ইসলামে কত ঘন্টা ঘুমানো উচিত

সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ ইসলামে কত ঘন্টা ঘুমানো উচিত এই বিষয়ে আজকের আর্টিকেল লিখতে বসলাম। আজকের আর্টিকেলে আরো লেখা হবে দুপুরে কতক্ষণ ঘুমানো উচিত। সঠিকভাবে ঘুমানোর ১১০ টি সুন্নাত। সঠিকভাবে ঘুমানোর ১০ টি উপকারিতা।
কোন বয়সের কি পরিমান ঘুমের প্রয়োজন বিষয়ে আলোচনা করা হবে। আজকের এ বিষয়গুলো জানতে আমাদের সঙ্গে থাকুন।

ভূমিকা

আজকের আর্টিকেলের বিষয় ইসলামে কত ঘন্টা ঘুমানো উচিত। ঘুম হচ্ছে শারীরিক পরিশ্রম থেকে বিশ্রামের মাধ্যম। ঘুমের মাধ্যমে শারীরিক পরিশ্রম ও ক্লান্তি বোধ দূর হয়ে শরীর মন মেজাজ প্রফুল্ল থাকে। ঘুমের মাধ্যমে শরীরের বিপাক ক্রিয়া ভালোভাবে সম্পন্ন হয়। এছাড়াও ঘুমের কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়। 
সারাদিন কাজের ফলে মাথার উপর অনেক চাপ পড়ে। পর্যাপ্ত ঘুমের কারণে মস্তিষ্কের নার্ভের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায় যার কারণে নতুন করে মেধা শক্তি বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও ঘুমের ফলে মস্তিষ্কের নার্ভে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে। যার কারণে নার্ভ সিস্টেম অনেক উন্নত হয়।

দুপুরে কতক্ষণ ঘুমানো উচিত 

দুপুরে খাওয়ার পরে শরীরে একটু আলসেমি চলে আসে। দুপুরে ঘুমানোর স্বাস্থ্যের জন্য কত উপকারী তা নিয়ে অনেক মতবিরোধ রয়েছে। বিশেষজ্ঞগন বলেছেন দুপুরের খাওয়ার পরে কি পরিমান ঘুমানো হয় তার উপর নির্ভর করে ভালো অথবা মন্দ। সাধারণত কিছু সময় দুপুরে খাওয়ার পরে ঘুমিয়ে আলসেমি কাটানো ভালো। 

ইউনিভার্সিটি অফ পেন সালভানিয়ার মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফিলিপস গেরমান বলেন শারীরিক জড়তা কাটানো পাশাপাশি কাজের দক্ষতা ও সৃজনশীলতা বৃদ্ধির জন্য মন মেজাজ প্রফুল্ল রাখতে দুপুরে কিছু সময় ঘুম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

সেই সঙ্গে সামান্য পরিমাণ দুপুরে ঘুমালে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয় ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। তবে ঘুমের পরিমাণ ১৫ মিনিট থেকে ৩০ মিনিট পর্যন্ত হওয়া প্রয়োজন। তবে কেউ যদি মানসিকভাবে বিপর্যয় হয়ে থাকেন তাহলে ৯০ মিনিট পর্যন্ত ঘুমাতে পারেন। 

কিন্তু ঘুমের মাঝখানে যদি ঘুম ভেঙ্গে যায় তাহলে মেজাজ খিটখিটে শরীর ম্যাজ মেজে অথবা মাথাব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে দুপুরের ঘুম সবার জন্য নয়। যাদের ঘুমানো প্রয়োজন নাই এমন লোকেরা ঘুমালে ক্ষতি হয়। দুপুরে যারা ঘুমান তাদের ৫০ ভাগ লোক উপকার পান না।

ইসলামে কত ঘন্টা ঘুমানো উচিত 

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বেশি রাত জেগে থাকতে নিষেধ করেছেন। রাসুল সালাম ও সাহাবীগণদের অভ্যাস ছিল এশার নামাজের পরে ঘুমিয়ে যেতেন। শেষ রাতে আবার ইবাদতের জন্য উঠতেন। সাধারণত সূর্যাস্ত যাওয়ার দুই ঘন্টার মধ্যে এশার নামাজ শেষ হয়। 
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাত্রিকে চার ভাগে ভাগ করতেন। প্রথম ভাগ ছিল এশার নামাজ পর্যন্ত। এশার নামাজের পরে সঙ্গে সঙ্গে ঘুমিয়ে যেতেন। এরপরে শেষ রাতে আবার উঠতেন। হিসাব করা যায় রাসুল সালাম এর ও তার সাহাবীদের ঘুমের পরিমাণ ৫ থেকে ৬ ঘন্টা হতো। 

তবে লক্ষ্য রাখতে হবে এশার নামাজের পরে যেন সময় কাটানো না হয়। এশার নামাজের সঙ্গে সঙ্গে ঘুমাতে হবে এবং রাতের শেষ অংশে জেগে ইবাদত করা প্রয়োজন। তাহলে মূল কথা আমরা বলতে পারি ইসলাম ৫ থেকে৬ ঘন্টা ঘুমের অনুমতি দেয়।

সঠিক ভাবে ঘুমানোর ১০টি সুন্নাত

সারাদিন পরিশ্রমের ফলে শরীর ক্লান্ত হয়ে গেলে রাতে ঘুমের মাধ্যমে সেই ক্লান্তি দূর হয়। এছাড়াও মুমিনদের ঘুম ইবাদতের নেই। তবে মুমিনদের ঘুম রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এর নিয়ম মত হতে হবে। আজকের বিষয় ইসলামছ কত ঘন্টা ঘুমানো উচিত। ঘুমের সুন্নাত গুলো নিম্নরূপ।

পবিত্রতার সঙ্গে ঘুমঃ ঘুমানোর পূর্বে অজু করে ঘুমাতে হবে। হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল থেকে বর্ণিত নবী বলেছেন যে মুসলিম ব্যক্তি পবিত্র অবস্থায় ও মহান আল্লাহকে স্মরণ করে রাত কাটায় এবং রাতে জেগে আল্লাহর কাছে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ লাভের দোয়া করে আল্লাহ তাকে দান করেন। এই ক্ষেত্রে ফরজ গোসল হয়ে থাকলেও অজু করে ঘুমাতে হয়।

আল্লাহর নামে দরজা বন্ধ করাঃ ঘুমানোর সময় আল্লাহর নামে দরজা বন্ধ করে দিয়ে ঘুমানো প্রয়োজন। হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রাজিআল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন যখন সন্ধ্যা হয় তখন তোমাদের সন্তানদের ঘরে আটকে রাখো। কেননা এ সময় শয়তান ছড়িয়ে পড়ে। তবে রাতের কিছু অংশ অতিবাহিত হলে তাদের ছেড়ে যেতে পারো।

আল্লাহর নামে ঘরের দরজা বন্ধ করবে। শয়তান বন্ধ দরজা খুলতে পারে না। এছাড়াও আল্লাহর নামে তোমাদের মশকের মুখ বন্ধ করবে এবং আল্লাহর নাম নিয়ে তোমাদের পাত্র গুলো কে ঢেকে রাখবে। কমপক্ষে পাত্র গুলোর উপর কোন বস্তু আড়ি করে দিয়ে রাখ। ঘুমানোর সময় তোমাদের বাতি গুলো নিভিয়ে দিবে। সহিহ বুখারি।

ক্ষমা করে ঘুমানোঃ ঘুমের আগে সবাইকে ক্ষমা করে দিয়ে ঘুমানো প্রয়োজন। যাহারা ক্ষমা করে দিয়ে ঘুমান তাদের ব্যাপারে সুসংবাদ এসেছে। এক সাবির ব্যাপারে পরপর তিন দিন আল্লাহর রাসূল জান্নাতের শুভ সংবাদ দিয়েছেন। 

পরে দেখা গেল ওই ব্যক্তি ঘুমানোর আগে সবাইকে মাফ করে দিয়ে ঘুমান। তার অন্তরে অন্য মুসলমানদের সম্পর্কে কোন হিংসা বিদ্বেষ থাকতো না। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা বলেন এ গুণ আপনাকে এত বড় মর্যাদায় উপনীত করেছে আর সেটা আমরা করতে পারি না।

ওসিয়ত করে ঘুমানোঃ কাহারো কোন ওসিয়ত যোগ্য সম্পদ থাকলে ওসিয়ত করে ঘুমানো প্রয়োজন। আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি রাসুল (সাঃ) বলেছেন যে ব্যক্তি কিছু অর্থ সম্পদ আছে আর সে এ সম্পর্কে ওসিয়ত করতে চাই সে মুসলিম ব্যক্তির উচিত হবে না ওসিয়ত করে বা লিখে না রেখে দুটি রাত অতিবাহিত করা। (সহি মুসলিম ৪০৯৬)

লাইট বন্ধ করে ঘুমানোঃ ঘুমানোর সময় লাইট বন্ধ করে দিয়ে ঘুমানো প্রয়োজন। রাতে লাইট বন্ধ করলে ঘুমের গভীরতা বাহা বাড়ে এবং ভালো ঘুম হয়। এ সম্পর্কে হযরত জাবেররা থেকে বর্ণিত রাসূল সা বলেছেন বলেছেন তোমরা যখন ঘুমাবে নিভিয়ে দিবে দরজা গুলো বন্ধ করবে। 

মশকের মুখ বন্ধ করবে। খাদ্য ও পানীয় দ্রব্য দিয়ে ঢেকে রাখবে। তিনি বলেন আমার মনে হয় তিনি আরো বলেছেন কমপক্ষে একটি কাঠ আড়াআড়ি করে পাত্রের উপর রেখে দিবে সহীহ বুখারী ৫৬২৪

বিছানা ঝেড়ে নেওয়াঃ ঘুমানোর সময় বিছানা ঝেড়ে নিয়ে ঘুমাতে হবে। কারণ ঘুমানোর আগে বিছানায় কোন বস্তু আছে কিনা যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাবে। এছাড়াও বিছানায় বিভিন্ন ময়লা থাকতে পারে। 

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন নবী (সাঃ) বলেছেন যদি তোমাদের কোন ব্যক্তি শয্যা গ্রহণ করতে চায় তখন সে যেন তার লুঙ্গির ভিতর দিক দিয়ে নিজ বিছানাটা ঝেড়ে নেয়। এরপরে বিছানায় ঘুমানোর সময় সে পড়বে যে আমার রব আপনার নামে আমার শরীরটা বিছানায় রাখলাম এবং আপনার নামে আবার উঠবো। 

যদি আপনি এর মধ্যে আমার জান কবজ করে নেন তাহলে আর তার উপর রহম করবেন আর যদি আমাকে ফিরিয়ে দেন তবে তাকে এমন হেফাজত করবেন যেভাবে আপনি আপনার নেক বান্দাদের হেফাজত করে থাকেন। বুখারী শরীফ ৬৩২০।

ডান দিক হয়ে ঘুমানোঃ ঘুমানোর সময় ডান কাছে ঘুমানো প্রয়োজন। এ সম্পর্কে হযরত বারা ইবনে আজিব বলেন নবী (সাঃ) বলেছেন যখন তুমি বিছানায় যাবে তখন নামাজের অযুর মত অজু করে নেবে। এরপরে ডান কাতে শুয়ে পড়বে। সহি বুখারি ২47

হাদিসে বর্ণিত দোয়া পাঠ করাঃ প্রতিদিন ঘুমানোর আগে সূরা ইখলাস সূরা ফালাক ও সূরা নাস পাঠ করে দুই হাতে ফু দিয়ে শরীরের যত দূর সম্ভব হাত বুলানো। নবী করীম সা এভাবেই করতেন। হযরত হুজাইফা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম রাতে নিজ বিছানায় সবসময় নিজহাত গালের নিচে রাখতেন।

তারপরে বলতেন আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুতুওয়াহইয়া। অর্থ হে আল্লাহ আপনার নামেই মরি আপনার নামে জীবিত হই। যখন ঘুম থেকে জাগতেন তখন বলতেন আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি আহইয়ানা বায়াদা মা আমাতানা ওয়া ইলাইহিন নুশুর। 

অর্থ সেই আল্লাহর জন্য প্রশংসা যিনি মৃত্যুর পর আমাদের জীবন দান করলেন এবং তারই দিকে আমাদের পুনরুত্থান হবে। বুখারী

উপুড় হয়ে না ঘুমানোঃ উপুড় হয়ে ঘুমানো ঠিক নয়। রাসুল (সাঃ) এরকম শোয়া পছন্দ করেন না জামে তিরমিজি ২৭৬৮
উপুড় হয়ে ঘুমানো নিষেধ করা হয়েছে এজন্য যে জাহান্নামীদেরকে উপুড় করে রাখা হবে।

এশার নামাজের আগে না ঘুমানোঃ এশার নামাজের আগে না ঘুমানো। এশার নামাজ পড়ার পরে ঘুমানো প্রয়োজন। হযরত আবুবারা বলেন রাসূল (সাঃ) এশার আগে নিদ্রা যাওয়া এবং পরে কথাবার্তা বলা পছন্দ করতেন না।

সঠিক ভাবে ঘুমানোর ১০টি উপকারিতা 

ঘুম আমাদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। সারাদিন পরিশ্রম করার ফলে শরীরের যে ক্লান্তি আসে ঘুমের মাধ্যমে সেটি দূরীভূত হয়। আজকের বিষয় ইসলামে কত ঘন্টা ঘুমানো উচিত। ঘুমের মাধ্যমে আমাদের দেহের নানা রকম শূন্যতা দূর হয়। 
এছাড়াও গভীর ঘুমের মাধ্যমে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়। সঠিকভাবে ঘুমানোর দশটি উপকারিতা আলোচনা করা হলো।

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ প্রাত্যাহিক বিভিন্ন কাজ-কর্মের সময় মস্তিষ্ক কর্মক্ষম থাকায় স্মৃতিশক্তি এলোমেলো হয়ে যায়। ঘুমের মাধ্যমে মাথা ঠান্ডা থাকে। গভীর ঘুমের ফলে মস্তিষ্কের কোষগুলো স্মৃতিশক্তি গুলোকে সাজিয়ে নেয়। ঘুম থেকে ওঠার পরে স্মৃতিশক্তি সতেজ ও বৃদ্ধি হয়।

আবেগ গত সমস্যা দূর করেঃ মানসিক দুশ্চিন্তার কারণে মানুষ আবেগী হয়ে ওঠে। অপরপক্ষে গভীর ঘুমের ফলে মস্তিষ্ক ঠান্ডা থাকে এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি হয়। যার কারণে গভীর ঘুমের ফলে আবেগ গত সমস্যা দূর হয় এবং এবং মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে।

যৌনতার উন্নতি ঘটেঃ ঘুমের ফলে শরীরের বিভিন্ন খারাপ প্রভাব গুলো দূর হয়ে যেয়ে মন প্রফুল্ল হয়। যার কারণে যৌনশক্তি বৃদ্ধি হয়। এছাড়াও প্রাত্যাহিক বিভিন্ন কাজকর্মে শরীর ক্লান্ত হয়ে গেলে গভীর ঘুমের মাধ্যমে সেই ক্লান্ত দূর হওয়ার কারণে যৌন ক্ষমতার উন্নতি ঘটে।

আয়ু বৃদ্ধি করেঃ একজন ব্যক্তির প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন। গবেষণায় দেখা গেছে যাহারা৬ ঘন্টার উপরে ঘুমান তাদের চাইতে যাহারা ৬ ঘন্টার নিচে ঘুমান তাদের আয়ু কমার ঝুঁকিতে বেশি থাকেন। এছাড়াও ঘুমের ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয় যার কারণে কোন রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে না। যার কারণে আয়ুর বৃদ্ধি হয়। 

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ ঘুমের ফলের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়। বিভিন্ন রকম পরিশ্রমের ফলে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে। রাতে ঘুমানোর মাধ্যমে শরীরের ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। যার কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়

সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করেঃ সৃজনশীলতার বৃদ্ধি করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের প্রয়োজন। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীরের কর্মক্ষমতা কমে যায়। 

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন কোন কাজের ফাঁকে যদি সামান্য ঘুমানো যায় তাহলে স্পন্দনের হার ৫ ভাগ কমে যায় এবং হৃদপিন্ডের কার্যক্ষমতা শতকরা 30 ভাগ বেড়ে যায়। যার কারণে পর্যাপ্ত ঘুম হলে শরীরের সৃজনশীলতা বেড়ে যায়।

ওজন নিয়ন্ত্রণঃ মনে করা হয় বেশি ঘুমালে ওজন বেড়ে যায় কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা ঠিক নয়। বিশেষজ্ঞগনেরা বলেছেন পর্যাপ্ত গভীর ঘুমের কারণে ওজন কমে যায়। পর্যাপ্ত ঘুমের কারণে শরীরের বিপাকক্রিয়া ভালো হয়। যার কারণে শরীরের হজম ক্ষমতা বেড়ে যায় এবং শরীরের মেদ কমে যায়।

মানসিক চাপ কমায়ঃ সারাদিন বিভিন্ন কাজ ও ঝামেলার কারণে মানসিক চাপ অনেক বেড়ে যায়। রাতে পর্যাপ্ত ঘুমের কারণে উক্ত মানসিক চাপগুলো দূর হয়ে মন ও মেজাজ প্রফুল্ল হয়।

রাস্তায় নিরাপত্তাঃ রাস্তা রাতে পর্যাপ্ত ঘুমের কারণে চলাফেরা অথবা গাড়ি চালানোর সময় ঘুমের ভাব হয় না। অথচ অপরদিকে ঘুমের পরিমাণ কম হলে গাড়ি চালানোর সময় ঘুমের প্রভাব পড়ে এবং রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই নিয়মিত ঘুমের ফলে রাস্তার দুর্ঘটনা কম হয়।

মন মেজাজ ভালো থাকেঃ পর্যাপ্ত ঘুমের কারণে মানুষের মন ও মেজাজ ভালো থাকে। পরিশ্রমের পর শারীরিক ক্লান্তির পরে ঘুমানো কারণে শরীরে ক্লান্তি দূর হয় এবং মনের প্রশান্তি চলে আসে। কারণে মানসিক স্বস্তি বৃদ্ধি পায়।

কোন বয়সে কত ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন

আমাদের শরীরের ক্লান্তি দূর করার জন্য সাধারণত ঘুমানো হয়। তবে বয়স ভেদে ঘুমের কম বেশি হতে পারে। যেমন শিশুদের জন্য বেশি ঘুমের প্রয়োজন। ওপর পক্ষে বড়দের জন্য শিশুদের চেয়ে কম ঘুম প্রয়োজন। আজকের বিষয় ইসলামে কত ঘন্টা ঘুমানো উচিত। কোন বয়সে কি পরিমান ঘুমানো প্রয়োজন তা ছক আকারের নিম্নে বর্ণনা করা হলো।

ক্রমিক নং

বয়সের পরিমান

কত ঘন্টা ঘুম প্রয়োজন

      ১

০থেকে৩ মাস বয়সী শিশু ঘুম প্রয়োজন

  =১৪ থেকে ১৭ ঘণ্টা

    ২

৪মাসথেকে১১ মাস বয়সী শিশু ঘুম প্রয়োজন

  =১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা

    ৩

১ থেকে ২ বছর বয়সী শিশুদের ঘুম প্রয়োজন

  =১১ থেকে ১৪ ঘণ্টা

    ৪

৩ থেকে ৫ বছর বয়সীদের ঘুম প্রয়োজন

  =১০ থেকে ১৩ ঘণ্টা

    ৫

৬ থেকে ১৩ বছর বয়সী শিশুদের ঘুম প্রয়োজন

  =৯ থেকে১১ঘণ্টা

    ৬

১৪ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের ঘুম প্রয়োজন

  =৮ থেকে ১০ ঘণ্টা

    ৭

১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী মানুষের রাতে

  =৭ থেকে ৯ ঘণ্টা

    ৮

২৬ থেকে ৬৪ বছর বয়সী মানুষের রাতে

  =৭ থেকে ৯ ঘণ্টা

    ৯

৬৫ বছরের চেয়ে বেশি বয়সীদের জন্য 

  =৭ থেকে ৮ ঘণ্টা

স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীরা বলেছেন অনশনে মানুষ ১৪ দিন বাঁচতে পারে, কিন্তু ঘুম বাদ দিয়ে মানুষ ১০ দিনের উপর বাঁচতে পারে না। এছাড়াও শরীর ভালো ও মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ঘুম অত্যন্ত প্রয়োজন। এছাড়াও ঘুম মানসিক চাপ দূর করে মন মেজাজ প্রফুল্ল রাখে। এজন্য নিয়মিত ঘুমের অভ্যাস করা প্রয়োজন।

লেখক এর মন্তব্য

ইসলামে কত ঘন্টা ঘুমানো উচিত এ বিষয়ে আজকের আর্টিকেল লেখা হয়েছে। ঘুম মানব জীবনে বড় মূল্যবান সম্পদ। ঘুমের মর্ম বোঝে তারাই যাদের ঘুম কম হয়। এছাড়াও আজকে আলোচনা করা হয়েছে ঘুমের উপকারিতা। ঘুমের সুন্নাত সমূহ। ঘুম সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জানতে আজকের আর্টিকেলটি ভিজিট করুন। 

আজকের আর্টিকেলটি গুগল সহ বিভিন্ন গ্রন্থ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে লিখা হয়েছে। যার কারণে আজকের আর্টিকেলটি ভালো লাগবে এবং উপকৃত হবেন। আপনারা উপকৃত হলে নিজেকে সার্থক মনে করব। ভালো লাগলে বন্ধুদের মাঝে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url