আমাশয়ে বেলের উপকারিতা সম্পর্কে জানুন

প্রিয় পাঠক আজকের বিষয় আমাশয়ে বেলের উপকারিতা সম্পর্কে জানুন। এছাড়া আরো থাকছে পাকাবেল খাওয়ার নিয়ম। পাকা বেল খাওয়ার উপকারিতা। বেল হল অত্যাধিক পুষ্টি সমৃদ্ধ ফল। যে ফল কাঁচা অথবা পাকা উভয় অবস্থায় খাওয়া যায়। যাদের অত্যাধিক কোষ্ট কাঠিন্যতা আছে বেল খাওয়ার মাধ্যমে নিরাময় হয়।
এছাড়া গরমের সময় বেলের শরবত আমাদের সবারই প্রিয়। পাকা বেল খেতেও আমার অনেক পছন্দ করি। বেল সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য আজকের কনটেন্টে বর্ণনা করা হবে।

ভূমিকা

বেল এর উৎপত্তি বাংলাদেশ ও ভারতে। এছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশেই বেল উৎপন্ন হয়। বেল সাবান ফ্যাক্টরিতে পর্যাপ্ত ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও বেল অনেক পুষ্টি সমৃদ্ধ ফল। পাকা বেল খেতেও অনেক মজা। বেল কাঁচা অথবা পাকা অবস্থায় খাওয়া যায়। পাকা বেলের রসের সঙ্গে চিনি মিশিয়ে খেলে রক্ত পরিশুদ্ধ করে।
এছাড়াও আমাশয়ে বেলের উপকারিতা সম্পর্কে জানুন। বেল সাধারণত ভিটামিন এ ভিটামিন সি ক্যালসিয়াম ফসফরাস ও পটাশিয়ামের মত পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এইজন্য বেল সম্পর্কে আমাদের যাবতীয় তথ্য জানা প্রয়োজন।

পাকা বেল খাওয়ার অপকারিতা

আমাশয়ে বেলের উপকারিতা সম্পর্কে জানুন। এছাড়াও বেলে অনেক পুষ্টি উপাদান আছে। কিন্তু পাশাপাশি বেলের অনেক ক্ষতিকর দিক রয়েছে। ক্ষতিকর দিক হলো। অতিরিক্ত বেল খেলে স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর। অতিরিক্ত পাকা বেল খেলে অন্ত্রে ছিদ্র হতে পারে। তবে কাঁচা বেল খেলে তা হয় না। অতিরিক্ত পাকা বেল খাওয়ার কারণে পেটে দুর্গন্ধ হতে পারে।

বেল অত্যাধিক মিষ্টি জাতীয় ফল। এইজন্য যারা ডাইবেটিস রোগী বেশি বেল খেলে রক্তের শর্করা পরিমাণ বেড়ে যায়। যার কারনে ডায়াবেটিস রোগীদের অত্যাধিক বেল খাওয়া ঠিক না। অতিরিক্ত পরিমাণ বেল খেলে যৌন শক্তি কমে যেতে পারে।

যে সকল লোকদের এলার্জি আছে তাদের জন্য বেশি বেল খাওয়া ঠিক না। বেশি বেল খেলে এলার্জি সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। চুলকানি আমবাত শরীরের ত্বক ফুলা শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা ইত্যাদি হতে পারে।পাকা বেল আষ জাতীয় খাবার তাই ইহা হজমের সহায়তা করে।

তবে যাদের গ্যাস্ট্রিক আলচার ও পাকস্থলীতে প্রদাহ আছে তাদের বেশি বেল খাওয়া উচিত নয়। বেল খেলে এগুলো সমস্যা বেড়ে যাবে। গর্ভবতী অথবা যে সকল মায়েরা বুকের দুধ পান করান তাদের জন্য বেশি বেল খাওয়া ঠিক নয। তাদের বেল খেতে হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

আমাশয়ে বেলের উপকারিতা সম্পর্কে জানুন

আমাশয়ে বেলের উপকারিতা সম্পর্কে জানুন। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় বেলের পাতা দিয়ে তৈরি ওষুধের নাম ঈগল ফোলিয়া। ঈগল ফোলিয়া ঔষধ অন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা ও আমাশয় চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। কচি বেল ছোট ছোট করে কেটে সন্ধ্যায় পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে।

সারারাত ভিজানোর পরে উক্ত পানির সকালে খেয়ে নিতে হবে। এভাবে কয়েকদিন খেলে আমাশয় ভালো হয়ে যায়। তাই আসুন আমাশয় চিকিৎসায় এ পদ্ধতি অবলম্বন করি।

বেল খাওয়ার উপকারিতা

প্রিয় পাঠক বেল অত্যন্ত পুষ্টি সমৃদ্ধ ফল। শারীরিক বিভিন্ন উপকারে বেল ব্যবহৃত হয়।আমাশয়ে বেলের উপকারিতা সম্পর্কে জানুন। বেলের উপকারিতা বর্ণনা করা হলো।

ডায়রিয়া নিরাময়ে বেলঃ ডায়রিয়া নিরাময়ে কাঁচা বেলের জুড়ি নেই। কাঁচা বেল ছোট ছোট করে কেটে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। শুকানো বেল ভালো করে গুড়া করে নিতে হবে। এক গ্লাস কুসুম কুসুম গরম পানিতে এক চামচ বেলের গুড়া কিছু লাল চিনি মিশ্রিত করে দিনে দুইবার খান। এভাবে এক সপ্তাহ খেলে ডায়রিয়া দূর হয়ে যাবে।

ডায়াবেটিস নিরাময়ঃ পাকা বেলে মিথানল নামে উপাদান রয়েছে। মিথানল ব্লাড সুগার কমাতে কাজ করে। এইজন্য পাকা বেল ভেঙ্গে খেলে ডায়াবেটিস নিরাময় হয়।

পেপটিক আলসার নিরাময়ঃ পাকা বেল খেলে পেপটিক আলসার নিরাময় হয়। বেলে পর্যাপ্ত পরিমাণ ফাইবার রয়েছে। পাকা বেল এর শাঁস অথবা বেলের শরবত সপ্তাহে তিন দিন খেলে পেপটিক আলসার নিরাময় হয়।

কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়েঃ নিয়মিত পাকা বেল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় হয়। বেলে পর্যাপ্ত পরিমাণ আস জাতীয় খাবার থাকায় নিয়মিত তিন মাস বেলের শাঁস অথবা বেলের শরবত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য পুরোপুরি নিরাময় হয়। পাকস্থলীর স্বাস্থ্য ভালো থাকে।

যক্ষা নিরাময়েঃ নিয়মিত পাকা বেল খেলে যক্ষা নিরাময় হয়।পাকা বেলে এন্টিমাইক্রোবায়াল উপাদান আছে। এই উপাদানের কারণে ব্রাউন সুগার এর সাথে মধু মিশিয়ে বেলের শরবত রাতে শোয়ার সময় খান।  টানা এক মাস খেলে যক্ষা ভালো হয়ে যায়।

ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কমায়ঃ বেলে এন্টি প্রলেফিরেটিভ ও এন্টি মুটাজেন উপাদান থাকায় বেল খাওয়ার কারণে শরীরের টিউমার হতে দেয় না। এছাড়া বেলে হাই এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় কোষে ক্যান্সারের জীবাণু ধ্বংস করে।

ম্যালেরিয়া নিরাময়ীঃ এক চামচ বেলের গুড়া কিছু পরিমাণ তুলসীর পাতার রস ও মধু মিশ্রিত করে দিনে দুইবার খেয়ে নিন। এক সপ্তাহ খেলে ম্যালেরিয়া নিরাময় হবে।

বিশুদ্ধ রক্ত তৈরিতেঃ পাকা বেলের সঙ্গে চিনি মিশিয়ে খেলে রক্ত বিশুদ্ধ হয়। কিডনি ও লিভারের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। শরীরের ত্বক টানটান করে।‌‌

লিভারে যত্নে বেলঃ বেলে পর্যাপ্ত বিটা ক্যারোটিন রয়েছে। বেল খেলে বেলে উপস্থিত বিটা ক্যারোটিন লিভার কে ভালো রাখে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ নিয়মিত বেলের শরবত খেলে বেলে পর্যাপ্ত পটাশিয়াম থাকায় রক্তনালিকা গুলো প্রশস্ত রাখে। এজন্য রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।

ত্বক ভালো রাখেঃ নিয়মিত বেলের শরবত খেলে ত্বক সূর্যের ক্ষতিকর আলট্রা ভায়োলেট রশ্মি থেকে রক্ষা করে। ত্বকের উজ্জ্বলতা ঠিক রাখে।

হাড় ও পেশির স্বাস্থ্য ভালো রাখেঃ নিয়মিত বেল খেলে বেলে উপস্থিত ক্যালসিয়াম হাড় ও পেশির স্বাস্থ্য ভালো রাখে। শরীরের ব্যথা কমায়।

কিডনি সুস্থ রাখেঃ নিয়মিত বেল খেলে কিডনি সুস্থ থাকে। কিডনির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তাই আসুন আমাদের খাবার তালিকায় নিয়মিত বেল রাখি।

খালি পেটে বেল খাওয়ার উপকারিতা

বেল একটি পুষ্টি সমৃদ্ধ ফল।আমাশয়ে বেলের উপকারিতা সম্পর্কে জানুন। আয়ুর্বেদী মতে পাকা বেল শরীরের জন্য অনেক ওষুধিগুণ রয়েছে। সকালে খালি পেটে বেল খাওয়ার উপকারিতা জেনে নিই। নিয়মিত বেল খেলে বেলের ল্যাকোটিভ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। ত্বক সতেজ করে ও ত্বকের ব্রণ দূর করে। বেলের সাথে ফাইবার থাকার জন্য পাকস্থলীর হজম প্রক্রিয়া বৃদ্ধি করে।
গ্যাস্ট্রিক ও আলসার নিরাময় করে। বেলে মিথানোল নামক উপাদান থাকায় ডায়াবেটিস নিরাময় করে। এছাড়াও বেলের পরিত্যক্ত ক্যালসিয়াম আছে। যার কারণে হাড় ও পেশির স্বাস্থ্য ভালো করে। শরীর ক্লান্ত থাকলে ঠান্ডা বেলের শরবত খাওয়ার কারণে শরীরের এনার্জি ফিরে আসে।

বেলে পর্যাপ্ত পটাশিয়াম আছে। যার কারণে খালি পেটে সকালে বেলের শাঁস অথবা বেলের শরবত খেলে শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখে। পটাশিয়াম এর কারণে রক্তনালিকা গুলো প্রশস্ত করে। নিয়মিত খালি পেটে সকালে বেল খেলে ক্যান্সারের জীবাণু ধ্বংস করে।

এছাড়াও খালি পেটে বেলের শ্বাস অথবা বেলের শরবত খেলে শরীরের ইউমিনিটি ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তাই আসুন আমরা যে অবস্থায় থাকি না কেন শরীর সুস্থ থাকার জন্য বেলের শরবত খেতে পারি।

বেল খাওয়ার সঠিক সময়

বেল খাওয়ার সঠিক সময় হচ্ছে দুপুরের খাবারের পর থেকে রাতের খাবারের পূর্ব মুহূর্ত। এছাড়াও সকালের নাস্তার পর থেকে দুপুরের খাবারের পুর্ব পর্যন্ত বেল খাওয়া যায়। পর্যাপ্ত তাপমাত্রায় বেলের ঠান্ডা শরবত খেলে শরীরের প্রচুর এনার্জি ফিরে আসে। পরিশ্রমের কাজ সেরে বিশ্রামের সময় বেলের ঠান্ডা শরবত খেলে শরীরের কার্যক্ষমতা আরো বৃদ্ধি হয়।

তবে আপনি সকালের নাস্তা থেকে শুরু করে দুপুরের খাবারের আগ পর্যন্ত বেলের শরবত খেতে পারেন বা বেলের শাঁস খেতে পারেন। অপরপক্ষের দুপুরের খাবারের পর থেকে রাতের খাবারের পূর্ব পর্যন্ত বেলের শরবত অথবা বেলের শ্বাস খেতে পারেন।

পাকা বেল খাওয়ার নিয়ম

প্রিয় পাঠক বেল খাওয়ার অনেক নিয়ম আছে। কাঁচা বেল আগুনে পুড়িয়ে খেতে পারেন। পাকা বেল ভেঙ্গে শ্বাস খেতে পারেন। এছাড়া কাঁচা বেলের শরবত খেতে পারেন। কাঁচা বেলের শরবত করার নিয়ম কাঁচা বেল ফুটন্ত পানিতে ভালো করে সিদ্ধ করে নিবেন। কাঁচা বেল সিদ্ধ করে নিলে পাকা বেলের মত শ্বাস ও ফ্লেভার আসবে।
অতঃপর পানিতে কিছু পরিমাণ বেল এর শাঁস নিয়ে সঙ্গে ব্রাউন সুগার ও মধুর মিশ্রিত করবেন। অতঃপর শরবত বানিয়ে খেয়ে নিবেন। এছাড়া পাকা বেলের শ্বাস ব্রাউন সুগার ও মধু মিশিয়ে শরবত বানিয়ে খেতে পারেন। নিয়ম মেনে আমরা যদি নিয়মিত বেল খাই তাহলে বেল থেকে প্রচুর পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করতে পারবো।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক আমাশয়ে বেলের উপকারিতা সম্পর্কে জানুন। এছাড়াও বিলে অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে। বেলের উপকারিতা বেল খাওয়ার নিয়ম ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে আমাদের এই কন্টেন্ট শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভালো করে পড়ুন। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। ভালো লাগলে বন্ধুদের মাঝে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করবেন।




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url