হার্ট ব্লক থেকে বাঁচার উপায়
সুপ্রিয় পাঠকগণ আজকের আর্টিকেলটি হার্ট ব্লক থেকে বাঁচার উপায়। এছাড়া আরো থাকছে হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার। হার্ট ভালো রাখার জন্য নিয়মিত যে সকল খাবার খেতে হবে। এছাড়াও হার্ট ভালো রাখতে যেগুলো ফল খাওয়া প্রয়োজন।
হঠাৎ করে হার্ট ব্লকের সমস্যা হলে কি কি লক্ষণ দেখা দিবে তার বর্ণনা করা হয়েছে। আসুন এগুলো বিষয় জানতে আমাদের সাথে থাকুন।
ভূমিকা
সুপ্রিয় পাঠকগণ হার্ট হল আমাদের শরীরের প্রধান অঙ্গানুর মধ্যে একটি। হার্টের কাজ হল সমস্ত দেহের দূষিত রক্ত গ্রহণ করে বিশুদ্ধ রক্ত সমস্ত শিরা উপশিরায় প্রেরণ করা। অর্থাৎ রক্ত সরবরাহ করাই হার্টের প্রধান কাজ। সাধারণত উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার কারণে রক্ত চলাচল বিঘ্ন ঘটে।
আর ও পড়ুনঃ ঘর ধুলো বালি মুক্ত রাখার উপায়
এছাড়া রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকলে হার্টের নালিতে চর্বি জমার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।এগুলো কারণে হার্টের নালিতে চর্বির পরিমাণ বেশি হলে রক্ত চলাচলে বাধাপ্রাপ্ত হয়। তখন হার্টের বিভিন্ন সমস্যা শুরু হয়। এমনকি হার্ট ব্লক হয়ে যেতে পারে। যার কারণে স্টোকের মত সমস্যা ঘটে। আজকের বিষয় হার্ট ব্লক থেকে বাঁচার উপায়।
হার্ট ব্লক থেকে বাঁচার উপায়
প্রিয় পাঠকগণ আপনারা হয়তো জানতে চাচ্ছেন হার্ট ব্লক থেকে বাঁচার উপায়। সাধারণত বংশগতভাবে অথবা খাবারের অনিয়ম অথবা চলাফেরার অনিয়মের কারণে হার্ট ব্লক হতে পারে। হার্ট ব্লক দূর করার জন্য কিছু নিয়ম কানুন পালন করলেই হার্ট ব্লক হতে রক্ষা পাওয়া যায়।
পরিমাণ মতো আহারঃ বিশেষজ্ঞ গনের মতে পরিমাণ মতো আহার করলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় টাটকা শাকসবজি বেশি রাখতে পারেন। শসা টমেটো সালাদ বেশি খেতে পারেন। এছাড়াও পর্যাপ্ত পরিমাণ মাছ খেতে পারেন।
তবে মাংস ও লবণ জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে। পরিমিত আহার করলে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমতে পারে না।
নিয়মিত ব্যায়ামঃ নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গাণুগুলো ভালো থাকে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট সকালে হাঁটতে পারেন। এছাড়াও আরো কিছু ব্যয়াম আছে যেগুলো করতে পারেন।
হাটাহাটি ও ব্যায়াম করার কারণে রক্তনালীতে রক্ত চলাচল ভালো করে। রক্তনালীতে চর্বি জমতে পারে না। যার কারণে হার্ট ব্লক থেকে বাঁচা যায়।
ধূমপান বাদ দিনঃ ধূমপান করার ফলে হার্ট ব্লকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এছাড়াও ধূমপানের কারণে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ধূমপান করার ফলে প্রতি বছর বিশ্বে উনিশ লক্ষ লোক হৃদরোগে মারা যাচ্ছে।
এছাড়াও বাংলাদেশে ধূমপান করার ফলে প্রতি বছর ২ লক্ষ ৭৭ হাজার লোক হৃদরোগে মারা যাচ্ছে। তাই পুরোপুরি ভাবে ধূমপান এড়িয়ে চলতে হবে।
অ্যালকোহল পান বাদ দিনঃ অ্যালকোহল পান করার কারণে ঘুম কম হয়। এছাড়া রক্তচাপ বেড়ে যায়। যার কারণে অ্যালকোহল পান করলে হার্ট ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই পুরোপুরি অ্যালকোহল বাদ দিতে হবে।
মানসিক চাপ কমানোঃ অতিরিক্ত মানসিক চাপ থাকলে হার্ট ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে ঘুম কম হয়। দুশ্চিন্তার কারণে খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন হয়। তাছাড়াও জীবনের চলার সকল ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। এই জন্য সবসময় মানসিক চাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হবে।
মাঝে মাঝে পরীক্ষা করাঃ মাঝে মাঝে বিভিন্ন রকম পরীক্ষা করে হার্টের অবস্থা জানতে হবে। এই ক্ষেত্রে রক্তচাপের পরীক্ষা ডায়াবেটিসের পরীক্ষা সহ শরীরের রক্তনালীর কি অবস্থা এগুলো বিষয় পরীক্ষার মাধ্যমে জানতে হবে। কোন ব্যাপারে কোন সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে সেটা প্রতিকারের মাধ্যমে ভালো সফলতা পাওয়া যায়।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখাঃ রক্তচাপ বেশি হলে হার্ট ব্লকের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যার কারণে সব সময় রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। সাধারণত খাবার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমেই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। মাঝে মাঝে রক্তচাপ পরীক্ষা করে দেখার প্রয়োজন।
রক্তের শর্করা কমানোঃ বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের সব সময়ে রক্তে শর্করা কমিয়ে রাখতে হবে। রক্তে শর্করা বেড়ে গেলে হার্ট ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। নিয়মিত ব্যায়াম হাটাহাটি ও খাবারের তালিকা পরিবর্তনের মাধ্যমে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
অতিরিক্ত স্থুলতা কমানোঃ অতিরিক্ত স্থুলতা হার্ট ব্লকের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। তাই শরীর অতিরিক্ত স্থুলতা হলে ডায়েটের মাধ্যমে শরীরের স্থুলতা কমিয়ে ফেলতে হবে।
বংশীয় কারণঃ বংশীয় কারণে হার্ট ব্লক হয়। লক্ষ্য রাখতে হবে পিতা-মাতার বংশের কারো হার্ট ব্লকের সমস্যা ছিল কিনা। পূর্ববর্তী বংশের হার্ট ব্লকের সমস্যা থাকলে নিজেকে অত্যন্ত সচেতন হতে হবে। চলাফেরার সকল ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। মাঝে মাঝে হার্ট চেকআপ করতে হবে।
অতিরিক্ত খারাপ চর্বি মুক্ত থাকাঃ সাধারণত খারাপ চর্বি জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে। বয়স ৩০ পার হলেই লাল জাতীয় মাংস খাওয়া কমিয়ে দিতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন রকম ভাজাপোড়া খাবার বাদ দিতে হবে।
শর্করা জাতীয় খাবার কমানোঃ চিনি ও চিনি জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে। এছাড়াও শর্করা জাতীয় খাবার যেমন ভাত রুটি আলু এর পরিমাণ কমিয়ে দিতে হবে। এর স্থলে বেশি শাকসবজি ও ফলমূল খেতে হবে।
কিছু নিয়ম পালন ও নিয়মিত স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের মাধ্যমে হার্টের ব্লক থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও হালকা ব্লক ধরা পড়লেও খাবার ও নিয়ম পালন এর মাধ্যমে উক্ত ব্লক দূর করা যায়।
হার্টের ব্লক দূর করার ব্যায়াম
নিয়মিত ব্যায়াম করার কারণে হার্টের ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। ব্যায়ামগুলোর মধ্যে হল।
অ্যারোবিকঃ এই ব্যায়াম হলো সেই সকল ব্যায়াম যে ব্যায়ামগুলো করার মাধ্যমে তাড়াতাড়ি গা ঘামে। এই ব্যায়াম করার মাধ্যমে হার্টের ব্লক হওয়ার ঝুঁকি কমে ফুসফুসে কার্যক্ষমতা বাড়ে শরীরের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি হয় এবং শরীরের মাংসপেশী মজবুত হয়।
আর ও পড়ুনঃ ভিটামিন এ এর অভাব জনিত লক্ষণ
জগিং লাফঃ জগিং ও লাফ দেওয়ার মাধ্যমে তাড়াতাড়ি শরীর ঘামে। শরীরের সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কার্যক্ষমতা বাড়ে এবং হার্ট ভালো থাকে।
সাঁতার কাটাঃ নিয়মিত সাঁতার কাটার মাধ্যমে হার্টের ব্লক হওয়ার ঝুঁকি কমে। সাঁতার কাটার সময় দুই হাত দুই পা শরীরের সব অঙ্গ গুলো কাজ করে। যার কারণে সাঁতার হলো উত্তম ব্যায়াম। সাঁতার কাটার মাধ্যমে অস্থি ও মাংসপেশি অনেক উন্নত করে ব্লাড প্রেসার ও ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। হার্ট ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা দূর করে দেয়।
সাইকেল চালানোঃ নিয়মিত সাইকেল চালানোর মাধ্যমে হার্টের ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা কমে। প্রতিদিন সাইকেল চালানোর কারণে দুই পা ও হাত কর্মক্ষম থাকে যার কারণে হাত ও পায়ের অস্থি ও পেশি মজবুত হয়।
খেলাধুলঃ ফুটবল ক্রিকেট সহ অন্যান্য খেলার মাধ্যমে খুব ভালো ব্যায়াম হয়। এগুলো ব্যায়ামের মাধ্যমে হার্টের ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা দূর হয়। এছাড়া খেলাধুলার মাধ্যমে শরীরের সকল অঙ্গানু ভালো থাকে।
রক্ত চলাচল বৃদ্ধি হওয়ার কারণে উচ্চ রক্তচাপ থাকে না। এছাড়া রক্তের শর্করার পরিমাণও নিয়ন্ত্রণ থাকে। যার কারণে হার্ট ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
দড়ি লাফঃ দড়ি লাফের মাধ্যমে প্রচুর ক্যালরি ঝরানো যায়। যার কারণে শরীরের স্থুলতা কমে যায়। রক্ত চলাচল বৃদ্ধি হয়। হার্ট ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
শক্তি ব্যায়ামঃ এই ব্যায়ামের মাধ্যমে হাত ও পায়ের দ্বারা সমস্ত শরীরের ওজন ধরে রাখতে হয়। প্রথমে উপুর হয়ে শুয়ে পড়তে হবে। অতঃপর দুই হাত এবং দুই পা এর উপর ভর করে সমস্ত শরীর মাটি থেকে জাগিয়ে রাখতে হবে। এভাবে তিন থেকে চারবার করতে হবে।
এই ব্যায়াম করার মাধ্যমে যাদের শরীরের স্থুলতা আছে স্থুলতা কমে যাবে। রক্ত চলাচল বৃদ্ধি হবে। রক্তের শর্করার মাত্রার ভারসাম রক্ষা হবে। সর্বোপরি হার্ট ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।
ইন্টারভ্যল ফিটনেসঃ এই ব্যায়াম করার মাধ্যমে কার্ডিও ভাস্কুলার অনেক শক্তিশালী হয়। এই ব্যায়াম শুরুতে ১ থেকে ২ মিনিট করে করতে হয়।আস্তে আস্তে সময় বাড়াতে হবে। এই ব্যায়ামের মাধ্যমে হার্ট ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা দূর হয়।
যোগব্যায়ামঃ যোগ ব্যায়াম সাধারণত রুমের ভিতরে অথবা ছাদে অথবা বাগানে বসে করা যায়। যোগব্যায়ামের মাধ্যমে মানসিক চাপ কমে যায়। মানসিক দুশ্চিন্তা কমে যায়। যার কারণে হার্ট ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা দূর হয়।
আজকের বিষয় হার্ট ব্লক থেকে বাঁচার উপায়। আমরা নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম পালন ও ব্যায়ামের মাধ্যমে হার্টের ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা দূর করতে পারি।
হার্টের ব্লক দূর করার খাবার
কিছু খাবার আছে যেগুলো খাবার খেলে হার্টের ব্লক দূর করা সম্ভব হয়। এগুলো খাবার নিয়মিত খাওয়ার দরকার। খাবারগুলো হল নিম্নরূপ।
লাউ খাওয়াঃ লাউ অনেক উন্নত মানের খাবার যে খাবার রাসূলুল্লাহ (সাঃ) পছন্দ করতেন। নিয়মিত লাউ খেলে শরীরের স্থুলতা কমে। লাউ সিদ্ধ করে ধনেগুড়া হলুদ ও ধনেপাতা মিশিয়ে সপ্তাহে দুইদিন খেলে হার্ট ভালো থাকে ও হার্টের ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা দূর হয়।
দুধ আমলকি খাওয়াঃ প্রতিদিন দুধের সঙ্গে আমলকি মিশ্রিত করে খেলে হার্ট ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
রসুন খাওয়াঃ নিয়মিত রসুন খেলে শরীরের ওজন কমে। এছাড়া উচ্চ রক্তচাপ কমাতে রসুন জাদুর মত ভূমিকা রাখে। প্রতিদিন সকালে এক থেকে দুই কোয়া রসুন খেলে রসুনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হার্ট ভালো রাখে। হার্ট ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা দূর হয়।
লেবু পানিঃ প্রতিদিন সকালে লেবু পানি অথবা কুসুম কুসুম গরম পানিতে লেবু মিশ্রিত করে খেলে শরীরের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল কমে যায় ও ওজন কমে যায়। এছাড়া লেবুতে উপস্থিত এন্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে ও হার্ট ভালো রাখে। যার কারণে হার্ট ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা কমে।
শাকসবজিঃ বেশি পরিমাণ শাকসবজি খাবেন। এই ক্ষেত্রে ভাত অথবা রুটি খাওয়ার পরিমাণ অর্ধেকে নামিয়ে আনুন। বাকি খাবারটুকু শাকসবজি খান। ভাত রুটি খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে অতিরিক্ত শাকসবজি খাওয়ার কারণে শরীরের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি হয় রক্তে শর্করা পরিমাণ কমে যায় যার কারণে হার্ট ভালো থাকে।
বেরি জাতীয় ফলঃ বেরিয়ে জাতীয় ফল বেশি খাবেন। এ ফলের মধ্যে আছে স্ট্রবেরি ব্ল্যাকবেরি ব্লবেরি এর মত খাবার। এগুলো ফল অত্যন্ত আন্টি অক্সিডেন্ট জাতীয় খাবার। এগুলো ফল খাওয়ার কারণে হার্টের প্রদাহ দূর হয় এবং হার্ট ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
মাছের তেলঃ মাছের তেল অত্যন্ত উন্নত ধরনের ওমেগা৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছের তেল হলে ওমেগা৩ ফ্যাটি এসিডের পরিমাণ আরো বেশি বৃদ্ধি হয়। নিয়মিত মাছের তেল খাওয়ার কারণে শরীরের ওজন কমে। রক্ত চলাচল বৃদ্ধি হয় এবং উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভালো খাবার। মাছের তেল খেলে রক্তের শর্করা পরিমাণ কমে যায়। এছাড়া ওমেগা৩ ফ্যাটি এসিড শরীরের খারাপ চর্বি গুলো নষ্ট করে দেয়। যার কারণে হার্ট ভালো থাকে ও হার্টের ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
আজকের বিষয় হার্ট ব্লক থেকে বাঁচার উপায়। আমরা যদি প্রকৃতপক্ষে ভালো খাবার খাই এবং তার সঙ্গে নিয়মিত ব্যায়াম করি তাহলে সবসময় হার্ট ভালো থাকবে। উক্ত উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকবে না। যার কারণে হাট ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।
হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার
কিছু খাবার আছে যেগুলো খাবার খেলে হার্টের অনেক ক্ষতি হয়। আস্তে আস্তে হার্ট অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উক্ত খাবারগুলো পরিহার করা আমাদের জন্য প্রয়োজন। খাবারগুলো হল নিম্নরুপ।
শর্করা জাতীয় খাবারঃ সাধারণত শর্করা জাতীয় খাবার খাওয়ার মাধ্যমে শরীরের শক্তি উৎপাদন হয়। কিন্তু বেশি পরিমাণ শর্করা জাতীয় খাবার খেলে উচ্চ রক্তচাপ রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
যার কারণে শর্করা জাতীয় খাবার কমিয়ে দিয়ে শাকসবজি জাতীয় খাবার বৃদ্ধি করা দরকার। বেশি পরিমাণ শর্করা জাতীয় খাবার খেলে হার্ট ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
চিনি জাতীয় খাবার বাদ দেওয়াঃ চিনি ও চিনি জাতীয় খাবার হার্টের জন্য অত্যাধিক ক্ষতিকর। চিনি জাতীয় খাবার খেলে রক্তের শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায় রক্তনালীতে চর্বি জমে। যার কারণে উচ্চ রক্তচাপ জাতীয় সমস্যা হয়। হার্টের সমস্যা ও হার্ট ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।
রেডমিটঃ বাঙালিরা রেডমি কে অনেক পছন্দ করে। কিন্তু রেডমিটে শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পায়। একপর্যায়ে রক্তনালিতে চর্বি তৈরি হয়। যার কারণে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা হয়। আর হার্টের সমস্যা শুরু হয় এবং হার্ট ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই রেডমিটের পরিমাণ একটু কমানো প্রয়োজন।
কোলড্রিংসঃ কোল্ড ড্রিংকস খাওয়ার মাধ্যমে রক্তের শর্করা বেড়ে যায় এবং হার্টের অনেক সমস্যা হয়। কোল্ড্রিংস বাদ দেওয়া প্রয়োজন।
ফাস্টফুডঃ ফাস্টফুড খাবার হলো শরীরের জন্য অনেক খারাপ। নিয়মিত ফাস্টফুড খাওয়ার কারণে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায় এবং উচ্চ রক্তচাপের মত সমস্যা হয়। হার্ট ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এইজন্য আমাদেরকে ফাস্টফুড বর্জন করা প্রয়োজন।
ধূমপানঃ ধূমপানের মাধ্যমে ফুসফুস নষ্ট হয়ে যায়। পাশাপাশি ফুসফুসের সঙ্গে হার্টে আক্রান্ত হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরিপে পাওয়া যায় ধূমপানের কারণে গোটা বিশ্বে এক বৎসরে 19 লক্ষ লোক হৃদরোগে মারা যায়। এছাড়া ধূমপানের জন্য একবছরে বাংলাদেশে ২ লক্ষ ৭৭ হাজার লোক হৃদরোগে মারা যায়। এই জন্য ধূমপান বাদ দেওয়া প্রয়োজন।
মদ্যপানঃ মদ্যপান করার মাধ্যমে শরীরের ভারসাম্যতা নষ্ট হয়। এছাড়া মদ্যপানের কারণে মানসিক চাপ অনেক বেশি হয়। মানসিক চাপ বেশি হওয়ার কারণে হার্ট ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই মদ্যপান বাদ দেওয়া প্রয়োজন।
প্রিয় পাঠকগণ আজকের বিষয় হার্ট ব্লক থেকে বাঁচার উপায়। আমরা যেগুলো সমস্যা দেখলাম এগুলো খাবার বর্জন করে হার্ট কে ভালো রাখি।
হার্ট ব্লক এর লক্ষণ
হঠাৎ করে আমাদের শরীরে কিছু লক্ষণ বোঝা যাবে। লক্ষণের কারণে হার্ট ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা বোঝা যায়। হার্ট ব্লক হওয়ার লক্ষণগুলো নিম্নরুপ।
*বুকে ব্যথা অস্বস্তি এবং নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া।
*শরীর অত্যাধিক ক্লান্তি বোধ ও অনিয়মিত হৃদস্পন্দন।
*মাথা ঘোরা ও অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।
*শরীর ঘেমে যাওয়া এবং শরীর ঠান্ডা হয়।
*বমি বমি ভাব হওয়া।
*ঘাড় চোয়াল পিঠে ব্যথা ও অস্বস্তিকর।
*অস্বস্তি ও উদ্বেগের কারণে ঘুম না হওয়া। এগুলো কারণ হলে খুব তাড়াতাড়ি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
হার্টের জন্য উপকারী ফল
নিয়মিত ফল খাওয়ার মাধ্যমে হার্ট ভালো থাকে। হার্ট ভালো রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ফলের তালিকা দেওয়া হল।
*আপেল খাওয়া।
*পেয়ারা খাওয়া।
*কলা খাওয়া।
*কমলা লেবু খাওয়া।
*নাশপাতি খাওয়া।
*বেরি জাতীয় ফল খাওয়া যেমন স্ট্রবেরি ব্ল্যাকবেরি ব্লুবেরি ইত্যাদি ফল খাওয়া।
*অ্যাভোকাডো খাওয়া।
*টমেটো খাওয়া।
*পেঁপে খাওয়া।
*আঙ্গুর খাওয়া।
*ওটমিল খাওয়া।
*জাম খাওয়া।
*তরমুজ খাওয়া।
*শসা খাওয়া।
এগুলো ফল আমরা নিয়মিত খেলে হার্ট অনেক শক্তিশালী হবে। যার কারনে হার্টের কোন সমস্যা হবে না এবং হার্ট ব্লক হওয়ার সম্ভাবনাও থাকবে না।
লেখক এর মন্তব্য
সুপ্রিয় পাঠকগণ আজকের আর্টিকেলটি হার্ট ব্লক থেকে বাঁচার উপায়। এছাড়াও আরও থাকছে হার্ট ব্লক দূর করার জন্য ব্যায়ামগুলো। হার্ট ভালো রাখার জন্য প্রয়োজনীয় খাবার ও হার্টের ক্ষতিকর খাবারগুলো আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়া আরো আলোচনা করা হয়েছে কি কি ফল খাওয়ার মাধ্যমে হার্ট ভালো থাকে।
হার্টের সমস্যা যেহেতু মারাত্মক। হার্টের সমস্যা থেকে ষ্ট্রোক জনিত সমস্যা হয়। তাই হার্ট ভালো রাখার ব্যাপারে এবং হার্ট সম্পর্কে জানার জন্য এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভালো করে পড়বেন। আশা করি উপকৃত হবেন। ভালো লাগলে বন্ধুদের মাঝে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url