খাওয়ার কতক্ষণ পর ব্যায়াম করা উচিত
প্রিয় পাঠক আসুন জেনে নিই খাওয়ার কতক্ষণ পর ব্যায়াম করা উচিত। ব্যায়াম কখন করবেন সকালে না বিকালে। ব্যায়ামের সঠিক সময় জেনে নেওয়া প্রয়োজন। এছাড়াও ব্যায়াম করার উপকার গুলো জানা দরকার। ব্যায়াম করার পরে কি কি খাওয়া প্রয়োজন তাও জানা দরকার। আসুন এ সকল বিষয় জানতে আমাদের এই পোস্ট শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
ব্যায়াম এর মাধ্যমে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। ব্যায়াম এর মাধ্যমে শরীরের বিপাক প্রক্রিয়াও বেড়ে যায়। শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করা প্রয়োজন।
ভূমিকা
সুপ্রিয় পাঠকগণ ব্যায়ামের মাধ্যমে আমাদের কি কি সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া যায় সেই বিষয়ে আপনাদের জানার প্রয়োজন।শারীরিক সুস্থতা ও বিপাকীয় শক্তি বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করা প্রয়োজন। নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে ব্যায়াম করার ফলে শরীরের রক্ত সংবহন তন্ত্র ও হজম প্রক্রিয়াগুলো ভালো থাকে।
এছাড়াও নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ থাকে যার কারণে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে প্রতিদিন ব্যায়াম করার ফলে শরীরের স্থুলতা হতে পারে না যার কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়। নিয়মিত ব্যায়াম করার মাধ্যমে শরীর কর্মক্ষম হয় হাড় ও পেশির স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
আজকের বিষয় খাওয়ার কতক্ষণ পর ব্যায়াম করা উচিত। এগুলো বিষয় জানতে আমাদের ওয়েবসাইটের পোস্ট শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভালো করে পড়বেন। এছাড়াও শরীর সুস্থ রাখার জন্য শারীরিক সক্ষমতা অনুযায়ী নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত।
খাওয়ার কতক্ষণ পর ব্যায়াম করা উচিত
ব্য়ায়াম করার সময় শরীরে জ্বালানি শক্তি দেওয়ার জন্য খাওয়ার পরে ব্যায়াম করা দরকার। আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে খাবারের কতক্ষণ পরে ব্যায়াম করা উচিত। ব্যায়াম করার আগে হালকা খেয়ে নিতে পারেন। খাওয়ার কতক্ষণ পর ব্যায়াম করা উচিত। একদম না খেয়েও ব্যায়াম করা উচিত নয়।
পার্সোনাল হেলথ এর প্রধান প্রশিক্ষক ফারজানা খানমের মতে ব্যায়াম শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে ভারী খাবার না খেয়ে একটু অপেক্ষা করে ভারী খাবার খান। বিশেষজ্ঞগণ বলেন পেটের সমস্যা প্রতিরোধে খাবারের এক থেকে দুই ঘন্টা পরে ব্যায়াম করতে হবে।
অপরপক্ষে জলখাবারের ৩০ মিনিট পরে ব্যায়াম করা যাবে। আর যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য খাওয়ার দুই থেকে তিন ঘন্টা পরে ব্যায়াম করা ভালো। তাহলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে।
সকালে ব্যায়াম করার উপকারিতা
প্রিয় পাঠক আমাদের কখন ব্যায়াম করা লাগবে এ সম্পর্কে জানা দরকার। গুগল সার্চ এর মাধ্যমে জানা যায় যে সকালে ব্যায়াম করা অত্যন্ত উপকার। একাধিক গবেষণাগার থেকে জানা যায় যে দিনে যে কোন সময় চাইতে সকালে ব্যায়াম করলে শরীরের উপকারিতা বেশি হয়। সকালে ব্যায়াম করার উপকারিতা গুলো বর্ণনা করা হলো।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সকালে ব্যায়ামঃ রাতে খাবারের পরে কার্বোহাইড্রেট গুলো সকালে চর্বিত রূপান্তরিত হয়। সকালে ব্যায়াম করলে শরীরের চর্বি গুলো বার্ন হয়। যার কারনে মেদ অনেক কমে তাই প্রতিদিন ওজন নিয়ন্ত্রণে সকালে ব্যায়াম করা দরকার।
মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখেঃ সকালে ব্যায়ামের ফলে দেহে এনডোরফিন নামে হরমোন নিঃসরণ হয়। এই এন্ডফিল হরমোন মস্তিষ্কের নার্ভ গুলোকে শক্তিশালী করে। যার কারণে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো থাকে মেধা বিকাশের সহায়তা করে।
ঘুমের সমস্যা দূর হযঃ সকালে ব্যায়াম করলে টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি হয়। পেশিগুলো শক্তিশালী হয় ভালো ঘুম হয়। যাদের ভালো ঘুম হয় না প্রতিদিন সকালে ব্যায়াম করা প্রয়োজন।
শর্করা নিয়ন্ত্রণঃ নিয়মিত সকালে ব্যায়াম করলে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ থাকে। ডায়াবেটিস রোগীদের শর্করা বৃদ্ধি হয় না।
হার্ট ভলো থাকেঃ নিয়মিত সকালে ব্যায়াম করলে হার্টে অক্সিজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। হৃদরোগের ঝুকি কমে। সকালে ব্যায়াম করার কারণে ভালো হজম হয় এবং ক্ষুধা বাড়ে।
শরীরের টক্সিন অপসারিত হয়ঃ নিয়মিত সকালে ব্যায়াম অথবা হাঁটাহাঁটি করলে গা ঘেমে যাওয়ার ফলে ত্বকের লোমকুপ গুলো খুলে যায়। যার কারণে পর্যাপ্ত টক্সিন বাহির হয়ে যায়। ফলে ত্বক উজ্জ্বল এবং লাবণ্যময় রাখে।
কর্মক্ষমতা বাড়েঃ সকালের ব্যায়াম জগিং অথবা হাঁটাহাঁটির কারণে শরীরের কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়। এছাড়া শরীরের অলসতা দূর হয়। আমরা নিয়মিত সকালে হাঁটাহাঁটি করি। আজকে আমাদের পোস্ট খাওয়ার কতক্ষণ পর ব্যায়াম করা উচিত।
ঘরে ব্যায়াম করার নিয়ম
বিশেষ করে শরীরের ও পেটের মাসলগুলো শক্তিশালী করতে নির্দিষ্টভাবে ঘরে বসেই ব্যায়াম করা যায়। এক্ষেত্রে কোন ডিভাইস না হলেও চলে। ব্যায়ামের নাম প্লাংক
পদ্ধতিঃ হাত ও পায়ের আঙ্গুলগুলো দিয়ে মাটিতে পুশআপের মত অবস্থান করতে হবে। এই সময়ে ঘাড় ও পিঠ সোজা রাখতে হবে। গভীর শ্বাস নিতে হবে। এই সময় পেটের মাসল গুলোর টান দেখতে হবে। এভাবে ৩০ সেকেন্ড করে তিনবার করতে হবে।
উপকারিতাঃ
* দেহভঙ্গি উন্নত করে।
*ব্যাক পেইন থেকে মুক্তি দেয়।
*শরীরের কর্মক্ষমতা বাড়ায়।
*বিপাকের হাডর বাড়ায়।
ব্যায়ামের নাম পুশ আপ।
পুশ আপ অনেক উপকারী ব্যায়াম। গবেষণা করে দেখা গেছে ওজন কমানো হাড় শক্তিশালী ও পেশি শক্তিশালী করতে এই ব্যায়ামের উপকার অনেক বেশি।
পদ্ধতি
*প্ল্যাংক পদ্ধতি দিয়ে শুরু করতে হবে। এই সময় পিট ও ঘাড় সোজা রাখতে হবে।
*কনুই বাঁকিয়ে শরীর নিচে নামাতে হবে। মাটি যেন স্পর্শ না করে।
*পুনরায় কনুই সোজা করে পূর্বের অবস্থায় ফিরতে হবে।
*এভাবে তিনবার করে যতবারে করবেন করতে পারেন।
উপকারঃ এ পদ্ধতিতে কাধ বুক ও হাতের মাশুল বৃদ্ধি হয়। হাঢড় শক্তিশালী করে।
হৃদপিন্ডের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় ও হৃদপিন্ডের পেশিকে শক্তিশালী করে। তাই আসুন এগুলো ব্যায়াম
আমরা ঘরেতেই করতে পারি। প্রিয় পাঠক আজকের কনটেইন খাওয়ার কতক্ষণ পর ব্যায়াম করা উচিত।
ব্যায়াম করার উপকারিতা
প্রতিদিন ব্যায়াম করার কারণে আমাদের শরীরে কোন রোগ জীবাণু বাসা বাঁধতে পারে না। খাওয়ার কতক্ষণ পর ব্যায়াম করা উচিত এ ব্যাপারে আলোচনা করা প্রয়োজন। ব্যায়াম না করার ফলে উচ্চ রক্তচাপ ডায়াবেটিস স্থুলতা এর মত রোগ জীবাণু বাসা বাধে। তাই নিয়মিত ব্যায়াম করা প্রয়োজন
নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে আমাদের স্বাস্থ্য উপকারিতা হয় তার বিবরণ।
ইউমিনিটি শক্তি বৃদ্ধিঃ নিয়মিত ব্যায়াম অথবা হাঁটাহাঁটির ফলে ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে খারাপ টক্সিন গুলো বাহির হয়ে যায়। নিয়মিত ব্যায়াম করার মাধ্যমে শারীরিক ফিটনেস ভালো হয়। হৃদরোগ উচ্চ রক্তচাপ ডায়াবেটিস স্থুলতা ইত্যাদি রোগ বাসা বাঁধতে পারে না। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। প্রতিদিন ব্যায়াম করার ফলে তারুণ্যতা ধরে রাখে।
মানসিক শক্তি বৃদ্ধি করেঃ নিয়মিত ব্যায়াম করার মাধ্যমে শরীরের খারাপ চর্বি গুলো অপসারণ হয়। এছাড়াও শরীরের বর্জ্য পদার্থ গুলো বাহির হয়ে যায়। নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীর ও মানসিক শক্তি বৃদ্ধি পায়।
প্রতিদিন ব্যায়াম মনকে চাঙ্গা করেঃ প্রতিদিন ব্যায়ামের ফলে শরীর ও মন চাঙ্গা থাকে। শরীর প্রফুল্ল থাকে।
ওজন কমায়ঃ প্রতিদিন ব্যায়াম করার মাধ্যমে শরীরের চর্বি গুলো বার্ন হয়। এছাড়াও শরীর ঘামার ফলে ঘামের সাথে টক্সিন বাহির হয়ে যায়। ব্যায়াম করার ফলে শরীরের ওজন কমে এবং অতিরিক্ত ক্যালরি খরচ হয়ে যায়।
শরীর নমনীয় হয়ঃ প্রতিদিন ব্যায়াম করার ফলে আমাদের শরীর ফ্লেক্সিবল হয়। হাত পায়ের জয়েন্ট গুলো সফট হয়। যার কারনে শরীরের প্রফুল্লতা চলে আসে।
শরীর শক্তিশালী হয়ঃ নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে শরীরের চর্বি অপসারিত হয়। পেসি গুলো অনেক শক্তিশালী হয়। জয়েন্ট এর ব্যাথা কমে যায়। এ কারণে শরীর অনেক শক্তিশালী হয়।
কর্মস্পৃহা বাড়েঃ আপনি যদি শারীরিক ও মানসিক সুস্থ না থাকেন তাহলে সকল কাজে অনীহা হয়। নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে শরীরের কর্মস্পৃহা বাড়ে।
ভালো নিদ্রা হয়ঃ নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে শরীর অনেক ক্লান্ত হয়। প্রচুর ঘাম বাইর হয়। যার কারনে ভালো ঘুম হয়। ভালো ঘুমের জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করা দরকার
সকালে ব্যায়াম করার আগে কি খাবেন
আপনারা হয়তো জানতে চাচ্ছেন ব্যায়াম করার আগে কি ধরনের খেতে হবে। গুগলের মাধ্যমে জানতে পারা যায় ব্যায়ামের আগে ভারী খাবার না খাওয়া ভালো। সাধারণত পুষ্টি সমৃদ্ধ এবং বেশিরভাগ ফলমূল জাতীয় খাবার খাওয়াই ভালো। তাহলে ব্যায়াম করার সময় পর্যাপ্ত শক্তি পাওয়া যাবে। ব্যায়াম করার আগে খাবেনঃ
*কলা।
*জব।
*বিভিন্ন ধরনের ফল।
*দই।
*আপেল।
*এক গ্লাস দুধ।
*কাঠবাদাম।
*চিনা।
*বাদাম।
*আখরোট।
*দুটি টোস্ট খেতে পারেন।
*সিদ্ধ মিষ্টি আলু।
*সিদ্ধ ব্রকলি।
*ওটমিল।
*স্যান্ডউইচ।
*ডিম।
*কাঠবাদাম।
*চিনাবাদাম।
ইত্যাদি খেয়ে ব্যায়াম করতে পারেন। তাহলে ব্যায়াম করার সময় পর্যাপ্ত শক্তি পাবেন। তবে যে সকল খাবার বাদ দিবেন তা হলঃ
*অতিরিক্ত চিনি জাতীয় খাবার।
*ভাজাপোড়া খাবার।
*মসলাদার খাবার।
*অ্যালকোহল।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক খাওয়ার কতক্ষণ পর ব্যায়াম করা উচিত। ব্যায়ামের উপকারিতা ও সকালে ব্যায়াম করার উপকারিতা ইত্যাদি বিষয় আলোচনা করা হয়েছে। এগুলো বিষয়ে জানতে আমাদের এই কন্টেন্ট শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়বেন। আশা করি ভালো লাগবে। ভালো লাগলে বন্ধুদের মাঝে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url