ফ্লাইওভার ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পার্থক্য নির্নয়
প্রিয় পাঠক আসুন জেনে নিই ফ্লাইওভার ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পার্থক্য নির্নয়। আমাদের দেশে ঢাকা সহ বিভিন্ন জেলায় ফ্লাইওভার হয়েছে। কিন্তু এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে প্রথম ঢাকায় নির্মাণাধীন আছে। যেটা ঢাকা বিমানবন্দরের কাওলা থেকে চিটাগাং রোডের কুতুবখালী পর্যন্ত বিস্তৃত।
এছাড়া দ্বিতীয়এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের হলো আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। আসুন এছাড়াও আমরা জেনে নিই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের এর যাবতীয় তথ্যাদি।
ভূমিকা
প্রিয় পাঠক আজকের বিষয় ফ্লাইওভার ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পার্থক্য নির্নয়। আমাদের দেশের যে কয়টি মেগা প্রকল্প তার মধ্যে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে একটি। ঢাকা শহরের বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর হয়ে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত অনেক জ্যাম থাকে।
আরও পড়ুনঃ পুরুষদের জন্য খেজুরের উপকারিতার বিবরন
এই জ্যাম হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য ঢাকা বিমানবন্দর হইতে কমলাপুর হয়ে ফার্মগেট হয়ে যাত্রাবাড়ী হয়ে চিটাগাং বিশ্ব রোডের কুতুবখালী পর্যন্তএলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিস্তার।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে সাধারণ জ্ঞান
আজকের বিষয় ফ্লাইওভার ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পার্থক্য নির্নয়। দেশের কয়েকটি মেগা প্রকল্প এর মধ্যে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে একটি। বিসিএস অথবা চাকরির ভাইভা অথবা যে কোন ভাইভাতে মেগা প্রকল্প সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন আসতে পারে। যাবতীয় তথ্যাতি জানা দরকার। আর তথ্যাদি জানার জন্যই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সাধারণ জ্ঞান সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করা হলো।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এর বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত উদ্বোধন কত তারিখে=
২ রা সেপ্টেম্বর ২০২৩ সালে।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট অংশেরদৈর্ঘ্যকত=১১.৫কিলোমিটার।
ঢাকা এক্সপ্রেসওয়ে কত লেনের= ৪লেনের।
এক্সপ্রেসওয়ে তত্ত্বাবধানে রয়েছে কোন প্রতিষ্ঠান= বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশের প্রথম সমুদ্র বন্দর কোনটি- পায়রা সমুদ্র বন্দর।
পায়রা সমুদ্র বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয় কবে=১৩ আগস্ট ২০১৬ সালে।
পায়রা সমুদ্র বন্দরটি কোথায় অবস্থিত= কলাপাড়া পটুয়াখালী।
ফ্লাইওভার ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পার্থক্য নির্নয়
আজকের বিষয় ফ্লাইওভার ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পার্থক্য নির্নয়। যানজটের কারণে সড়ক পরিবহনে চরম ভোগান্তির শিকার আপামর জনতা। সড়ক পরিবহনে এই ভোগান্তি থেকে রক্ষা করতে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করা হয়। এই পরিকল্পনার আলোকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করার সিদ্ধান্ত চলছিল। এরপর বেশ কিছু ফ্লাইওভার তৈরি করা হয়েছে।
এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে নির্মাণ শুরু করার প্রায় এক যুগ পরে ১১.৫ কিলোমিটার উদ্বোধন করা হয়। যার স্থান ছিল বিমানবন্দরের কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত। এছাড়াও ঢাকা শহরে বহুৎ ফ্লাইওভারও করা হয়েছে। ফ্লাইওভার ও এলিফেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দুইটা একই রকমই ভূপৃষ্ঠের উপরে যাতায়াত ব্যবস্থা।
তবে একই রকম হলেও এর মূলে কিছু পার্থক্য রয়েছে। গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডক্টর শামসুল হক বলেন সাধারণত ফ্লাইওভার এর র্যাম্প সংখ্যা বেশি থাকে। এক্সপ্রেসওয়েগুলোর র্যাম্প সংখ্যা কম থাকে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়।
এক্সপ্রেসওয়ে অনেকটা ছিদ্রহীন পাইপ এর মত। একদিকে উঠলে স্বল্প সময়ের মধ্যে অন্যদিকে পৌছে যাবে। এক্সপ্রেসওয়েতে প্রায় ১০ কিলোমিটার এর মধ্যে কোনো র্যাম্প থাকেনা। কারণ সাধারণত এই সকল সড়কে খুব দ্রুত গতিতে গাড়ি চলাচল করে।
এক প্রান্ত থেকে উঠে দ্রুত গতিতে অন্য প্রান্তে চলে যায়। এক্সপ্রেস ওয়ের ওপরে টোল দেওয়া ছাড়া দাড়ানোর কোন সুযোগ নাই। এক্সপ্রেসওয়েকে সুপার হাইওয়ে বলা হয়। কোন মোড় থাকে না ক্রস মুভমেন্ট পার্কিং অথবা মানুষ চলাচল কোন কিছুই থাকেনা।
অন্যদিকে ফ্লাইওভারের অনেক দাগ থাকে। মাঝে মাঝে উঠা নামার জন্য অনেক রাস্তা রয়েছে। এককথায় বলা যেতে পারে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এর সঙ্গে ফ্লাইওভার এর পার্থক্য খুব বেশি নয়। মৌলিক কাঠামোগত কিছু পার্থক্য।
জেনে নিই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে টোল
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে বিমানবন্দরের কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত উদ্বোধন করা হয়। যার দৈর্ঘ্য ১১.৫ কিলোমিটার। এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়েতে সব ধরনের গাড়ি চলবে।তবে মোটরসাইকেল ও তিন চাকার গাড়ি চলবে না। চার ক্যাটাগরিতে যানচলাচলের উপর টোল নির্ধারণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ আমাশয়ে বেলের উপকারিতা সম্পর্কে জানুন
টোলের সর্বনিম্ন পরিমাণ ৮০ টাকা এবং সর্বোচ্চ পরিমাণ ৮০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রথম ক্যাটাগরি কার, ট্যাক্সি জিপ স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্যাল, মাইক্রোবাস ১৬ সিটের নিচে হালকা ট্রাক ৩টনের নিচে ৮০ টাকা। ক্যাটাগরি দুই মাঝারি ট্রাক ৬ চাকা পর্যন্ত ৩২০ টাকা।
ক্যাটাগরি ৩ ট্রাক ৬ চাকার উপরে ৪০০ টাকা। ক্যাটাগরি চার সব ধরনের বাস ১৬সিট বা তার বেশি ১৬০ টাকা। এই টোল হার উদ্বোধনের দিন থেকেই শুরু হয়েছে। কর্তৃপক্ষ টোল কম বেশি করতে পারবেন।
জেনে নিই ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে আপডেট
আজকের পোষ্ট ফ্লাইওভার ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পার্থক্য নির্নয়। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে চালু করা হয় যান জট হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য। সাধারণত ভূপৃষ্ঠ হতে একটু উঁচুতে চার লেনের হাইওয়ে রাস্তাকেই এলিভেটেড এক্সপ্রেস বলা হয়। এক্সপ্রেসওয়ে দেশের প্রথম পাবলিক ও প্রাইভেট পার্টনারশিপে প্রতিষ্ঠিত।
মেগা প্রকল্প মূল এলিভেটেড এক্সপ্রেস এর দৈর্ঘ্য ১৯.৭৩ কিলোমিটার। প্রকল্পে ওঠানামার জন্য মোট 27 কিলোমিটার দীর্ঘ ৩১ টি র্যাম্প রয়েছে। র্যাম্প সহ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এর দৈর্ঘ্য ৪৬.৭৩ কিলোমিটার। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাওলা থেকে শুরু করে।
যাত্রাবাড়ীর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত। আপাদত বিমানবন্দরের পাশে কাওলা হইতে ফার্মগেট পর্যন্ত ১১.৫ কিলোমিটার উদ্বোধন করা হয়েছে। কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত যানবাহন চলাচল করতেছে। মোট র্যাম্প ৩১ টি। এরমধ্যে ১৫ টি উদ্বোধন করা হয়েছে।
বিমানবন্দরে দুইটি কুড়িলে তিনটি বনানীতে চারটি মহাখালীতে তিনটি বিজয় স্মরণীতে দুইটি ও ফার্মগেটে একটি র্যাম্প উদ্বোধন করা হয়েছে।বাকি অংশগুলো ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে কাজ শেষ হবে বলে ধারণা করেন কর্তৃপক্ষ।
এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে এর প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে৮৯৪০ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিবে ২৪১৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আর বাকি টাকা দিবে সম্পৃক্ত দাতা সংস্থা।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে খরচ
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এর নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে 191 কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এক্সপ্রেসওয়ের মোট ব্যয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ৮৯৪০ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা। এরমধ্যে বাংলাদেশ সরকার দেবে ২৪১৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।
কাজ শুরু পহেলা জানুয়ারি ২০২০ সাল। বর্তমানে ৬৫% কাজ হয়ে গেছে। প্রকল্পের মেয়াদ আছে জুন ২০২৪ পর্যন্ত। বাকি টাকা প্রকল্পে ইতাল-থাইয়ের শেয়ার ৫১%, শ্যানডংয়ের ৩৪%, আর সিনোহাইড্রোর শেয়ার ১৫%।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এর সাধারণত নির্দিষ্ট উঠানামার জায়গা রয়েছে। এক্সপ্রেসওয়েতে টোলের সময় ছাড়া কোথাও যানবাহন থামানো যাবে না। এছাড়া এক্সপ্রেসওয়েতে সাধারণ পথচারী অথবা মোটরসাইকেল অথবা থ্রি হুইলার গাড়ি চালানো যাবে না। এক্সপ্রেসওয়েটি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাওলা থেকে।
রেললাইন ধরে তেজগাঁও মগবাজার কমলাপুর হয়ে যাত্রা বাড়ির কাছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী যেয়ে শেষ হয়েছে। মাঝে মাঝে র্যাম্প আছে সে দিক দিয়ে ওঠানামা করা যাবে। বাংলাদেশ সেতু কর্পোরেশন এর দেয়া তথ্য অনুযায়ী ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারীত্বে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
প্রকল্পটির মূল দৈর্ঘ্য ১৯.৭৩ কিলোমিটার। এক্সপ্রেসওয়েতে উঠার জন্য ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ৩১ টি র্যাম্প রয়েছে। র্যাম্পসহ মোট দৈর্ঘ্য ৪৭ কিলোমিটার। প্রকল্পটিতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৯৪০ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা।
সে হিসাবে প্রতি কিলোমিটারের খরচ পড়ে১৯১ কোটি টাকা। ২ রা সেপ্টেম্বর ২০২৩ কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত ১১.৫ কিলোমিটার উদ্বোধন করা হয়েছে। উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাকি কাজ জুন ২০২৪ সালের মধ্যে হবে বলে প্রকল্প পরিচালক বলেছেন।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বাস সার্ভিস
রাজধানীতে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে বসে থাকতে হয়। সেই ক্ষেত্রে এক্সপ্রেস ওয়ে তৈরি হওয়ার জন্য খুব তাড়াতাড়ি এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়া যায়। বিশেষ করে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অনায়াসে যাতায়াত করা যায়। ১৮ই সেপ্টেম্বর চালু হওয়ার প্রথম দিনই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যাত্রী এদিক দিয়ে যাতায়াত করেছেন।
আরও পড়ুনঃ জেনে নিন রূপচর্চায় তুলসী পাতার উপকারিতা
সাধারণত চাকরিজীবী বা কর্মজীবী যাত্রীর গন এ রাস্তায় বেশি যাতায়াত করেন। বিআরটিসি বাস সহ বিভিন্ন বাস সার্ভিস এ রুটে অনেক বেশি। কাউন্টারে টিকিট বিক্রিরতাগণ বলেন প্রতিদিনই যাত্রী সংখ্যা অনেক বেশি বাড়তেছে।
শুরুতে আটটি বাস দিয়ে রুট চললেও কয়েকদিনের মধ্যে ১৩ টি বাস হয়ে গেছে। যেগুলো সার্ভিস ১০ মিনিট পর পর বাসে যাই। এক্সপ্রেস ওয়ে নির্মাণ হওয়াতে যাত্রীরা অনেক খুশি। আমারও আশা করব বাকি কাজগুলো খুব তাড়াতাড়ি করে রাজধানীর যানজট মুক্ত যাতায়াত ব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান জানাই।
লেখকের মন্তব্য
আজকের বিষয় ফ্লাইওভার ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পার্থক্য নির্নয়। এছাড়াও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য লিপিবদ্ধ করা হলো। এই পোস্ট থেকে এলিফিটেড এক্সপ্রেস এর সকল তথ্য পাবেন। আশা করি এই পোস্ট আপনাদের উপকারে আসবে। ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url