মুখের ত্বকের ভাজ দূর করার উপায়
প্রিয় পাঠক বন্ধুগণ মুখের ত্বকের ভাজ দূর করার উপায় বিষয়ে আজকের আর্টিকেল লেখা শুরু করলাম। এছাড়াও শরীরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য প্রাকৃতিক নিয়ম গুলো আলোচনা করা হলো।
এগুলো বিষয় জানা এবং ব্যবহারের কারণে আপনাদের শরীরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে। এগুলো বিষয়ে জানার জন্য আমাদের সঙ্গে থাকুন।
ভূমিকা
আজকের আর্টিকেল মুখের ত্বকের ভাজ দূর করার উপায়। বয়স বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়াও শরীরের ত্বক গুলো ভাজ হয়ে যায়। শরীরের লাবণ্যতা দূর হয়ে যায়। শরীরের উপর বয়সের ছাপ পড়ে। যার কারণে বয়স বাড়ার পরেও শরীরের যত্ন নেওয়ার প্রয়োজন।
আর ও পড়ুনঃ বাসায় কুকুর পোষার ১৫টি উপকারিতা
আমাদের মাঝে কিছু প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে যেগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে শরীরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা যায়। শরীরের ত্বকগুলো টান টান মোলায়েম ও উজ্জ্বল করা যায়। বিশেষ করে বয়স বৃদ্ধির পরেও যদি আমাদের এগুলো প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা প্রয়োজন। এজন্য আসুন শরীরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য আজকের আর্টিকেলের সঙ্গে থাকি।
মুখের ত্বকের ভাজ দূর করার উপায়
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মুখের ত্বকে ভাজ পড়ে যায়। যার কারণে বয়স বাড়ার পরেও মুখের ত্বকের যত্ন করতে পারলে মুখের ত্বকের ভাঁজ দূর হয়ে যায়। এজন্য নিয়মিত মুখের ত্বকের যত্ন করা প্রয়োজন। মুখের ত্বকের ভাজ দূর করার উপায় আলোচনা করা হলো।
ক্যস্টর অয়েলঃ ক্যাস্টর অয়েল ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। মুখের ত্বকের ভাজ দূর করতে ক্যাস্টর অয়েল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক্ষেত্রে কয়েক ফোটা ক্যাস্টর অয়েল মুখের ত্বকে ব্যবহার করুন। ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহারের পরে ১০ মিনিট আলতোভাবে মুখের ত্বক মেসেজ করুন। তিন থেকে চার সপ্তাহ ব্যবহারে সুফল পাবেন।
ওটমিল দই ও মধুর মাক্স ব্যবহারঃ মুখের ত্বকের ভাজ দূর করতে এই মাস্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক টেবিল চামচ ওটমিলের সঙ্গে দই ও মধু মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করতে হবে। এই মাস্ক ১৫ থেকে ২০ মিনিটের জন্য মুখে লাগাতে হবে। এরপরে কুসুম কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি দুই থেকে তিন সপ্তাহ ব্যবহারে ফলাফল পাওয়া শুরু হবে।
কলার মাস্ক ব্যবহারঃ মুখের ত্বকের ভাজ দূর করতে কলার মাস্ক ব্যবহার করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে পাকা কলা ভর্তা করে নিতে হবে যদি ত্বক শুষ্ক হয় তাহলে কিছু টক দই মিশ্রিত করা যাবে। কলার এই মাস্ক মুখে ভালো করে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে দিয়ে পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে। দুই তিন সপ্তাহ ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
গ্রিন টিঃ মুখের ত্বকের ভাজ দূর করার জন্য গ্রিন টি অত্যন্ত উপকারী। গ্রিনটিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান যা ত্বকের ফ্রি রেডিকেল কমায়। এছাড়াও গ্রিন টি খাওয়ার মাধ্যমে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। গ্রিন টি খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের পরিবেশে দূষণ ও ত্বকের দূষণ থেকে ত্বককে রক্ষা করে। দিনে দুই কাপ গ্রিন টি খাওয়া যেতে পারে।
শরীরে চিনি গ্রহণের পরিমাণ কমানোঃ মুখের ত্বকের ভাজ দূর করতে চিনি বা চিনি সমৃদ্ধ যাবতীয় খাদ্য কমিয়ে আনা প্রয়োজন। চিনি জাতীয় খাবার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বা ওবিসিটি বাড়ায়। এছাড়াও চিনির সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার মাধ্যমে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায়। যার কারণে মুখের ত্বকের ভাজ দূর করতে চিনির জাতীয় খাবার খাওয়া কমানো প্রয়োজন।
ধূমপান পরিহার করাঃ মুখের ত্বকের ভাজ দূর করতে ধূমপান পরিহার করা প্রয়োজন। ধূমপানের কারণে শরীরের বিভিন্ন স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়ে যায়। এছাড়াও ধূমপানের ফলে শরীরের পানি বা তরলের ভারসাম্য থাকে না। ধূমপান করা ব্যক্তিদের চাইতে যারা ধূমপান করেন না তাদের মুখের ত্বক তাজা মূলায়েম এবং স্বাস্থ্যজ্জল হয়।
ত্বকে নিয়মিত নারিকেলের তেল ব্যবহারঃ নারিকেলের তেল ত্বকের উজ্জ্বলতা ও বয়সের ছাপ দূর করতে সহায়তা করে। নারিকেলের তেলকে প্রাকৃতিক ময়েশ্চার বলা হয়। মুখের ত্বকের ভাজ দূর করতে নারিকেলের তেল ব্যবহারের ফলে ত্বকের শূন্যতা দূর করে ত্বক মসৃণ করে। এছাড়া ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে নারকেলের তেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট জাতীয় খাবার খাওয়াঃ মুখের ত্বকের ভাস দূর করতে এন্টিঅক্সিডেন্ট জাতীয় খাবার খাওয়া প্রয়োজন। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের মৃত কোষগুলো কে অপসারিত করে নতুন কোষ তৈরি করে। এক্ষেত্রে ব্রকলি গাজর পালং শাক মিষ্টি আলু মিষ্টি কুমড়া আঙ্গুর পাতাকপি ইত্যাদি খাবার তালিকা রাখা যেতে পারে।
নিয়মিত মুখ ধুতে হবেঃ অনেক সময় মেকআপ তোলার পরে মুখ ধোয়া হয় না। সকল ক্ষেত্রে মুখ ধুতে হবে। ঘুরে আসার পর ভালো করে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে পরিষ্কার করতে হবে। নিয়মিত মুখ ধুয়ার অভ্যাস করলে মুখের ত্বকের ভাঁজ দূর হয়ে যায়।
পুদিনা পাতার চা খাওয়ার অভ্যাসঃ অনেক সময় মুখের ত্বকের ভাজ দূর করার জন্য আমরা হারবাল চা খেয়ে থাকি। তবে চা খাওয়ার সময়ই দু চারটি পুদিনা পাতা ব্যবহার করে চা খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে চা খাওয়ার সময় পুদিনা পাতা ব্যবহার করে চা খেলে ত্বকের বলিরেখায় এবং ত্বকের ভাজ দূর করা সম্ভব হয়।
বার্ধক্য নিয়ন্ত্রণের ঘরোয়া উপায়
আজকের আর্টিকেল মুখের ত্বকের ভাজ দূর করার উপায়।বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের ত্বকে কিছু পরিবর্তন আসে। বার্ধক্যের দাগ ও বলিরেখা এবং মুখের সুক্ষ্ম রেখা ইত্যাদি চেহারায় দেখা দেয়।
আর ও পড়ুনঃ ব্রেন টিউমারের লক্ষণ গুলো কিকি
সাধারণত বার্ধক্যের কারণে হলেও অনেক ক্ষেত্রে পরিবেশ ও জীবন যাপনের কারণে প্রত্যাশিত সময়ের আগে চেহারায় বলি রেখা ও অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। বার্ধক্য নিয়ন্ত্রণের ঘরোয়া উপায়গুলো আলোচনা করা হলো।
ক্যাস্টর অয়েলঃ ক্যাস্টর অয়েল ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। সাধারণত এর একটি ক্ষমতা রয়েছে, ত্বকে বলিরেখা ও অন্যান্য দাগ সরিয়ে উজ্জ্বলতা নিয়ে আসে। দিনে নিয়মিত দুইবার কয়েক ফোটা ক্যাস্টর অয়েল মুখে ভালোভাবে মেখে নিন এবং ১০ মিনিট ধরে আলতোভাবে মেসেজ করুন। সুতরাং ৩ থেকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে এর সুফল পাওয়া যেতে পারে।
দই ও মধুর মাস্ক এবং ওটমিলঃ ওটমিল একটি চমৎকার প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার। এটি ত্বকের অস্বস্তিকর ভাব এবং বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে। ত্বকের অতিরিক্ত তেল কমাতে সাবানের মত কাজ করে। মধু ও দই এর সাথে মিক্স হয়ে ডেট সেল পরিষ্কার করে এবং চেহারায় উজ্জ্বলতা ধরে রাখে।
এই মাস্কটি তৈরি করতে ১ টেবিল চামচ ওটমিল, দই এবং মধু মেশাতে হবে। মিশ্রণটি ১৫ থেকে ২০ মিনিটের জন্য মুখে লাগিয়ে নিতে হবে। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
মধু ও শসা এবং গ্রিন টি মাস্কঃ সেনসেটিভ ত্বকে দ্রুত বার্ধক্য জনিত বলিরেখা দেখা যায়। সেনসেটিভ ত্বকের জন্য এই মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। মাস্কটির জন্য প্রয়োজন শসা ও মধু এবং গ্রিন টি। ত্বক সতেজ রাখতে শসা অনেক কার্যকরী, সে সঙ্গে গ্রিন টি ত্বকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেয়।
মাস্কটি বানানোর জন্য প্রথমে কিছু শশা পাতলা করে কেটে মধু এবং গ্রিন টির মিশ্রণ ১৫ মিনিটের জন্য ভিজিয়ে রাখুন। স্লাইসগুলো ১৫ মিনিটের জন্য মুখে রেখে দিতে হবে এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
কলার মাস্কঃ ত্বককে সতেজ রাখতে কলা ভীষণ উপকারী। আর এই মাস্কটি বাসায় তৈরি করার সহজ। এটা তৈরি করার জন্য প্রথমে একটি কলা নিয়ে তা মসৃণ ভাবে ভর্তা করতে হবে। ত্বক যদি খুব শুষ্ক হয় তাহলে কিছু টক দই যোগ করতে হবে। এরপর মুখে ৩০ মিনিট এটি মেখে নিতে হবে। এরপর পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।
গ্রিন টিঃ এই গ্রিন টি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পূর্ণ, ত্বকের কোষগুলোতে থাকা ফ্রি রেডিকেল কমায়। গ্রিনটি ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি এবং চারপাশের দূষণ থেকে ত্বককে সুরক্ষিত রাখে এবং আমাদের শরীরের পক্ষেও ভালো। এজন্য দুই কাপ গ্রিন টি পান করার স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারী।
শরীরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির ১৫টি উপায়
পানিঃ প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। পানি খাওয়ার পাশাপাশি এলোভেরা জুস, ডাবের পানি, দই খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। তাছাড়া এই খাবারগুলোতে ন্যাচারাল সুগার থাকে যার শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী।
বাদামঃ বাদামে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড। এই এসিড ত্বকের তৈলাক্ততার সমস্যা দূর করে তাৎক্ষণিকভাবে।
কমলাঃ কমলা ও লেবুর মত সাইট্রাস জাতীয় ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং ট্ক্সিন দূরকারী উপাদান থাকে। যা আমাদের ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল দূর করে।
সবুজ সবজিঃ সবুজ সবজিতে কোন চর্বি বা তেল থাকে না। এই সবজিতে প্রচুর আস সমৃদ্ধ যা আমাদের ত্বকের অতিরিক্ত তেল এবং ত্বক উভয়কে পরিষ্কার করে।
অ্যাভোকাডোঃ এটি সরাসরি ত্বকে প্রয়োগ করতে হয় কিন্তু খাওয়া যায় না। যা আমাদের ত্বকের জন্য কার্যকর ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে।
জাম্বুরাঃ এই জাম্বুরা ত্বকের যত্নের জন্য অনেক কার্যকর। যার ভিটামিন সি দেহকে বিষমুক্ত করে এবং এতে উচ্চ মাত্রায় পানি থাকে।
মাছঃমাছে থাকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যা প্রদাহ প্রতিরোধ করে এবং ত্বকের তৈলাক্ত কমায়।
ব্রোকোলিঃ এতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে। ইহা ত্বকের তৈলাক্ততা কমায় এবং ব্রণ প্রতিরোধ করে।
নারকেলের পানিঃ আমাদের ত্বকে আর্দ্রতা বজায় রাখতে বেশ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে এই নারকেলের পানি। যা ত্বক নমনীয় ও পরিষ্কার রাখে এবং তৈলাক্ততা কমায়।
ডার্ক চকলেটঃ এই ডার্ক চকলেট শুধু সুস্বাদই নয় বরং এ ডার্ক চকলেট ব্রনের প্রদাহ কমাতে খুবই কার্যকর। যা এন্টিঅক্সিডেন্ট দেহে তেলের উপাদান নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।
লেবুঃলেবু আপনার ত্বকের জন্য কতটা উপকার করতে পারে তা হয়তো আপনি জানেন না। এই লেবু খেলে আপনার ত্বক পরিষ্কার নয় বরং দেখতে মসৃণ এবং উজ্জ্বল হবে।
কলাঃ কলাতে থাকা ভিটামিন ই, ফসফেট এবং পটাশিয়াম যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। এজন্য প্রতিদিন একটি করে কলা খেলে ত্বকের তৈলাক্ততা দূর হয়। যা লোমকূপ কে সুরক্ষিত রাখে যাতে করে ময়লা প্রবেশ করতে না পারে এবং তলের গাদ তৈরি করতে পারে না।
ফল এবং সবজিঃ ফল ও সবজি খেলে হজম সমস্যা সমাধান করে। হজম সমস্যার কারণে অনেক সময় ত্বক তৈলাক্ত হয় এবং ব্রণ উঠে।
পূর্ণ শস্যঃ পূর্ণ শস্য জাতীয় খাদ্যগুলোতে প্রচুর আশ থাকে। খাদ্য হজম প্রক্রিয়ায় খুবই কার্যকর। আমাদের ত্বকের তেল ও ব্রণ মুক্ত রাখতে সাহায্য করে।
শসাঃ শসাতে রয়েছে ৮০% পানি। এ ছাড়াও এতে প্রচুর এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যা আমাদের ত্বককে সজিব রাখতে সহায়তা করে।
বয়সের ছাপ দূর করার ফেসপ্যাক
আজকের আর্টিকেল মুখের ত্বকের ভাজ দূর করার উপায়। তারুণ্য ধরে রাখতে অনেকে হাজার হাজার টাকা খরচ করেন। এরপরেও তারুণ্য ধরে রাখা অনেক কষ্টকর হয়। আমরা নিজেরাই কিছু ফেসপ্যাক তৈরি করে আমাদের ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পারি। তারুণ্য ধরে রাখার ব্যবস্থাও করতে পারি। বয়সের ছাপ দূর করার ফেসপ্যাক গুলো আলোচনা করা হলো।
আর ও পড়ুনঃ কন্ঠস্বর সুন্দর করার ১৫টি ঘরোয়া উপায়
ফেসপ্যাকঃ এক
উপকরণঃ ডিম লেবুর রস ও মধু। ডিম বয়সের ছাপ দূর করতে ভূমিকা রাখে। লেবুর রসের ভিটামিন সি রয়েছে যা ত্বকের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন এবং মধুকে ময়েশ্চার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
তৈরির নিয়মঃ প্রথমে একটি পাত্রে ডিম ফাটিয়ে নিতে হবে। উক্ত ডিমের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস ও এক চামচ মধু দিয়ে মিশ্রণটি ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। মিশ্রনটি ত্বকে ভালো করে লাগিয়ে শুকিয়ে নিতে হবে। ত্বক শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে কয়েক সপ্তাহ করলে ত্বকে বয়সের ছাপ দূর হবে।
ফেসপ্যাকঃ দুই
উপকরণঃ নারিকেলের দুধ ও অ্যালোভেরা জেল। নারকেলে নারিকেলের দুধ ত্বককে নরম ও মসৃন করে। অ্যালোভেরা জেল ত্বকের ময়েশ্চার হিসেবে ব্যবহার করে।
ব্যবহারের নিয়মঃ একটি পাত্রে দুই থেকে তিন টেবিল চামচ এলোভেরার জেল সঙ্গে এক কাপ নারিকেল দুধ নিয়ে মিশিয়ে নিতে হবে। অবশ্যই এ মিশ্রণের সঙ্গে মুশুরের ডাল মিশাতে পারেন। মিশ্রনটি মুখ ও শরীরের ত্বকে ভালো করে লাগিয়ে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। অপেক্ষা করার পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে।
ফেসপ্যাকঃ তিন
উপকরণঃ দুধ ও কোকো পাউডার।
ব্যবহারের নিয়মঃ এক কাপ দুধের সঙ্গে কিছু পরিমাণ কোকো পাউডার নিয়ে ভালো করে পেস্ট তৈরি করতে হবে। ঘন এই পেস্ট মুখ ও শরীরের ত্বকে ভালো করে লাগিয়ে নিতে হবে। ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
ফেসপ্যাকঃ চার
উপকরণঃ টমেটো ও শসা।
ব্যবহারের নিয়মঃ দুটি টমেটো ও একটি শসা ভালো করে পেস্ট করে নিতে হবে। ত্বক যদি সুস্ক হয় তবে দুই থেকে তিন ফোঁটা নারিকেলের তেল দিয়ে ঘন করে পেস্ট করে নিতে হবে। এই পেস্ট মুখ ও শরীরের ত্বকে ভালো করে লাগিয়ে শুকিয়ে নিতে হবে।
পেস্টগুলো শুকিয়ে নেওয়ার পরে মুখ ও শরীরের ত্বক ভালো করে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে দিনের দুইবার করতে হবে।
মুখের ত্বক টানটান করার ব্যায়াম
নিয়মিত মুখের ব্যায়াম করলে ত্বকের বলিরেখা পড়ে না। ব্যায়ামের মাধ্যমে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি হয়। পেশিগুলো সুগঠিত হয় মুখের ত্বক টানটান হয়। মুখের ত্বক টানটান করার ব্যায়ামগুলো আলোচনা করা হলো।
প্রথমে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস নিয়ে গাল ফুলিয়ে নিতে হবে। এবার বায়ু গালের এক সাইড থেকে অপর সাইটে ঠেলে দিতে হবে। এভাবে যতক্ষণ দম ধরে রাখা যায় ততক্ষণ এ কাজ করতে হবে। আস্তে আস্তে দম ছাড়তে হবে। এভাবে আট থেকে দশ বার করতে হবে।
মুখ যতদূর সম্ভব বড় করে হা করতে হবে এবং ভুরু কুঁচকে উপরে ফেলে দিতে হবে। চোখ বড় বড় করে রাখতে হবে। যতক্ষণ সম্ভব এ অবস্থায় থাকতে হবে। এই ব্যায়াম টি আট থেকে দশ বার করতে হবে।
ঘাড় পিছনের দিকে যতদূর সম্ভব হালিয়ে দিতে হবে। এরপরে হাতের আঙ্গুল দিয়ে গলার ত্বক ভালোভাবে মালিশ করতে হবে। এই অবস্থায় উপর দিকে নিচে আসতে হবে এবং পুনরায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে হবে।
ঘাড়টা পিছনে যতদূর সম্ভব হেলিয়ে দিয়ে টানটান করতে হবে। এরপরে ঠোঁট বাহিরের দিকে দিয়ে যতদূর সম্ভব হাসার চেষ্টা করতে হবে। এই অবস্থায় হাতের তালু দিয়ে গলার ত্বক ভালো করে মালিশ করতে হবে। গলায় টান লাগলে থেমে যেতে হবে পুনরায় আবার করতে হবে। এভাবে তিন থেকে চারবার করতে হবে।
কপালভাঁজ না করে যত সম্ভব চোখ বড় করে তাকানোর চেষ্টা করতে হবে। এতে কপালের ত্বক টানটান মোলায়েম এবং উজ্জ্বল হবে। এই ব্যায়ামটি ১০ থেকে ১২ বার করে দিনে দুইবার করতে হবে।
চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে এক চোখ বন্ধ করে অন্য চোখ খোলা বন্ধ করতে হবে। দিনে এভাবে ২৫ থেকে ৩০ বার করতে হবে। চোখ ভালো থাকবে এবং চোখের নিচে কালো দাগ দূর হবে।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক বৃন্দ মুখের ত্বকের ভাজ দূর করার উপায় বিষয়ে আজকের আর্টিকেল লেখা হল। শরীরের সৌন্দর্য রক্ষার জন্য মানুষ বহু পরিশ্রম ও টাকা খরচ করেন। শরীরের সৌন্দর্য রাখলে নিজেদের মান অনেক উন্নত হয়। যার জন্য শরীর সৌন্দর্য রাখার চেষ্টা করতে হবে।
আজকের আর্টিকেলে প্রাকৃতিক কিছু জিনিস ব্যবহার করে শরীরের সৌন্দর্য ধরে রাখা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করা হলো। আশা করি আজকের আর্টিকেল ভিজিট করার মাধ্যমে এগুলো বিষয়ে জানতে পারবেন। কোন কিছু জানার থাকলে কমেন্টে জানাবেন। ভালো লাগলে বন্ধুদের মাঝে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করবেন।
।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url