নবজাতকের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায়

প্রিয় পাঠক সন্তানেরা যখন অসুস্থ হয় তখন পিতা-মাতারেদের অশান্তির শেষ থাকে না। আজকের কনটেন্ট নবজাতকের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায়। আপনারা হয়তো জানেন না নবজাতক অথবা শিশুসন্তানদের পেটের সমস্যা হলে কি করতে হবে।
আজকের এই ওয়েবসাইট থেকে নবজাতকের পেটে সমস্যা থাকলে ঘরোয়াভাবেই চিকিৎসা করা যায় এগুলো জানবেন। শিশুদের পেটে গ্যাস হলে গ্যাস দূর করার উপায় গুলো জানবেন। এই ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।

ভূমিকা

শিশুদেরকে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়াতে পারলে অনেকটাই সুস্থ অবস্থায় পাওয়া যায়। সাধারণত বড় মানুষের চাইতে শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। নবজাতকের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায় জেনে সেই মোতাবেক শিশুদের যত্ন করা দরকার। একটু খাওয়ার সমস্যা হলেই শিশুদের পেটে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়।

আরও পড়ুনঃ  ডায়াবেটিস চিরতরে নিরাময় এর প্রাকৃতিক উপায়

শিশুরা তো সব বলতে পারেনা। এজন্যে পেট খারাপ অথবা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হলে শিশুরা কান্নাকাটি করে। সাধারণত মায়ের দুধের পাশাপাশি অন্য খাবার খেলেই গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। আমরা যদি নিয়মিত ঘরোয়াভাবে যত্ন করি তাহলে শিশুরা গ্যাস হতে মুক্তি পাবে।

নবজাতকের পেট ব্যাথা হলে করণীয়

নবজাতক শিশুর পেটের গ্যাসের সমস্যা একটু বেশি হয়। সাধারণত মায়ের দুধ খাওয়ার সময় দুধের সাথে কিছু বাতাস ঢুকে পড়ে যার কারণে পেট ব্যাথা করতে পারে। এ ছাড়া নবজাতক বাচ্চাদের হরমোন গত কিছু সমস্যা হয় যার কারণে পেট ব্যথা করতে পারে।

তবে যেভাবেই হোক না কেন নিয়মিতভাবে শিশুকে সেবা করতে পারলে গ্যাস ও পেট ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। শিশুদের গ্যাস হওয়া নিয়ে চিন্তার কোন কারণ নাই। এইটা সাময়িক সমস্যা। কারণ শিশুর বয়স তিন চার মাস হয়ে গেলে এই সমস্যা এমনিতেই দূর হয়ে যাবে। শিশুকে সঠিক পদ্ধতিতে দুধ খাওয়াতে হবে।

সাধারণত শিশুদেরকে দুধ খাওয়ানোর সময় মাথায় একটু উঁচুতে রাখতে হবে। সাধারণত শিশুকে শুয়ে দুধ না খাওনাই ভালো। শুয়ে দুধ খাওয়ালে শিশু পেটের মধ্যে বাতাস যায়। শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করতে হবে।

বাজারের ফর্মুলা মিল্ক থেকে বিরত থাকতে হবে। বাজারের তৈরি কিছু দুধ এর মধ্যে অনেক কেমিক্যাল থাকে যা গ্যাসের সৃষ্টি করে। ফিডারে দুধ না খাওয়ানই ভালো। দুধ খাওয়ার সময় ফিডার দিয়ে পেটের মধ্যে বাতাস ঢুকে যায়। দুধ খাওয়ানোর পরে শিশুকে কাঁধে নিয়ে পাঁচ মিনিট পিঠ একটু চাপড়ে দিলে শিশুর ঢেকুর উঠে।

যার কারণে অনেকটাই গ্যাস দূর হয় ও পেট ব্যাথা ভালো হয়। শিশুর শরীর ও পিঠ মেসেজ করলেও শিশু অনেকটা আরাম বোধ করে। শিশুকে উপর করে শুয়ে দিতে পারেন অথবা আস্তে আস্তে পিঠে চাপ দিতে পারেন। পেট থেকে গ্যাস বাহির হয়ে যাবে। এছাড়া শিশুকে হালকা কুসুম কুসুম গরম পানিতে গা মুছে দিতে পারেন।

অথবা গোসল করিয়ে দিতে পারেন। এর থেকে গ্যাস বাহির হয়ে যাবে। সাধারণত নবজাতকের মাতা ভাজাপোড়া অতিরিক্ত শর্করা জাতীয় খাবার ও যেগুলো খাবার খেলে গ্যাস হয় সেগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। এভাবে শিশুর যত্ন করলেই আস্তে আস্তে শিশু গ্যাস থেকে মুক্তি পাবে ও পেট ব্যাথা ভালো হবে।

নবজাতকের পেটে গ্যাস হলে বোঝার উপায়

নবজাতকেরা দুধ খাওয়ার সময় যদি কান্নাকাটি করে তাহলে কান্নার সময় পেটে গ্যাস ঢুকে যায়। তাছাড়া বাড়ন্ত শিশুদের চিপস ভাজাপোড়া চকলেট এগুলো খাওয়ার ফলেও পেটে গ্যাস জমে। নবজাতকেরা যদি অস্থির হয় এবং খুব কান্নাকাটি করে তাহলে বুঝতে হবে যে পেটে গ্যাস হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ ননীবিহীন দুধ খাওয়ার উপকারিতার বিবরন

শিশুদের পেটে গ্যাস জমা হলে কিছু লক্ষণ দেখা যায়। খুব অস্থির লাগে পেট ফুলে যেতে পারে কান্না করে মাঝে মাঝে বায়ু বাহির হয়, তলপেট শক্ত হয়। এগুলো কারণ হলে বোঝা যাবে নবজাতকের পেটে গ্যাস হয়েছে। তাই সাধারণত শিশুদের কে একটু যত্ন সহকারে খাওয়াতে হবে।

২বছরের বাচ্চাদের পেটে গ্যাস হলে করণীয়

বাচ্চাদের পেটে গ্যাস হলে বাচ্চারা অস্থির হয়ে যায় পরিবারেরও অনেক কষ্ট হয়। আজকে আমাদের কনটেন্ট নবজাতকের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায়। বাচ্চাদের গ্যাস সমস্যা হলেই অনেক কান্নাকাটি করে। শিশুকে প্রথমে কুলে তুলে নিতে হবে। অথবা বাচ্চাকে এমনভাবে নিতে হবে যেন বাচ্চার থুতনি মায়ের কাধ বরাবর থাকে।

এ অবস্থায় বাচ্চাকে এক হাত দিয়ে সাপোর্ট দিবেন আর এক হাত দিয়ে পিঠে আস্তে আস্তে চাপ দিবেন। মনে হয় শিশুর পেটে গ্যাস আছে তাহলে শিশুকে চিত করে শুয়েদিবেন। হাত দিয়ে বাচ্চার পেট হালকা করে চাপ দিবেন আর বাচ্চার দুই পা আস্তে আস্তে নাড়াবেন।

বাচ্চার পেট থেকে গ্যাস বের হয়ে যাবে।অনেক সময় বাচ্চার ঢেকুর তোলার সময় কিছু দুধ বাহির হয়ে আসতে পারে। এতে ভয়ের কোন কারণ নাই। এরপরেও সমস্যা সমাধান না হলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন।

নবজাতকের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায়

নবজাতকের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলি বর্ণনা করা হলো। শিশুদেরকে মায়ের দুধ খাওয়ানোর সময় সঠিক পদ্ধতিতে দুধ খাওয়াতে হবে। দুধ খাওয়ানোর সময় শিশুর মাথা একটু উঁচুতে রেখে দুধ খাওয়াতে হবে। শুয়ে থেকে দুধ খাওয়ানো যাবে না। শুয়ে থেকে দুধ খাওয়াতে লাগলে পেটে একটু বেশি বাতাস ঢুকে যায়।

শিশুদেরকে সবসময় মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে। বাজার থেকে কিনা ফর্মুলা দুধ খাওয়ানো যাবে না। ফর্মুলা দুধে কিছু উপাদান থাকে যার দ্বারা নবজাতকের গ্যাসের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। দুধ খাওয়ানোর পরে শিশুকে সোজা করে কাঁধে নিয়ে পাঁচ মিনিট আস্তে আস্তে পিঠ চাপড়ে দিতে হবে। এভাবে বাচ্চাকে ঢেকুর তুলতে হবে।

এভাবে করলে বাচ্চা অনেকটাই আরাম পায়। ফিডারে দুধ না খাওয়াই ভালো।ফিডারে দুধ খাওয়ালে ফিডারের সঙ্গে বাতাস ঢুকে। শিশুর শরীর হালকা কুসুম কুসুম গরম পানি দিয়ে মুছে দিলে শিশু অনেক উপকার পায়। শিশুর পেট আস্তে আস্তে মেসেজ করে দিলেও শিশু আরাম পায়।

শিশুকে উপর করে শুয়ে রেখে দুই হাতের চার আঙ্গুল দিয়ে আস্তে আস্তে পিঠে মালিশ করলে শিশুর পেটের গ্যাস বের হয়ে যায়। পেটফোলা দূর হয়ে যায়। সাধারণত মায়ের যে সকল খাদ্যে গ্যাস হতে হবে সেগুলো না খাওয়া। বাচ্চাদের পেট ফাঁপা একটা স্বাভাবিক সমস্যা। উপরের টিপস গুলো মানলে বাচ্চার পেট ফাপা ভালো হয়ে যাবে।

বাচ্চাদের পেট ব্যাথা কমানোর ঘরোয়া উপায়

অনেক সময় বাচ্চাদের পেট ব্যথা করে। বাচ্চাদের পেট ব্যথা করলে বাচ্চা অস্থির হয়ে কান্নাকাটি করে। সাধারণত বাচ্চারা সবকিছু খুলে বলতে পারেনা। বাচ্চাদের আচরণ দেখে এগুলো বুঝতে হবে। বাচ্চাদের পেট ব্যথার অনেকগুলো কারণ হতে পারে। যেমন অতিরিক্ত খাবার খাওয়া এসিডিটি হওয়া বদহজম ইত্যাদির কারণে পেট ব্যথা হতে পারে।

আরও পড়ুনঃ  সেক্সে রসুনের উপকারিতা কি জানুন

পেট ব্যাথা হলেই সরাসরি বাচ্চাকে ওষুধ খাওয়াবেন না। বরং কয়েকটি ঘরোয়া টোটকা নিয়ম পালন করুন। পেট ব্যথা করলে বাচ্চাকে পানি পান করান। আস্তে আস্তে পানি পান করান। পেটে গ্যাস ও বদ হজম কমে যাবে। পানি পানের মাধ্যমে ঠিকমতো কাজ করবে। আস্তে আস্তে পেট ব্যথা কমে যাবে।

পানি পানে উন্নতি না হলে বাচ্চাকে দু চামচ অ্যালোভেরা জুস খাওয়াবেন। দেখবেন আস্তে আস্তে পেট ব্যথা কমে গেছে সন্তান সুস্থ হয়ে উঠবে।এছাড়া সামান্য এক চামচ তুলসির পাতার রস এক চামচ মধু দিয়ে বাচ্চাকে খাওয়ায়ে দিবেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যে পেট ব্যথা নিরাময় হয়ে যাবে। আদা এন্টি অক্সিডেন্ট জাতীয় খাবার।

আদাতে অ্যান্টিইনফ্লমেটরি উপাদান আছে। তাই শিশুদের পেট ব্যথা করলে দু টুকরো আদা খেতে দিন। পেট ব্যথা ভালো হয়ে যাবে। বাচ্চাকে বাইরের খাবার খাওয়াবেন না। পানি পান করাবেন। এলার্জি জাতীয় খাবার খাবে না। বাচ্চাকে নিয়ে ব্যায়াম করাবেন বাচ্চার আর কোন সমস্যা থাকবে না।    নবজাতকের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায়

লেখক এর মন্তব্য

প্রিয় পাঠক নবজাতকের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায় বর্ণনা করা হলো। এছাড়াও বাচ্চাদের পেটের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়গুলোও বর্ণনা করা হয়েছে। বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একটু কম। বাচ্চাদের মাঝে মাঝে কোন সমস্যা হতে পারে। বাচ্চাদের সমস্যা সম্পর্কে সাম্যক ধারণা থাকলে।

বাচ্চাদের সমস্যা নিজেদের সমস্যা তৈরি করবে না। বাচ্চাদেরকে সবসময় ওষুধের উপর না রাখাই ভালো। সামান্য কিছু সমস্যা হলে ঘরোয়া চিকিৎসা করলে সেটা ভালো হয়ে যায়। তাই আসুন সোনামণিদের জন্য ঘরোয়া চিকিৎসার মাধ্যমে তাদের জীবনকে সুস্থ করে তুলি। কোন কিছু জানার থাকলে কমেন্টে জানাবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url