লজ্জাবতী গাছের শিকড়ের উপকারিতা এর বিবরণ
ভুমিকা
লজ্জাবতী একটি উপকারী উদ্ভিদ। এ উদ্ভিদের পাতা শিকড় সব কিছুই ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই উদ্ভিদের উপকারিতা সবারই জানা দরকার। এই উদ্ভিদের উপকারিতা, অপকারিতা ও লজ্জাবতী গাছের শিকড়ের উপকারিতা এর দিকগুলো এই পোস্টে বিশ্লেষণ করা হবে।
আর ও পড়ুনঃ বঙ্গবন্ধু- শেখ মুজিবুর রহমান টানেল কোথায় অবস্থিত
এই উদ্ভিদের উপকারিতা ও অপকারিতার দিকগুলো জানতে চাইলে আমার এই ওয়েবসাইটে ক্লিক করবেন আশা করা যায় সকল তথ্য যত্ন সহকারে পাবেন।
সাদা লজ্জাবতী গাছের শিকড়ের উপকারিতা
সাদা লজ্জাবতী গাছের শিকড়ের উপকারিতা বহু বীদ। যাদের অশ্ব বা পাইলস আছে অপারেশন করার দরকার। সাদা লজ্জাবতীর পাতা ও শিকড় থেতিয়ে তিন কাপ পানি ও এক কাপ দুধ এর সাথে মিশিয়ে ফোটাতে হবে ফুটিয়ে দুধপানি অর্ধেক করতে হবে অতঃপর সকাল বিকাল এক মাস ধরে খেতে হবে। পাইলস বা অশ্ব এর সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
যাদের আমাষয় বা কোষ্ঠকাঠিন্য আছে তারাও এটা খেতে পারেন ভালো হয়ে যাবে। যাদের হাত পা জ্বালা করে এই পানি ব্যবহার করলে হাত পা জ্বালা ভালো হয়ে যাবে। যাদের পুরুষাঙ্গ শীতলতা হয় এসি কোড়ের রস দিয়ে প্রলেপ দিলে পুরুষাঙ্গের শক্তি ফিরে আসে।
ভারতে এই গাছের শিকড় দ্বারা ইউনানী ও আয়ুর্বেদ ওষুধ তৈরি করা হয়। সাদা লজ্জাবতী গাছের শিকড় ব্যবহার করে আমাশয়, ডায়রিয়া, পেটে ব্যথা, জ্বর, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ এমনকি ক্যান্সারের মতো রোগেরও চিকিৎসা করা হয়। এ শিকড় উন্নত স্মৃতিশক্তি তৈরি করে।
এছাড়া মাথাব্যথা, চোখের সমস্যা, ত্বকের সমস্যা, চুলের বিভিন্ন সমস্যায় এই চিকিৎসা করা হয়। এই গাছের শিকড় চুলের বিভিন্ন সমস্যা, শারীরিক ক্লান্তি দূর করে শরীরকে চাঙ্গা করে ও ওজন কমাতে সহায়তা করে। এ শিকড় ভেজোস চা, হারবাল টনিক ও তেল তৈরি করে বিভিন্ন চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।
লজ্জাবতী গাছের শিকড়ের উপকারিতা
বহু থেকেই হারবার চিকিৎসায় লজ্জাবতীর শিকড় ব্যবহার করে আসছে। লজ্জাবতীর পাতা, শিকড় ব্যবহার করে নাক ,কান,দাত ক্ষুদ্র নারীর ঘা এর চিকিৎসা করা হয়। ইহা ব্যবহার করে জন্ডিস, টিউমার, কাশি, চর্মরোগ, ডায়াবেটিস সহ লিভারের নানা রোগের চিকিৎসা করা হয়।
যাদের দাঁত ও মাড়িতে ক্ষত সৃষ্টি হয় ২০ সেন্টিমিটার লজ্জাবতীর শিকড় পানি দিয়ে ফুটিয়ে সেই পানি কুল কুচি করলে দাঁত ও মাড়ির ক্ষত ভালো হয়ে যায়।
লজ্জাবতী গাছ খাওয়ার নিয়ম
লজ্জাবতী গাছ ঔষধি সম্পন্ন এবং বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়। এটি কাঁচা অথবা রান্না করে অথবা রস করে খাওয়া যায়। এর পাতা ছালাতে অথবা সুপ করে খাওয়া যায়। এর পাতা মাংস অথবা মাছ দিয়ে রান্না করে খাওয়া যায়। লজ্জাবতির পাতা ও শিকড় গুলি থেঁতো করে রস খাওয়া যায়।
লজ্জাবতীর পাতা ঘি অথবা তেল দিয়ে ভেজে শাক হিসেবে খাওয়া যায়। লজ্জাবতীর পাতা, ডাল পালা, অথবা শিকড় পাউডার করে বিভিন্ন চিকিৎসায় অথবা মসলা হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় লজ্জাবতী গাছের শিকড় পাতা ও কান্ড সবকিছুই ব্যবহার হয়,।
বিশেষকরে পার্শ্ববর্তীদেশ ভারতে, লজ্জাবতী, গাছের চিকিৎসায় অনেক এগিয়ে গিয়েছে কৃত্রিম চিকিৎসার ,চাইতে, প্রাকৃতিক ভাবে,লজ্জাবতীর গাছ দিয়ে চিকিৎসা করতে পারলে আমরাও উপকৃত হব।
লাল লজ্জাবতী গাছের উপকারিতা
প্রসূতী মেয়েদের প্রসবের পরে হঠাৎ করে নাড়ি বেরিয়ে আসবে এমন মনে হয় তাহলে লজ্জাবতী গাছ ব্যবহার করবেন। চার কাপ পানির সঙ্গে ১০ গ্রাম লজ্জাবতীর গাছ দিয়ে জাল করার পরে ছেঁকে নিয়ে সকাল বিকাল দুইবার করে খাবেন খুব তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যাবে।গায়ে গন্ধ, অথবা ঘামের গন্ধ, জামাকাপড় এ লাল দাগ হয়।
আর ও পড়ুনঃ জেনে নিনএলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কাকে বলে
তাহলে বগলে লজ্জাবতীর কাঁথ ব্যবহার করবেন ভালো হয়ে যাবে। ইহাতে এন্টিঅক্সিডেন্ট অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি ইনফ্লোমেটরি বৈশিষ্ট্য থাকায় ইহা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুকি কমায়। তাই আমাদেরকে এ উদ্ভিদ ব্যবহার করা খুবই জরুরী।
সাদা লজ্জাবতী গাছের উপকারিতা
আপনি যদি সাদা লজ্জাবতী গাছের উপকার না জানেন এই পোস্টে আপনি সেগুলো ভালোভাবে জানতে পারবেন। সাদা লজ্জাবতী আমাদের অনেক উপকার করে। যে সকল মহিলাদের যোনিপথে ঘা হয়। সাদাস্রাব হয় সাদা লজ্জাবতির পাতা ১০ গ্রাম, পানি ও দুধের সঙ্গে মিশিয়ে একমাস খেলে ভালো হয়ে যায়।
সাথে সাদা লজ্জাবতীর পাতা পানিতে জাল করে ওই পানিটা দিয়ে ওই জায়গাটা ধুইতে পারেন। সাদা লজ্জাবতী গাছ পাউডার করে বিভিন্ন চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। যাদের পুরুষাঙ্গ শিথিল হয়ে যায় যৌন মিলনে অংশগ্রহণ করতে পারে না।সাদা লজ্জাবতীর বীজ দিয়ে তৈরি তেল পুরুষাঙ্গে আস্তে আস্তে মালিশ করলে পুরুষাঙ্গের শৈথিল্য ফিরে আসে।
যৌন মিলনের সক্ষম হয়। যাদের তিন চারটি সন্তান হওয়ার পরে যোোগযোনিদার শিথিল হয়েছে। সাদা লজ্জাবতী গাছের পাতা পানির সাথে জাল দিয়ে নির্যাস তৈরি করে ন্যাকড়া দিয়ে জব্যবহার যোনিদ্বারে ব্যবহার করলেকরলে আগের মত ফিরে আসে।
লজ্জাবতী শিকড় দিয়ে বশীকরণ
ভারতের তান্ত্রিকদের মতে লজ্জাবতীর গাছ দিয়ে মানুষকে বশীকরণ করা যায়। জোাতর্বিদদের মতে কারো স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে যদি মনোমালিন্য হয়। লজ্জাবতী গাছের মূল পাতা একসঙ্গে পিষে উভয়ের গায়ে যদি লাগানো যায় তাহলে তাদের সম্পর্ক পুনরায় ফিরে আসবে। শনিবার দিন অথবা পূর্ণিমার দিন অথবা সূর্য গ্রহণের দিন এই উদ্ভিদের শিকর সংগ্রহ করতে হবে।
জোতির্বিদদের মতে বাড়ির উত্তর কর্নারে এ গাছ রোপন করলে বাড়ির সমস্ত নেগেটিভ অবস্থা থেকে পজেটিভ অবস্থায় ফিরে আসে। বাড়িতে ফসল, ধনে ভরে যায় ও বাড়িতে সুখ বেড়ে পরিপূর্ণ হয়। জ্যোতিষী প্রীতিকা: মজুমদারের মতে লজ্জাবতী গাছ বাড়িতে লাগালে সে বাড়িতে টাকা-পয়সার কোন অভাব হয় না।
পুরুষ লজ্জাবতী গাছের উপকারিতা
লজ্জাবতী গাছের শিকড়ের উপকারিতা এর মত পুরুষ লজ্জাবতী গাছের উপকারিতা আছে। যারা পুরুষত্বহিনতায় ভোগেন সাদা লজ্জাবতী গাছের নির্যাস খেলে ভালো হয় এবং এতে শুক্রাণুর সংখ্যা ও গুণগত মান বৃদ্ধি হয়।। যৌনমিলনের সময় বীর্যপাত নিয়ন্ত্রন ও যৌন ইচ্ছা বৃদ্ধি করে।
এই গাছ প্রজনন স্বাস্থ্যের উন্নতি করে ও বন্ধ্যাত্ব দূর করে।ইহা শ্বাসনালীর সংকোচন কমিয়ে দিয়ে এ্যাজমা রোগীর উপকার করে। সাদা লজ্জাবতী গাছের নির্যাস ত্বকে ব্যবহার করলে চুলকানি ফুসকুড়ি ব্রণ সহ ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে।
অনেকের কোষ্ঠকাঠিন্যতা অনেক বেশি। কোষ্ঠ কাঠিন্যতার কারণে পাইলস হতে পারে। এক্ষেত্রে সাদা লজ্জাবতীর মূল থেতো করে এক গ্লাস পানিতে সিদ্ধ করতে হবে। অতঃপর ছেকে নিয়ে সে পানি খেতে হবে। এভাবে কয়েক দিন ব্যবহার করলেই কোষ্ঠকাঠিন্যো দূর হয়ে যায়।
লজ্জাবতী গাছের চাষ
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে প্রচুর পরিমাণ লজ্জাবতীর গাছ চাষ করা হয়। সেখানে পুরুষ লজ্জাবতী অথবা লাল লজ্জাবতী দুইটি গাছ সেখানে চাষ করা হয়। ভারত ইউনানী ওষুধে অনেক এগিয়ে আছে। ইউনানী ওষুধ তৈরিতে যে কয়টি গাছ লাগে তার মধ্যে সাদা এবং পুরুষলজ্জাবতী গাছ অন্যতম। যেহেতু অনেক উপকারী গাছ তাই তারা চাষ করে অনেক লাভবান হয়।
আর ও পড়ুনঃ ফ্লাইওভার ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পার্থক্য নির্নয়
গাছ চাষ করতে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া খুব কম। যার কারণে এই গাছ চাষ করা সহজ।লজ্জাবতী গাছ আমাদের প্রচুর উপকার করে। ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় এর ব্যাবহার হয়। ইহা চাষ করা খুব লাভজনক। লজ্জাবতী গাছ চাষ করলে এই উদ্ভিদ খুব দ্রুত বর্ধনশীল। এই উদ্ভিদ সাধারণত বসন্ত অথবা গ্রীষ্মকালে বপন করতে হবে। ২ থেকে ৩ ইঞ্চি দূরে লাগানো হয়।
সাধারণত এ গাছে কোন পোকা মাকড়ে আক্রান্ত হয় না।এটা চাষ করলে ভালো বীজ সংগ্রহ করে বসন্ত অথবা গ্রীষ্মকালে বপন করতে হবে। নিয়মিত পানি ও সার ব্যবহার করলে গাছগুলো তাড়াতাড়ি বড় হয়। আশা করি দেশের অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষায় এবং গাছ গোছালির ওষুধ ব্যবহারের জন্য আপনারা এই গাছ রোপন করবেন এটাই কামনা করি।
লেখক এর মন্তব্য
আমাদের দেশে বিভিন্ন ঝোপ ও জঙ্গলে বিভিন্ন রকম প্রচুর উপকারী উদ্ভিদ রয়েছে। আমরা যদি এগুলো ওষুধি গাছ ব্যবহার করি তাহলে কৃত্রিম ওষুধ থেকে রক্ষা পাবো। আমরা লজ্জাবতী গাছ চাষ করবো এবং সেখান থেকে নিজে উপকৃত হব ও অন্যকে সহযোগিতা করব।
আশা করি আমাদের এই পোস্ট থেকে উপকারী উদ্ভিদ ব্যাপারে আপনারা জানতে পারবেন। আপনারা পোস্ট ব্যাপারে কোন কিছু জানার থাকে থাকলে কমেন্ট করবেন। আশা করি পোস্টগুলো ভালো লেগেছে। ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করবেন। আপনাদের মঙ্গল কামনা করে শেষ করলাম।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url