্ত মাসেই ব্রিটিশদের সঙ্গে মিশরের নতুন চুক্তি স্বাক্ষর হয়। সাইদ কুতুব উক্ত চুক্তির সমালোচনা করেন। যার কারণে এখনো মুসলিমিনের সকল নেতৃবৃন্দদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আর ও পড়ুনঃ মেয়েদের হরমোনের সমস্যা দূর করার ১০টি উপায়
সবার সঙ্গে সাইয়েদ কুতুবকেও গ্রেফতার করা হয়। ১৯৬৪ সালের মাঝামাঝিতে ইরাকের প্রেসিডেন্ট আব্দুস সালাম আরিফ মিশরে যান এবং সাইয়েদ কুতুবকে (রহঃ) মুক্তি দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেন। যার কারণে কর্নেল নাছের সাইয়েদ কুতুবকে (রহঃ) মুক্তি দেন। ১৯৬৪ সালের ২৬ শে মার্চ নুতুন একটি আইন পাস করেন।

তিনি ইচ্ছা করলে যে কোন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার এবং তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে পারেন। ১৯৬৫ সালে পুনরায় সাঈদ কুতুবকে গ্রেফতার করা হয়। প্রেসিডেন্টের উপর হত্যার অভিযোগে এনে সাইয়েদ কুতুবকে (রহঃ) হত্যার দায় স্বীকার করার জন্য মানসিক নির্যাতন করা হয়।

১৯৬৬ সালের আগস্ট মাসে সাঈদ কুতুব ও তার দুইজন সহচর সহ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুর দন্ডাদেশ দেওয়া হয়। ২৫শে আগস্ট ১৯৬৬ সালে উক্ত দন্ডাদেশ কার্যকর করা হয়। বিশ্ব মুসলিম উম্মার এই প্রিয় নেতা শাহাদত বরণ করে।

জ্ঞান ও সাহিত্য চর্চা

আজকের আর্টিকেল তাফসীর ফী যিলালিল কোরআনের লেখক সাইয়েদ কুতুব। কুতুব ছিলেন মিশরের বিখ্যাত আলেম এবং সাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। ছোট ছেলেমেয়েদের জন্য আকর্ষণীয় নবীদের কাহিনী লিখে সাহিত্য জীবনের সূচনা করেন। পরবর্তীতে তিনি বিভিন্ন গ্রন্থ রচনা করেন। সাইয়েদ কুতুব এর রচিত গ্রন্থাবলী আলোচনা করা হলো।

*তাফসির ফি যিলালিল কোরআন (কুরআনের ছায়াতলে) - কোরআন মাজিদের পূর্ণাঙ্গ তাফসির।
*মুশাহিদুল ক্বিয়ামাহ ফিল ক্বুরআন (কুরআনের আঁকা কেয়ামতের দৃশ্য);
*আত্ তাসবিরূল ফান্নি ফিল ক্বুরআন (কুরআনের আলঙ্কারিক চিত্র);
*আল আদালাতুল ইজতিমাঈয়া ফিল ইসলাম (ইসলামের সামাজিক সুবিচার);
*ইসলাম ও পূজিবাদের দ্বন্দ্ব।
*বিশ্বশান্তি ও ইসলাম;
*দারাসাতিল ইসলাম (ইসলামী রচনাবলী);
*"ভবিষ্যৎ সংস্কৃতি" নামক পুস্তকের সমালোচনা;
*কুতুব ওয়া শাখসিয়াত( গ্রন্থাবলি ও ব্যক্তিত্ব);
*ইসলামী সমাজের চিত্র;
*আমি যে আমেরিকা দেখেছি;
*চার ভাই বোনের চিন্তাধারা: সাইয়েদ কুতুব, মুহাম্মদ কুতুব, আমিনা কুতুব ও হামিদা কুতুব;
*আশাতিল মাজহুল (কবিতগুচ্ছ);
*জীবনে কবির আসল কাজ;
*ইসলামী সমাজ বিপ্লবের ধারা (মা'অালিম ফিত তারিক্ব);
*আন নাক্বদুল আদাবি উসুলিহি ওয়া মানাহিযিহি (সাহিত্য সমালোচনার মূলনীতি ওপদ্ধতি);
*নবীদের কাহিনী।
*মরন জয়ী মুজাহিদ

লেখক এর মন্তব্য

প্রিয় পাঠকগন তাফসীর ফী যিলালিল কোরআনের লেখক সাইয়েদ কুতুব ছিলেন একজন বিখ্যাত আলেম এবং সাহিত্য বিশারদ। তার রচিত ফি জেলালির কুরআন মানব সমাজের জন্য উৎকৃষ্ট তাফসীর। তিনি তার লেখনী দ্বারা সবসময় ইসলামী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করে গেছেন।

যার কারণে তিনি সর্বদা দিন কায়েমের আন্দোলন করে গেছেন। সাইয়েদ কুতুব সম্পর্কে জানতে আজকের আর্টিকেল ভিজিট করুন। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে এবং উপকৃত হবেন। যদি কোন কিছু জানার থাকে তাহলে কমেন্ট বক্সে জানাবেন। ভালো লাগলে বন্ধুদের মাঝে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url