গর্ভাবস্থায় থানকুনি পাতা খাওয়ার উপকারিতা

সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ গর্ভাবস্থায় থানকুনি পাতা খাওয়ার উপকারিতা বিষয়ে আজকের আর্টিকেল লেখা শুরু করা হলো। আরো আছে থানকুনি পাতার স্বাস্থ্য উপকারিতা থানকুনি পাতা চুলে দেওয়ার নিয়ম থানকুনি পাতার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া।
থানকুনি পাতা অনেক উপকারী যায় সহজেই আমরা ব্যবহার করতে পারি। থানকুনি পাতা সম্পর্কে জানতে আজকের আর্টিকেল ভিজিট করুন।

ভূমিকা

আজকের আর্টিকেল গর্ভাবস্থায় থানকুনি পাতা খাওয়ার উপকারিতা। থানকুনি পাতা সাধারণত বাংলাদেশ-ভারত সিংহল উত্তর অস্ট্রেলিয়া ইন্দোনেশিয়া ইরান মালয়েশিয়া নিয়োগ গিনি সহ এশিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে ভালো পাওয়া যায়। থানকুনি পাতা ভেসোস ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় বহুল ব্যবহার রয়েছে।

থানকুনিয়ের পাতায় পর্যাপ্ত ভিটামিন সি রয়েছে যার কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়াও থানকুনি পাতার বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। বিশেষ করে ঠান্ডা লাগা কাশি ও গলা ব্যথা দূর করার জন্য থানকুনি পাতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। থানকুনি পাতা সম্পর্কে জানতে আমাদের সঙ্গে থাকুন।

গর্ভাবস্থায় থানকুনি পাতা খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় মায়েরা বিভিন্ন রকম সমস্যায় ভোগেন। সব সময় বিভিন্ন ওষুধ খাওয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয়। যার কারণে গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন উদ্ভিদের মাধ্যমে বিভিন্ন রকম সমস্যার সমাধান করা প্রয়োজন। থানকুনি পাতার মাধ্যমে গর্ভাবস্থায় অনেক সমস্যা দূর করা যায়। গর্ভাবস্থায় থানকুনি পাতা খাওয়ার উপকারিতা আলোচনা করা হলো।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ গর্ভাবস্থায় মায়েদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কমে যায়। থানকুনি পাতায় পর্যাপ্ত ভিটামিন সি আছে যা অত্যন্ত শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যার কারণে থানকুনি পাতা গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন রোগের সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে।

স্মৃতিশক্তি উন্নত করেঃ থানকুনি পাতায় প্রচুর এন্টিঅক্সিডেন্ট ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে। যার কারনে নিয়মিত থানকুনি পাতা খেলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি হয়। গর্ভাবস্থায় মস্তিষ্কের কোষগুলো দুর্বল হয়ে যায়। গর্ভাবস্থায় থানকুনি পাতা খেলে মস্তিষ্কের কোষের কার্যকারিতা বৃদ্ধি হয় ও মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা কমাতে সহায়তা করে।

শরীরের ব্যথা উপশম হয়ঃ গর্ভাবস্থায় মায়েদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা হয়। থানকুনি পাতায় এন্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা গর্ভবতী মায়েদের শরীরের বিভিন্ন জায়গার ব্যাথা দূর করে। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের পিঠে ব্যথা কোমরে ব্যথা দূর করতে থানকুনি পাতার জুড়ি নাই।

ক্ষত নিরাময়েঃ গর্ভবতী মায়েদের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষত হলে থানকুনি পাতা ব্যবহারের মাধ্যমে খুব তাড়াতাড়ি ক্ষতস্থান ভালো হয়। থানকুনি পাতায় অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি ও এন্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ক্ষত নিরাময়ের অত্যন্ত কার্যকর। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের প্রসব ছিদ্র বা কেটে যাওয়া নিরাময়ের থানকুনি পাতার জুড়ি নাই।

তবে থানকুনি পাতা ব্যবহারের ক্ষেত্রে গর্ভবতী মায়েদের ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। যেহেতু গর্ভাবস্থায় অনেক স্পর্শকাতর এই জন্য জেনেশুনে থানকুনি পাতা ব্যবহার করা প্রয়োজন।

থানকুনি পাতার স্বাস্থ্য উপকারিতা

আজকের আর্টিকেল গর্ভাবস্থায় থানকুনি পাতা খাওয়ার উপকারিতা। থানকুনি পাতা খাদ্য ও ওষুধ উভয় হিসেবে ব্যবহার করা হয়। থানকুনি পাতা ভর্তা ভাজি বড়া চাটনি সালাত ও বিভিন্ন রকম পানীয় হিসেবে ব্যবহার করা হয়। থানকুনি পাতার স্বাস্থ্য উপকারিতা গুলো আলোচনা করা হলো।

আলসার ও মূত্রনালীর সংক্রামন দূর করেঃ থানকুনি পাতার অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যার কারণে থানকুনি পাতা ব্যবহার করে আলচার ও মুক্তমালির সংক্রমণ দূর করা যায়। একটি পাত্রে একগ্লাস পানি নিয়ে পরিষ্কার তাজা খানকুনি পাতা যোগ করে সিদ্ধ করতে হবে।

এরপরে উক্ত পানি শিখে নিয়ে মধু সংযোগ করে পান করতে হবে। এই পানীয় পানের মাধ্যমে পেটের আলচার ও মূত্রনালীর সংক্রমণ সমস্যা দূর করে।

হজম সমস্যা দূর করেঃ যাদের পেটের হজমের সমস্যা খাওয়ার মাধ্যমে তা দূর হয়। থানকুনি পাতা ও অ্যাক্সিডেন্ট লবণসহ পানি সিদ্ধ করতে হবে। উক্ত প্রাণী সেঁকে নিয়ে পান করলে হজমের সমস্যা দূর হয়।

পেট ও লিভার ভালো রাখেঃ যেগুলো ব্যক্তির পেট ও লিভারের সমস্যায় ভোগেন থানকুনি পাতা খাওয়ার মাধ্যমে তা ভালো হয়। এই ক্ষেত্রে নিয়ম হলো প্রতিদিন সকালে একটি পালা পাকা কলার সাথে থানকুনি পাতা খেতে হবে। এভাবে থানকুনি পাতা খাওয়ার মাধ্যমে পেট ও লিভারের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

ক্ষত নিরাময় করেঃ ঈদের কোথাও যদি কোন ক্ষত হয় থানকুনি পাতা ব্যবহারের মাধ্যমে তা সুস্থ করে তোলা যায়। থানকুনি পাতার এন্টিবায়োটিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা দ্রুত ক্ষত সারায়। এক্ষেত্রে শুকনো থানকুনি পাতার গুঁড়ো করে উক্ত গুরুপ টেস্ট তৈরি করে ক্ষতস্থানে লাগানো যেতে পারে।

আর্থারাইটিস থেকে মুক্তি দেয়ঃ যেকোনো ব্যক্তি অর্থের সমস্যায় ভুগেন থানকুনি পাতার মাধ্যমে সেগুলো দূর করা যায়। এক্ষেত্রে নিয়মিত থানকুনি পাতা চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করলে আর্থারাইটিস বা বাতের সমস্যা দূর হয়।

কাশি ও শ্বাস যন্ত্রের সমস্যা দূর করেঃ থানকুনি পাতার রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে খুব তাড়াতাড়ি কাশি ও শ্বাসযন্ত্রের যাবতীয় সমস্যা দূর হয়। তুলসী ও গোলমরিচ দিয়ে থানকুনি পাতা খেলে ঠান্ডা লাগা জ্বর নিরাময়। থানকুনি পাতার রসের সঙ্গে সামান্য ছিনিমেষে পান করলে গলা ব্যথা ও কাশি নিরাময় হয়।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা করতে থানকুনি পাতা ব্যবহার করা যায়। নিয়মিত খাবারের তালিকায় থানকুনি পাতা ব্যবহার করলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ থানকুনি পাতা ব্যবহারের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। রোগ প্রতিরোধে থানকুনি পাতার রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে সেবন করা যেতে পারে। এই মিশ্রণটি শিশুদেরকে খাওয়ালেও শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়।

অনিদ্রা দূর করেঃ অনিদ্রার কারণে শারীরিক ও মানসিক খারাপ প্রভাব পড়ে। এইজন্য শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য নিয়মিত ঘুমের প্রয়োজন। প্রতিদিন দুইবার দুই চামচ থানকুনি পাতার রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে ঘুমের সমস্যা দূর হয়।

চুল পড়া কমায়ঃ চুল পড়ার মাধ্যমে মাথার টাক তৈরি হয় যা দেখতে অত্যন্ত খারাপ লাগে। এক্ষেত্রে থানকুনি পাতা ব্যবহারের ফলে চুল পড়া কমানো যায়। প্রতিদিন শুকনো থানকুনি পাতার গুঁড়া পেস্ট করে মাথায় ব্যবহার করলে চুল পড়া কমে যায়।

থানকুনি পাতা চুলে দেওয়ার নিয়ম

আজকের আর্টিকেল গর্ভাবস্থায় থানকুনি পাতা খাওয়ার উপকারিতা। চুল পড়া দূর করতে থানকুনি পাতা ব্যবহার করা হয়। থানকুনি পাতায় অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান রয়েছে যা মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। যার কারণে মাথার চুল পড়া দূর করতে নিয়মিত থানকুনি পাতা ব্যবহার করা যেতে পারে।

এক্ষেত্রে নিয়ম হলো থানকুনির পাতার নির্যাস ব্যবহার করা হয়। প্রতিদিন থানকুনি পাতার জুস খাওয়া যেতে পারে। এছাড়া থানকুনি পাতার রস বরফ করে রাখতে হবে। এই বরফকৃত থানকুনি পাতার রস মাথার ত্বকে ও শুনে ভালো করে মেসেজ করতে হবে। এভাবে ব্যবহার করলে চুল পড়া কমে যায়।

এছাড়াও থানকুনি পাতা সমৃদ্ধ ফ্রেশওয়াশ ময়েশ্চারাইজার সিরাম টোনার সানস্ক্রিন ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে। থানকুনি পাতার রস নিয়মিত চুলে লাগালে চুল অত্যন্ত শক্ত হয়। এছাড়াও থানকুনি পাতার রস ব্যবহারের ফলে মাথার খুশকি দূর হয়।

এই ক্ষেত্রে নিয়ম হলো মাথার চুল ও স্ক্যাল্গে থানকুনি পাতার রস লাগিয়ে এক ঘন্টা অপেক্ষা করার পরে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন ব্যবহার করা যেতে পারে।

থানকুনি পাতার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

থানকুনি পাতার অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। থানকুনি পাতার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো আলোচনা করা হলো।

*থানকুনি পাতা পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর করলেও বেশি পরিমাণ খেলে পেটের ব্যথা বেড়ে যায়।

*বেশি পরিমাণ থানকুনি পাতা খেলে মাথা ঘোরার সমস্যা বৃদ্ধি হয়।

*যাদের লিভারের সমস্যা হয়েছে তাদের জন্য থানকুনি পাতা খাওয়া যাবেনা।

*অপারেশনের পরে থানকুনি পাতা খাওয়া যাবে না।

*অনেকের থানকুনি পাতা খাওয়ার মাধ্যমে চুলকানি এলার্জি খোশ-পাচড়া ইত্যাদি হতে পারে।

*বেশি পরিমাণ থানকুনি পাতা খেলে তন্দ্রাচ্ছন্নতার ভাব হয়।

*বেশি পরিমাণ থানকুনি পাতা খেলে বমি বমি ভাব হতে পারে।

*গর্ভবতী মহিলাদের অথবা স্তন্যদান কারী মহিলাদের থানকুনি পাতা খাওয়ার সময় ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।

লেখক এর ভূমিকা

সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ গর্ভাবস্থায় থানকুনি পাতা খাওয়ার উপকারিতা বিষয়ে আজকের আর্টিকেল লেখা হল। সাধারণত ঔষুধি গুন সম্পন্ন কাজে থানকুনি পাতা ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও থানকুনি পাতা ভর্তা বড়া খেতে অনেক মজা। আমাদের চিকিৎসায় ওষুধ ব্যবহার না করে বিভিন্ন রকম পাতা ও গাছ ব্যবহারকরা যায়।

যার মাধ্যমে শারীরিক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থেকে রক্ষা করা যায়। এমনই একটি ওষুধী পাতা থানকুনি যা আমাদের প্রচুর উপকারে আসে। থানকুনি পাতা সম্পর্কে জানতে আজকের আর্টিকেল ভিজিট করুন। আশা করি ভালো লাগবে এবং উপকৃত হবেন। ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url