কোন ভিটামিনের অভাবে গা ঘামে

প্রিয় পাঠক আসুন দেখা যাক কোন ভিটামিনের অভাবে গা ঘামে। গা ঘামা এক বিরক্ত কর স্বভাব। গরমের সময় অতিরিক্ত গা ঘামা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সাধারণত ভিটামিন বি ১২ এর অভাবে অত্যাধিক বেশি গায়ে ঘাম হয়। গরমের সময় এক দিকে বিদ্যুতের লোডশেডিং অন্যদিকে অত্যাধিক তাপমাত্রা।
এই দুটি অবস্থা অত্যাধিক কষ্টকর করে তুলেছে। গরমের কারণে অত্যাধিক গা ঘামলে গায়ের গন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া বেশি ঘামের কারণে শরীরে ক্লান্ত চলে আসে।

ভূমিকা

কোন ভিটামিনের অভাবে গা ঘামে এ বিষয়ে জেনে নেওয়া দরকার। সাধারণত ভিটামিন বি ১২ এর অভাবে গা ঘামে। গা ঘামার জন্য দুর্বল হয়ে যায়। শরীরের লবণ পানি এর অভাব হয়। আমরা যদি পর্যাপ্ত শাকসবজি খাবার তালিকায় যোগ করি তাহলে গা ঘামা কমতে পারে।

আর ও পড়ুনঃ   কারাগারে আল্লামা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী

অপরদিকে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি অথবা টক ফল খাবারের তালিকায় যোগ করতে পারি। সবজি ও ফলমূল খাওয়ার কারণে অতিরিক্ত গা ঘামার কারনের জন্য যে লবণ পানি কম হয় তা পূরণ হবে।   তাই গা ঘামার ব্যাপারে সার্বিক আলোচনা করা করি।

বাচ্চাদের মাথা ঘামার কারণ

গরমের সময় বাচ্চারা অনেক বেশি ঘামে। বিশেষ করে বাচ্চাদের অতিরিক্ত মাথা ঘামার অনেক কারণ রয়েছে। একে একে বাচ্চাদের মাথা ঘামার কারণ গুলো জেনে নিই।

শরীরের তাপমাত্রাঃ শিশুদের শারীরিক তাপমাত্রা বিকাশ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা হয়নি। তাই গরম লাগলে সহজেই বাচ্চাদের গা ও মাথা ঘামে।

পোশাক পরিধানঃ গরম পরিবেশে বাচ্চাদেরকে পোশাক পরিধান করালে বাচ্চাদের মাথা গরম হয়। যার কারণে বাচ্চাদের গা ও মাথা ঘামে।

পরিশ্রম করলেঃ বাচ্চারা সাধারণত চঞ্চল প্রকৃতির হয় খেলাধুলা অন্যান্য বাচ্চাদের সাথে দৌড়াদৌড়ি এ গাছগুলোর কারণে বাচ্চাদের অনেক পরিশ্রম হয়। পরিশ্রম হওয়ার জন্য মাথা ঘামে।

ঘুমঃ  ঘুমালে বাচ্চাদের মাথা গরম হয়। যার কারণে ঘুমের মধ্যে বাচ্চাদের মাথা ঘেমে যায়। এছাড়াও জ্বর অথবা সংক্রমণের কারণেও বাচ্চাদের মাথা ঘামতে পারে।

এলার্জির কারণেঃ  এলার্জির কারণে বাচ্চাদের মাথা গরম হতে পারে। আর এজন্য বাচ্চাদের মাথা ঘামে। বাচ্চারা যদি অতিরিক্ত ঘামে ঘরোয়া উপায়ে এসে ঘাম ভালো না হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

কোন ভিটামিনের অভাবে গা ঘামে

আসুন জেনে নি ই কোন ভিটামিনের অভাবে গা ঘামে। আমার আরো কারণগুলো কি। আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে ভিটামিন বি টুয়েলভ। পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে শতকরা ৪৭ ভাগ মানুষ ভিটামিন বি টুয়েলভ এর অভাবে ভোগেন। 

সাধারণত যে সকল লোক নিরামিষ বুঝি তাদের মধ্যে ভিটামিন বি টুয়েল ভ এর অভাব অনেক বেশিভিটামিন,বি১২,এরঅভাবে,এনিমিয়া,ডায়রিয়া,কোষ্ঠকাঠিন্যতা,বিষন্নতা,বিরক্তি,স্মৃতিশক্তিরলোপ,পাওয়ার মতো অনেক সমস্যা সৃষ্টি হয়। 

ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস বলেছে ভিটামিন বি১২ এর অভাবে মাথা ঘোরা হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়ার মত সমস্যা হতে পারে। এছাড়া ভিটামিন বি১২ এর অভাবে পর্যাপ্ত ঘাম হতে পারে। শরীর অত্যাধিক ঘাম একমাত্র ভিটামিন বি১২ এর অভাবে হয়।

অতিরিক্ত মুখ ঘামার কারণ কি

ডাক্তার,কৌস্ত,গুহবলেন হাইপারথায়রয়েডিজমের পাশাপাশি বংশগতি ঘাম গ্রন্থি আবহাওয়া ইত্যাদি কারণে মুখ ও মাথা ঘামে। সাধারণত শরীরে একক্রিন গ্রন্থির উত্তেজনার কারণে মাথা ও মুখ ঘামে। অনেক ক্ষেত্রে বংশগতির কারণেও মুখ ও মাথা ঘামায়।

আর ও পড়ুনঃ   হজ্জ ও উমরাহ সফরে সহজ গাইড

যাদের শরীরে ঘর্মগ্রন্থী বেশি থাকে তাদেরও বেশি মাথা ও মুখ ঘামে। বিভিন্ন প্রকার উদ্যেগ অতিরিক্ত টেনশন পরিশ্রম এর কারণে মাথা ও মুখ ঘামে।

অতিরিক্ত ঘাম দূর করার ঘরোয়া উপায়

অতিরিক্ত ঘেমে যাওয়া অত্যন্ত কষ্টকর। ঘামের কারণে শরীর দুর্বল হয়ে যায়। শরীরের পোশাক গুলোতেও দাগ ভরে যায়। আসুন ঘরোয়া ওপারের উপায়ে কিভাবে ঘাম দূর করা যায় জেনে নিই।

মেথি ভেজানো পানিঃ এক এক গ্লাস পানিতে এক চামচ মিথি সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। সকালে পানিটুকু ছেকে খেয়ে নিন। অতিরিক্ত গা ঘামা হতে বাচা যাবে।

অ্যাপল সাইডার ভিনেগারঃ অ্যাপল সাইডার ভিনেগারের মাধ্যমে অতিরিক্ত গা ঘামা থেকে বাঁচা যায়। ত্বকে অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার ব্যবহার করলে ঘাম হয় না। প্রতিদিন আপেল সিডার ভিনেগার খেলে ত্বকের পিএইচ স্তর ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

খাবার সোডার ব্যবহারঃ খাবার সোডা ব্যবহারের ফলে ঘাম নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এই ক্ষেত্রে একটা পাত্রে খাওয়ার সোডা নিতে হবে অতঃপর তিন চার ফোঁটা সুগন্ধি তেল দিতে হবে। একটু পানি দিয়ে পেস্ট করে নিতে হবে। বেশি ঘামে সেখানে এই পেস্টগুলো প্রলেপ দিতে হবে। বিশ মিনিটে রেখে ধুয়ে ফেলবেন। অতিরিক্ত ঘাম থেকে বাচা যাবে।

টমেটো রস খাওয়াঃ টানা এক সপ্তাহ ধরে এক কাপ করে টমেটোর রস খেতে হবে। টমেটো রসে এন্টিঅক্সিডেন্ট আছে যা ঘাম গ্ৰন্থি সংকুচিত করে। এছাড়া এন্টিঅক্সিডেন্ট অতিরিক্ত ঘাম নিয়ন্ত্রণ করে।

চন্দনের ব্যবহারঃ চন্দন বেটে নিতে হবে ও চন্দন একটু পানি দিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। অতঃপর উক্ত পেস্ট যেখানে ঘামে সেখানে প্রলেপ দিতে হবে। ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। অতিরিক্ত ঘাম থেকে বাঁচা যাবে।

এছাড়া ভিটামিন বি ১২এর অভাবে অতিরিক্ত গা ঘামে। এজন্য ভিটামিন বি১২ জাতীয় খাবার খাওয়া। যেমন পাকা পেপে, তরমুজ, আম, কামরাঙ্গা, ফুলকপি, গাজর, বরবটি, ডিম, দুধ, মাংস, মাছ ইত্যাদি ভিটামিন বি১২ খাবার। তাহলে আশা করা যায় অতিরিক্ত ঘাম থেকে বাঁচা যাবে।আজকে আমাদের বিষয় কোন ভিটামিনের অভাবে গা ঘামে।

অতিরিক্ত ঘাম কোন রোগের লক্ষণ

প্রিয় পাঠক হঠাৎ করে অতিরিক্ত ঘামলে এই ঘামের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। এ ঘামের জন্য যে কেউ বিপাকে পড়তে পারে। তাই আসুন হঠাৎ করে ঘেমে গেলে কি কি সমস্যা হতে পারে জেনে নিই।

হার্টের সমস্যা হতে পারেঃ হার্টের সমস্যা হলে অতিরিক্ত গা ঘামতে পারে। ঘামের সঙ্গে অন্যান্য কিছু লক্ষণও দেখা দিতে পারে। যেমন বুক ব্যথা, বুক ধরফর করা, মাঝে মাঝে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, অথবা শ্বাসকষ্ট হওয়া। অথবা হাতের গতি কমবেশি হতে পারে। এ অবস্থা হলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।

ডায়াবেটিসের সমস্যাঃ ডায়াবেটিসের জন্য হঠাৎ করে অতিরিক্ত বেশি ঘাম হতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীর হঠাৎ করে ব্লাড সুগার কমে গেলে এ অবস্থা হতে পারে। এছাড়া অস্বস্তি হতে পারে অথবা অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে।

থাইরয়েডের সমস্যাঃ অতিরিক্ত ঘামের কারণ থাইরয়েডের ভারসাম্যহীনতা হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন হাইপার থাইরয়েড এর সমস্যার কারণে মানুষের শরীরে থাইরয়েড হরমোনের ক্ষরণ বেশি হয়। ক্ষরণ বেশি হলে রোগীর খুধা বেড়ে যায় এবং হঠাৎ করে অত্যাধিক ঘেমে যায়।

ব্রেন স্টোকের কারণে হতে পারেঃ হঠাৎ করে ব্রেন স্টোকের কারণে প্যারালাইসিস এর মতো অবস্থা হতে পারে এর সঙ্গে প্রচুর গা ঘামতে পারে।

নিউরোলজিক্যালঃ  হঠাৎ করে মাথায় টিউমারের যন্ত্রণা হলে অথবা নিউরোলজিকেল কোন সমস্যা হলে শরীর বেশি ঘামতে পারে। অতিরিক্ত ঘামের কারণ খুঁজে বের করতে হবে এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হবে।

টেনশন ও ভয়ঃ টেনশন অথবা কোন ভয়ের কারণ যদি হয় তাহলে শরীর অত্যাধিক ঘামে। টেনশন ও ভয়ের কারণে অ‌্যান্ড্রিনালিন ও নন অ্যান্ড্রিনালিন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। অটোনোমিক নার্ভাস সিস্টেম সক্রিয় হয়ে যায় এবং পর্যাপ্ত ঘামের সৃষ্টি হয়।

রক্তে ইনফেকশনঃ রক্তে কোন প্রকার ইনফেকশন হলে শরীর অনেক গরম হয়ে যায়। এ পর্যায়ে শরীরের প্রেসার কমে যায়। হার্টের চাহিদার মত রক্ত পাম্প করতে পারেনা। তখন দেহ ঠান্ডা হয়ে যায় এবং অনেক ঘাম তৈরি হয়। 

আজকে আমাদের বিষয় কোন ভিটামিনের অভাবে গা ঘামে। তবে যেভাবেই গা ঘামুক না কেন। গা ঘামার বিষয়টি চেক করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

হাইপারহাইড্রোসিস এর লক্ষণ

প্রচুর পরিশ্রম অথবা খেলা ব্যায়াম এর মাধ্যমে প্রচুর গা ঘামতে পারে। তবে হাইপার হাইড্রোসিস এর ঘামটা একটু আলাদা। হাইপার হাইড্রোসিস এর লক্ষণ গুলো।এ ঘামে প্রতিদিনের কাজকর্মে চরম ব্যাঘাত ঘটায় এই ঘামের জন্য অত্যাধিক আবেগ সৃষ্টি হয় এবং সামাজিকভাবে প্রত্যাখিত হয়।

আর ও পড়ুনঃ তথ্য প্রযুক্তির অবাধ ব্যবহারই যুব সমাজের অবক্ষয়

একজন ব্যক্তি সাধারণ ঘামের চাইতে অনেক বেশি ঘামে। অনেক সময় কোন কারণ ছাড়াই রাতে পর্যাপ্ত ঘামে। হাইপার হাইড্রোসিস এর লক্ষণগুলো বোঝা গেলে অতি দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। ডাক্তারের কাছে সু চিকিৎসা করলে এ রোগের প্রকোপ থেকে বাঁচা যাবে।

লেখক এর মন্তব্য

কোন ভিটামিনের অভাবে গা ঘামে এই বিষয়টি অনেক বিব্রতকর। অতিরিক্ত গা ঘামলে মানসিক ডিপ্রশানে ভুগতে হয়। এছাড়া অতিরিক্ত ঘামের কারণে পোশাক পরে থাকা অনেক কষ্টকর হয়। এছাড়া অনেক সময় ঘামের দুর্গন্ধে সঙ্গে থাকে অনেকে কষ্ট পায়।

তাই আসুন আমরা ঘরোয়া ভাবে কিছু চিকিৎসা করার মাধ্যমে শরীরের ঘামটা একটু কমায়। অতিরিক্ত গা ঘামলে শরীর অনেক দুর্বল হয়ে যায়। কোন কাজে মন বসে না। আশা করা যায় আমার এই কনটেন্ট ভালো লাগবে। কোন কিছু জানার থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url