জাফরান হেয়ার গ্রোথ থেরাপি ব্যবহারের নিয়ম

প্রিয় পাঠক আজকের বিষয় জাফরান হেয়ার গ্রোথ থেরাপি ব্যবহারের নিয়ম। এছাড়া আরও থাকছে জাফরান তেলের উপকারিতা জাফরান তেল চেনার উপায় সহ জাফরান তেল সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য।  জাফরান তেল সংক্রান্ত তথ্য পেতে আমাদের কনটেন্ট শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুুন।
জাফরান পৃথিবীতে সবচাইতে মূল্যবান মসলা ও খাদ্য। জাফরান দ্বারা প্রচুর উপকার হয় যেটা বলে শেষ করা যাবে না। প্রিয় পাঠক আসুন জাফরানের তেল সম্পর্কে জেনে নিই।

ভূমিকা

জাফরান অতি উচ্চ মূল্যবান মসলা জাতীয় উদ্ভিদ। সাধারণত জাফরান ফুলের গর্ভ মন্ড ব্যবহার করা হয়। একে জাফরান আস বলা হয়। এর আদি উৎপত্তিস্থল ইরান। সেখান থেকে মধ্যপ্রাচ্য বিস্তার লাভ করেছে। জাফরান সাধারণত ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হয়। উন্নত রাজকীয় মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। 
এছাড়াও উন্নত রঙ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। জাফরান দ্বারা তেল তৈরি করলে সে তেল চুলের জন্য অনেক উপকারী। সাধারণত চুল পড়া কমানো ও নতুন চুল গজানোর কাজে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও জাফরান তেল ব্যবহারের ফলে চুল স্বাস্থ্যজ্জল ও ঝরঝরে হয়। আসুন জেনে নিই জাফরান হেয়ার গ্রোথ থেরাপি ব্যবহারের নিয়ম।

জাফরান হেয়ার গ্রোথ থেরাপি ব্যবহারে কত দিনে চুল লম্বা হয়

সাধারণত জাফরান হেয়ার থেরাপি জাফরানের নির্জাস সহ আরো ১০-১২ টি আয়ুর্বেদিও উপাদান দ্বারা তৈরি। ইহা অনেক উন্নতমানের তেল। এই তেল মাথায় দিলে চুলের গোড়া শক্ত করে। চুল পড়া কমায়। চুলকে স্বাস্থ্যজ্জল ও ঝরঝরে করে। পর্যাপ্ত চুলে পুষ্টি পায়।

 প্রিয় পাঠক আপনারা যদি এই তেল ব্যবহার করেন খুব তাড়াতাড়ি এর উপকার পেয়ে যাবেন। জাফরান হেয়ার গ্রোথ থেরাপি ৩ দিন ব্যবহার করলে চুল পড়া একদম কমে যাবে। একমাস ব্যবহার করলে চুল পড়া কমে যাবে। চুল তিন ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হবে। এছাড়া চুলে পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদান পাবে। 

জাফরান হেয়ার গ্রোথ থেরাপি যদি তিন মাস ব্যবহার করেন তাহলে আপনার চুল গজাবে। চুল ঘন হয়ে যাবে। রুক্ষতা থাকবে না। চুল পর্যাপ্ত পুষ্টি সমৃদ্ধ হবে। তবে সব সময় তেল ব্যবহার করবেন। চুলে তেল ব্যবহার করলে চুল পুষ্টি সমৃদ্ধ হয় এবং চুলের স্থায়িত্ব বেড়ে যায়।

জেনে নিন জাফরান তেলের অপকারিতা

জাফরান তেল অনেক ঠান্ডা। তাই যারা ঠান্ডা সহ্য করতে পারেন না রাতে ব্যবহার করলে মাথা ব্যাথা এবং ঠাণ্ডা সংক্রান্ত অনেক সমস্যা হয়। তাদের জন্য জাফরান তেল ব্যবহার না করাই ভালো। যাদের অ্যালার্জি আছে তাদের জন্য ব্যবহার না করাই ভালো। জাফরান তেলে অনেক ঘ্রান রয়েছে তাই যারা ঘ্রাণ সহ্য করতে পারেন না তাদের না ব্যবহার করাই ভালো।

জাফরান হেয়ার গ্রোথ থেরাপি ব্যবহারের নিয়ম

জাফরান হেয়ার গ্রোথ থেরাপি ব্যবহারের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহার করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। যাদের চুল রুক্ষ যাদের চুলের আগা ফেটে যায় অথবা চুল উঠে যায় তাদের জন্য জাফরান হেয়ার গ্রোথ থেরাপি অনেক প্রয়োজন। নিয়ম মেনে জাফরান হেয়ার গ্রোথ থেরাপি ব্যবহার করলে চুলের সকল সমস্যা দূর হওয়ার পরেও চুল লম্বা হয়। 
দুই হাতের তালুতে জাফরান তেল নিয়ে চুলের গোড়ায় ভালো করে মেসেজ করুন। নিয়মিত এভাবে মেসেজ করলে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে চুল ওঠা বন্ধ হবে। জাফরান হেয়ার গ্রোথ থেরাপির সঙ্গে কিছু অলিভ অয়েল মিশ্রিত করেও মাথার ত্বকে দিতে পারেন। তবে যাদের চুল উঠে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দিনে দুইবার জাফরান হেয়ার গ্রোথ থেরাপি দিতে পারেন। 

সকালএবং সন্ধ্যা ব্যবহার করতে পারেন। এই ক্ষেত্রে দুই হাতের তালুতে সামান্য করে তেল নিয়ে মাথার ত্বকে পর্যাপ্ত মেসেজ করতে হবে। আস্তে আস্তে মেসেজ করে তেল দিতে হবে। ব্যবহার করার পরে রাতে শুয়ে পড়বেন। পরের দিন সকালে উঠে মাথা পানিতে ধুযবেন। শুধু পানি দিয়ে ধুতে পারেন অথবা শ্যাম্পু করতে পারেন। 

পুনরায় সকালে আবার ভালো করে মেসেজ করে তেল ব্যবহার করবেন। এভাবে পাঁচ থেকে সাত দিন ব্যবহার করলে চুল উঠা বন্ধ হয়ে যাবে। এক মাস করলে নতুন করে চুল গজানো শুরু করবে। তাই আসুন জাফরান হেয়ার গ্রোথ থেরাপি ব্যবহার করে মাথার চুল গুলোকে স্বাস্থ্যজ্জ্বল রাখি। চুল লম্বা এবং ফুরফুরে রাখি।

জাফরান হেয়ার অয়েল এর উপকারিতা

জাফরান তেলে বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা রয়েছে। জাফরান হেয়ার গ্রোথ থেরাপি ব্যবহারের নিয়ম আমাদের জানা দরকার। জাফরান হেয়ার অয়েল এর উপকারিতা গুলো বর্ণনা করা হলো।

চুল স্বাস্থ্যজ্জল ও মজবুত করেঃ জাফরান তেল ব্যবহারের ফলে চুলের গোড়া মজবুত হয় এবং চুল সাসোজ্জ্বল হয়। জাফরানে পটাশিয়াম থাকায় চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে।

চুল ঘন ও লম্বা করেঃ জাফরান তেলে ভিটামিন এ ভিটামিন ই ও পটাশিয়াম বিদ্যমান। যার কারণে চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে। নতুন চুল গজানোর সহায়তা করে। জাফরান তেল ১ মাস ব্যবহার করলে চুল তিন থেকে চার ইঞ্চি বেড়ে যায়।

নতুন চুল গজায়ঃ মাথায় জাফরান তেল ব্যবহারের ফলে নতুন চুল গজায়। যাদের মাথা থেকে চুল উঠে যায় জাফরান তেল ব্যবহারের ফলে চুল ওঠা বন্ধ হয়। জাফরান তেল তিন মাস ব্যবহার করলে মাথায় পরিপূর্ণ চুল গজায় এবং ঘন চুল হয়।

মাথার খুশকি দূর করেঃ জাফরান তেল ব্যবহারের সময় দুই হাতের তালুতে তেল নিয়ে খুব বেশি করে মেসেজ করে তেল ব্যবহার করতে হয়। যার কারণে মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। মাথার ত্বক থেকে খুকশী দূর হয়ে যায়।

চুলে ফাটা দূর করে চুল সিল্কি হয়ঃ অনেকের মাথার চুলগুলো আগা ফেটে যায় এবং চুলগুলো ভেঙ্গে যায়। জাফরান তেল ব্যবহারের ফলে চুলের আগা ভাঙ্গা সমস্যা দূর হয় এবং চুল সিল্কি হয়। একমাস জাফরান তেল ব্যবহার করলে মাথার চুলের আগা ফেটে যাওয়া দূর হয়। চুল স্বাস্থ্যবান ও সিল্কি হয়।

ত্বকের যত্নের জাফরান তেলঃ জাফরান তেলে ভিটামিন এ ভিটামিন বি ভিটামিন ই বিদ্যমান। জাফরান তেল ত্বকে ব্যবহারের ফলে ত্বক নরম ও মোলায়েম হয়। ভিটামিন এ ত্বকের গভীরে পৌছে ত্বকের কোষ কে মেরামত করে। ত্বকের মৃত কোষ অপসারণ করে নতুন কোষ তৈরি করে।

ত্বকের বিভিন্ন ধরনের দাগ দূর করেঃ জাফরান তেলে ত্বকে মালিশ করলে ত্বকের সকল দাগ দূর হয়ে যায়।

ব্যথা দূর করেঃ জাফরান তেলে ম্যাগনেসিয়াম থাকার জন্য শরীরের জোড়ায় জোড়ায় ব্যথা দূর করে। মাংসপেশির ব্যথা দূর করে।

হাড় গঠনের সহযোগিতা করেঃ জাফরান তেলে ম্যাগনেসিয়াম থাকার কারণে হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে পেশী গঠনের সহায়তা করে।

আসল জাফরান তেল চেনার উপায়

অরিজিনাল জাফরান চিনতে হলে জাফরান তেলের বক্সে মোবাইল ফোনের ফ্ল্যাশ লাইট জ্বলিয়ে বক্সের গায়ে লিমিটেশন পেপারটা মোবাইল ফ্ল্যাশ লাইট ধরলে বাঘের মত স্ক্রিন ভেসে উঠে এবং উজ্জ্বল ও একটু নড়াচড়া করে তাহলে বোঝা যাবে অরজিনাল। কালার চেঞ্জ যদি না হয় তাহলে বোঝা যাবে  নকল। জাফরান তেল কেনার সময় দোকান থেকে যেনে জাফরান তেল নিবেন।

 জাফরান তেল নেওয়ার পরে কাস্টমার কেয়ারে হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার দেওয়া থাকবে। 01905050505 । এই নাম্বারে কল দিয়ে কাস্টমার কেয়ারের সঙ্গে কথা বললে এটি আসল না নকল বুঝতে পারবেন। এভাবে খুব সহজেই অরজিনাল জাফরান তেল কিনতে পারবেন।

জাফরান তেল ব্যবহারের নিয়ম

আজকের পোস্ট জাফরান হেয়ার গ্রোথ থেরাপি ব্যবহারের নিয়ম। প্রত্যেকটা জিনিস নিয়ম মত ব্যবহার করতে হবে। নিয়ম মত ব্যবহার করলে তার ফল তাড়াতাড়ি পাওয়া যায়। জাফরান তেল ব্যবহার করার জন্য নিয়ম রয়েছে।
চুলের গোড়া মজবুত রাখার জন্য দুই হাতের তালুতে সামান্য করে জাফরান তেল নিতে হবে। অতঃপর সে তেল দিয়ে মাথার ত্বক ভালো করে মেসেজ করতে হবে। ৫-৬ মিনিট মেসেজ করার পরে রেখে দিবেন। পরের দিন সকালে মাথা ভালো করে ধুয়ে ফেলবেন। এভাবে সপ্তাহের তিন দিন ব্যাবহার করবেন।

চুল পড়া কমানোর জন্য এবং নতুন চুল গজানোর জন্য কিছু বাদাম পেস্ট নিয়ে নিবেন। বাদাম পেস্ট এর সঙ্গে জাফরান তেল মিশ্রিত করে মাথার ত্বকে ভালো করে মেসেজ করবেন। এভাবে ব্যবহার করলে মাথার চুল পড়া কমে যাবে। নতুন চুল গজাবে। চুলগুলো মোলায়েম ও সিল্কি হবে।।

 ত্বকে ব্যবহারঃ ঘুমানোর আগে জাফরান তেল নিয়ে মুখ ও হাতের ত্বকে ভালো করে মেসেজ করবেন। তারপরে ঘুমিয়ে যাবেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে ত্বক গুলো ধুয়ে ফেলবেন। এভাবে ব্যবহার করলে জাফরান তেলে থাকা ভিটামিন এ ত্বকের গভীরে পৌছে ত্বকের মৃতকোষ গুলো অপসারণ করে ও নতুন কোষ তৈরি করে। ত্বককে রাখে মোলাইন ও উজ্জ্বল।

জাফরান তেল বিভিন্ন জয়েন্টে অথবা পেশিতে ভালো করে মালিশ করতে পারেন। ভালো করে মালিশ করলে জয়েন্ট ও পেশির ব্যথা দূর হবে। হাড় ও পেশীকে স্বাস্থ্যবান করবে।

জাফরান তেল নিয়ে মাথার ত্বকে ভালো করে মালিশ করলে মাথার ত্বকে খুকশী ও ত্বকের সমস্যা দূর হয়ে যায়। এছাড়া চুলের আগা ফাটা ও চুল ভেঙ্গে দেওয়া দূর হয়।

লেখক এর মন্তব্য

প্রিয় পাঠক জাফরান হেয়ার গ্রোথ থেরাপি ব্যবহারের নিয়ম জেনে সে অনুযায়ী ব্যবহার করলে চুলের সকল সমস্যা দূর হয়ে যায়। অনেকের মাথায় টাক পড়ে। সেই ক্ষেত্রে জাফরান হেয়ার গ্রোথ থেরাপি  তিন মাস ব্যবহার করলে নতুন চুল গজায় ও চুল ঘন ও লম্বা করে।

চুলের যত্ন বৃদ্ধি করার জন্য জাফরানের যাবতীয় তথ্যাদি জানা প্রয়োজন। এই সকল তথ্য জানার জন্য এই কনটেন্টে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। আশা করা যায় এখান থেকে চুলের সমস্যা দূর করা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পাবেন। আশা করা যায় আপনাদের ভালো লাগবে। ভালো লাগলে বন্ধুদের মাঝে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করবেন।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url