কোন ভিটামিনের অভাবে মেজাজ খিটখিটে হয়

প্রিয় পাঠক আসুন জেনে নিই কোন ভিটামিনের অভাবে মেজাজ খিটখিটে হয়। কোন ভিটামিনের অভাবে চুলকানি হয়। মেজাজ খিটখিটে হওয়ার কারণ। এছাড়াও মেজাজ খিটখিটা করতে ঘরোয়া উপায়ে সমাধান করা যায় সে ব্যাপারেও আলোচনা করা হবে।
মেজাজ খিটখিটে হলে সবার সাথে সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায়। এছাড়াও লোকজন অনেক অপছন্দ করে। তাই খিটখিটে দূর করে ভালো মেজাজের ভারসাম্য রক্ষা করা জরুরী।

ভুমিকা

প্রিয় পাঠক বিভিন্ন দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপের কারণে মেজাজ খিটখিটে হয়। এছাড়াও শরীরে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হলে মেজাজ খিট খিটে হয়। আর দীর্ঘদিন শুয়ে থেকে চিকিৎসা করার কারণে অনেকটায় মেজাজ খিটখিটে হয়। 

কথায বললে বলা যায় পারিপার্শ্বিক কোন সমস্যা থাকলে মেজাজের ভারসাম্য থাকে না। ঘরোয়া কিছু উপায়ে মেজাজের এই ভারসাম্যতা ফিরিয়ে নিয়ে আসা দরকার। তাই আসুন মেজাজ খিটখিটে হওয়ার কারণগুলো জেনে নিই।

 দূর করার জন্য ঘরোয়া উপায় গুলো জেনে নিই। আজকের আমাদের পোস্ট কোন ভিটামিনের অভাবে মেজাজ খিটখিটে হয়। এগুলো বিষয় জানতে আমাদের পোস্ট পুরোপুরি পড়ুন।

কোন ভিটামিনের অভাবে মেজাজ খিটখিটে হয়

প্রিয় পাঠক হয়তো আপনাদের ইচ্ছা হচ্ছে কোন ভিটামিনের অভাবে মেজাজ খিটখিটে হয় জানার জন্য। গুগল সহ বিভিন্ন মাধ্যম সার্চ করে পাওয়া যায় যে খিটখিটে মেজাজ মানুষের কমন সমস্যা। বিশেষজ্ঞগন এর মূলে দায়ী করেছেন ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি এর অভাব। 

আমেরিকার হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির নিউট্রিশিয়ান বিভাগ বলেছে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি এর অভাবে জয়েন্টের ব্যথা ও মেজাজ খিটখিটে হয়। নিয়মিত খাবার খেলে এ সমস্যা দূর হয়। এইজন্য নিয়মিত ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার খাওয়া।

কোন ভিটামিনের অভাবে চুলকানি হয়

আজকের আমাদের পোস্ট কোন ভিটামিনের অভাবে মেজাজ খিটখিটে হয়।পুষ্টিবিদ গন বলেছেন কিছু ভিটামিন ও কিছু খনিজ পদার্থ রয়েছে যেগুলো ঘাটতি থাকলে শরীরে চুলকানি হয়। আসুন দেখে নেওয়া যাক সে ভিটামিন গুলো কি কি।

ভিটামিন এঃ ভিটামিন এ শরীরের ত্বকের গভীরে পৌছে ত্বকের মৃত কোষ নষ্ট করে নুতন কোষ তৈরি করে। এছাড়াও ত্বক নরম ও স্বাস্থ্যজ্জল করে। তাই ভিটামিন এ এর অভাবে চুলকানি দাদ একজিমা হয়। ভিটামিন এ জাতীয় খাবার খেলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

ভিটামিন ডি এর অভাবেঃ ভিটামিন ডি হাড় ও দাঁতের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও ভিটামিন ডি ত্বকে উপস্থিত থেকে ত্বক নরম এবং স্বাস্থ্যউজ্জ্বল করে। ভিটামিন ডি এর অভাবে ত্বক শুষ্ক হয় এবং চুলকানি ও একজিমার মত সমস্যা সৃষ্টি হয়।

ভিটামিন ই এর অভাবেঃ ভিটামিন ই ত্বককে হাইড্রেট ও মশ্চারাইজড করতে সাহায্য করে।
ভিটামিন ই ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ কমায় এবং উজ্জ্বল করে। ভিটামিন ই এর অভাবে ত্বক শুষ্ক হয় এবং চুলকানির মত সমস্যা হয়।

ভিটামিন সি এর অভাবেঃ ভিটামিন সি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে ত্বকে কোলাজেন বৃদ্ধি করে। ভিটামিন সি এর অভাবে ত্বক থেকে পানি অপসারিত হয়। তার কারণে ত্বক খসখসে ও চুলকানির সমস্যা হয়।

জিংকের অভাবেঃ জিংকের অভাবে মাথার ত্বক শুষ্ক শরীরের ত্বক শুষ্ক হতে পারে। যার কারণে চুলকানি হয়। তাই আসুন চুলকানি যেগুলো ভিটামিনের সমস্যায় হয় সেগুলো ভিটামিন জাতীয় খাবার খেলে চুলকানি থেকে নিরাময় পাওয়া যাবে।

মেয়েদের মেজাজ খিটখিটে হওয়ার কারন

মেয়েরা সাধারণত আস্তে আস্তে বয়স বৃদ্ধির কারণে বিভিন্ন সমস্যায় পড়ে। যার কারণে তাদের মেজাজ খিটখিটে হয়। শারীরিক বিভিন্ন পরিবর্তনের কারণে বহু জটিলতা সৃষ্টি হয়। যার কারনে তাদের মেজাজ খিটখিটে হয় আসুন জেনে নিই মেয়েদের মেজাজ খিটখিটে হওয়ার কারণগুলো।

বয়ঃসন্ধিঃ মেয়েরা বয়স বাড়তে থাকলে কিছু পরিবর্তন ঘটে। মন ও শরীরের গঠনের পরিবর্তন হয়। যার কারণে এই সময় মেজাজ খিটখিটে হয়।

গর্ভাবস্থায়ঃ গর্ভাবস্থায় মহিলাদের ইস্ট্রোজেন হরমোন কখনো বেড়ে যায় কখনো কমে যায়। এর ফলে মেজাজ ক্ষীর খেতে হয়। অনেক সময় তারা মানসিকভাবে দুর্বল এবং অসহায় মনে করে যা যার কারণে মেজাজ খিটখিটে দেখায়।

মেনোপজঃ সাধারণত নারীদের মাসিক বন্ধ হয়ে গেলে এই বয়স মেনোপজ বলে। সাধারণত ৪৫ থেকে ৫০ বছর বয়সের মধ্যে এটি হয়। এই সময় তাদের মেজাজ খিটখিটে হয়।

মানসিক চাপঃ ছেলেদের মত মেয়েদেরও প্রচুর মানসিক চাপ থাকে। মানসিক চাপ অত্যাধিক ও উদ্বেগ বেড়ে গেলে মেজাজ খিটখিটে হয়।

ওষুধ খাওয়ার কারণেঃ অনেক সময় অনেক ওষুধ খাওয়ার কারণে মানসিক চাপ বেড়ে যায়। যার কারনে মেজাজ খিটখিটে হয়।

ঘুমের সমস্যাঃ ঘুমের সমস্যা অথবা ঘুম কম হওয়ার কারণে মানসিক চাপ বেড়ে যায়। আর এই জন্য মেজাজ খিটখিটে হয়। এছাড়াও আরো অনেক কারণ থাকতে পারে যে কারণ থাক সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে মেজাজ খিটখিটা দূর করতে হবে।

খিটখিটে মেজাজ দূর করার উপায়

প্রিয় পাঠক আপনাদের হয়তো জানার ইচ্ছা হচ্ছে খিটখিটে মেজাজ দূর করার উপায় কি। এছাড়া কোন ভিটামিনের অভাবে মেজাজ খিটখিটে হয়। গুগল সার্চ সহ বিভিন্ন সার্চের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী মেজাজ খিটখিটা দূর করার উপায় গুলো আলোচনা করা হলো।

চকলেট খাওয়ার মাধ্যমেঃ চকলেটে ফিনাইলিথ‌্যালাইমিনের বেশ কয়েকটি মিশ্রণ রয়েছে যা এন্ডোরফিন ও আন্ডারমাইন্ড বাড়ায়। পাশাপাশি আন্টি অক্সিডেন্ট আয়রন ও ম্যাগনেসিয়াম পর্যাপ্ত থাকে। তাই নিয়মিত চকলেট খাওয়ার মাধ্যমে খিটখিটে মেজাজ দূর হয়।

গ্রিন টি খাওয়ার মাধ্যমেঃ নিয়মিত গ্রিন টি খেলে শরীরের নার্ভ শান্ত থাকে এবং মুড ভালো থাকে। প্রতিদিন দুই তিনটা গ্রিন টি খাওয়ার ফলে হতাশা কেটে যায়। তাই নিয়মিত গ্রিন টি খেলে মেজাজ খিটখিটে ভালো হয়।

বাদাম খাওয়ার মাধ্যমেঃ আখরোট চিনাবাদাম কাঠ বাদাম পেস্তা বাদাম কাজুবাদাম ও কিসমিসে বহু আশ্চর্য পুষ্টি রয়েছে। যেগুলো খাওয়ার মাধ্যমে শরীরে প্রোটিন ফ্যাট ভিটামিন ও আয়রন গ্রহণ করে। যার কারণে মনটা ভালো থাকে এবং মেজাজ খিটখিটে দূর হয়।

ভিটামিন ডি জাতীয় খাবারের মাধ্যমেঃ ভিটামিন ডি এর অভাবে মেজাজ খিটখিটে হয়। তাই ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার অথবা রোদের মাধ্যমে ভিটামিন ডি সংগ্রহের মাধ্যমে মেজাজ খিটখিটে দূর হয়।

ডিম খাওয়ার মাধ্যমেঃ ডিমে ভিটামিন বি১২ বিদ্যমান। এছাড়াও ডিমে প্রোটিন ভিটামিন ডি ও কলেজেন থাকে। যার কারনে ভিটামিন ডি খেলে স্নায়ুতন্ত্র স্বাভাবিক থাকে এবং মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে। যার কারনে মেজাজ খিটখিটে থাকেনা।

পনির খাওয়ার মাধ্যমেঃ পনির খাওয়ার মাধ্যমে পনিরে থাকা ট্রিপটোফেন মন ভালো রাখার ব্যবস্থা করে। তাই পনির খাওয়ার মাধ্যমে মেজাজ খিটখিটে দূর হয়।

মধু খাওয়ার মাধ্যমেঃ বিশেষজ্ঞগণ বলেছেন মধুর রং সাদ উভয় মন ভালো রাখে। যার কারনে মধু খাওয়ার ফলে মেজাজ খিটখিটে দূর হয়।

অ্যাভোকাডো খাওয়ার মাধ্যমেঃ অ্যাভোকাডো ফলে ভিটামিন বি৬ ভিটামিন বি৫ ফাইবার ভিটামিন ই ভিটামিন সি বিদ্যমান। এছাড়াও প্রচুর এন্টিঅক্সিডেন্ট আছে। যা খাওয়ার মাধ্যমে শরীর ও মেজাজ ফুরফুরে করে। যার কারণে খিটখিটে মেজাজ দূর হয়।

ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খাওয়াঃ ভিটামিন সি জাতীয় খাবারের মাধ্যমে শরীরের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা কমে। মন ও শরীর শক্তিশালী রাখতে ভিটামিন সি এর অনেক অবদান।

 তাই নিয়মিত ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেলে খিটখিটে মেজাজ দূর হয়। তাই আসুন এগুলো খাবার খেয়ে মেজাজের ভারসাম্য রক্ষা করি এবং সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার দেখিয়ে চলি।

ভিটামিন ডি এর অভাবে কোন রোগ হয়

আমাদের শরীরের জন্য ভিটামিন ডি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন ডি এর জন্য হাড় ও মাংসপেশিগুলো মজবুত হয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়। 

আমরা খুব সহজে ভিটামিন ডি পেতে পারি। কারণ সূর্যালোক থেকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। ভিটামিন ডি এর অভাবে কি কি সমস্যা হয় দেখে নেওয়া যাক।
*ভিটামিন ডি এর অভাবে হঠাৎ করে চুল পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
*হাড় ও পেসি দুর্বল এবং অস্থির সন্ধিগুলো প্রচুর ব্যথা এবং দীর্ঘস্থায়ী পিঠে ব্যথা ভিটামিন ডি এর ঘাটতি জন্য হয়।
*ভিটামিন ডি এর অভাবে মানসিক উদ্বেগ ও মানসিক চাপ বেড়ে যায় মেজাজ খিটখিতে হয়। *শরীরে প্রচুর ক্লান্তি হয়। ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণ করা দরকার।
*অত্যাধিক স্থুল ব্যক্তির ভিটামিন ডি এর অভাব হয়। এছাড়াও ভিটামিন ডি এর অভাবে হঠাৎ করে ওজন কমতে পারে।
*ভিটামিন ডি এর অভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে। এছাড়াও ভিটামিন ডি এর অভাবে ঘা শুকাতে অনেক দেরি হয়।
*শরীরে অনেক ক্লান্তি ঝিমুনি শুয়ে বসে থাকার ইচ্ছা এগুলো ভিটামিন ডি এর অভাবে হয়।
তাই এগুলো সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার খেতে হবে। এছাড়াও সকালে রোদে থেকে ভিটামিন ডি সংগ্রহ করা যেতে পারে।

লেখকের মন্তব্য

সুপ্রিয় পাঠক আসুন কোন কোন ভিটামিনের অভাবে মেজাজ খিটখিটে হয় জেনে নিই। এছাড়াও মেজাজ খিটখিটে হলে ঘরোয়া চিকিৎসার মাধ্যমে সেটা দূর করা সম্ভব তা জেনে নিই। 

এগুলো বিষয়ে জানতে আমাদের পোস্ট শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়বেন। আশা করি ভালো লাগবে। ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করবেন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url