বাসক পাতার উপকারিতা, ব্যবহার ও ঔষধি গুণ

বাড়ির ছোট ছেলে-মেয়েদের সর্দি-কাশি হলে পিতা মাতাগনএকধরনের পাতার রস খাওয়াত।আর এই পাতা হলো বাসক ।এই রস আমাদেরকে প্রচুর খেতে হয়েছে ।এই পাতার রস খেতে অনেক তেতো ।আজ এই গুনসম্পুন্ন বিষয় লিখতে বসে সেই তেতো স্বাদের কথা মনে হলো। বাসক পাতার উপকারিতা, ব্যবহারওঔষধিগুণআছে।বাসক পাতার কিছু ক্ষতিকর দিকও রয়েছে ।এই পাতার ওষধী গুনগুলো এবংক্ষতিকর দিকগুলোজানাদরকার । নিচে সবিস্তারে বর্ননা করা হলো ।


ভুমিকা

বাসক পাতার উপকারিতা, ব্যবহার ও ঔষধি গুণ বিদ্যামানা। বাসক একটি ভারত উপমহাদেশের ভেষজ উদ্ভিদ। এ উদ্ভিদটির বৈজ্ঞানিক নাম আড়াটোডা বাসিকা। ভারত উপমহাদেশের প্রায় সব যায়গায় এটি জন্মে। হিন্দিতে বলা হয় আডুসা, বানসা অথবা ভাসিকা। আর্দ্র, সমতলভূমিতে বেশি জন্মে। আমাদের দেশে অনেক জায়গায় বাসক গাছ বানিজ্যিক ভাবে চাষ করা হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ আমলকির উপকারী পুষ্টি ও ওষধি গুনাগুণ

বাসক গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। সাধারনতঃ গাছ ২-৩ মিটার উঁচু হয়ে থাকে । ইহা অনেক শাখা-প্রশাখা বিশিষ্ট হয়। শাখা গুলো গিঁটযুক্ত। পাতা সরল, প্রতিমুখ, বৃন্তক, লেন্স আকৃতির হয় । বসন্তকালে সাদা ফুল ফুটে। ফুলগুলো থোকায় থোকায় ফুটে ।ফল গুলো দেখতে বাদামের মতো । চারা অবস্থায় গাছ দেখতে সবুজ থাকে, কিন্তু পরিণত গাছের কান্ডটি হালকা বেগুনি রঙের হয়।

বাসক পাতার ঔষধি গুণ

বাসক পাতার উপকারিতা, ব্যবহার ও ঔষধি গুণ হিসাবে ব্যাবহিত হয় ।ওষধ তৈরীতে তাজা ও শুকনো উভয় পাতা ব্যবহিত হয় ।বাসকের পাতায় ভ্যাসিসিন নামে একটি প্রাকৃতিক উপাদান আছে । কিছু জরুরিএসেনশিয়াল অয়েলও আছে ।

বাসক পাতার রস শ্লেষ্মা তরল করে নির্গমে সুবিধা করে বলে সর্দি, কাশি এবং শ্বাসনালীর প্রদাহতে বিশেষ উপকারী।বাসক পাতা ওষুধ কোম্পানিগুলো ক্রয় করে। এ থেকে বোঝা যায় এই পাতার ঔষধী গুণ কত। পানির জীবাণু মুক্ত করতে, হাত-পা ফুলে গেলে, চামড়ার রং উজ্জ্বল করতেও এ গাছের উপকারিতা অনেক।

বাসক পাতার উপকারিতা

বাসক পাতার রস ১-২ চামচের সঙ্গে এক চামচ মধু মিশিয়ে খেলে সর্দি-কাশির উপকার হয়। এই পাতার রস দিয়ে৩০ মিনিট রাখলেউকুন মারা যায়। এছাড়া আমবাত ও ফোঁড়ায় পাতা বেটে প্রলেপ দিলে ফোলা ও ব্যথা কমে যায়। প্রস্রাবে জ্বালা-যন্ত্রণা থাকলে এই ফুল বেটে ২-৩ চামচ মিছরির সাথে সরবত করে খেলে উপসম হয়। 

আরও পড়ুনঃ  আমাশয়ে বেলের উপকারিতা সম্পর্কে জানুন

জ্বর অথবা অল্প জ্বর থাকলে বাসকের মূল ৫-১০ গ্রাম থেতিয়ে পানিতে ফুটিয়ে খেয়ে নিন। দিনে ২ বার করে খেলে জ্বর এবং কাশি দুটোই চলে যাবে ।বাসকের কচি পাতা১০-১২টি এক টুকরো হলুদের সাথে বেটে দাদ বা চুলকানিতে লাগালে কয়েক দিনের মধ্যে ভাল হয়ে যায় । বাসক পাতা বা ফুলের ১-২ চামচ রস মধু মিশাতে হবে প্রতিদিন খেলে জন্ডিস ভলো হয়।

 পাইরিয়া বা দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়লে ২০টি বাসক পাতা থেঁতিয়ে ২ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে ১ কাপ থাকতে নামিয়ে উষ্ণ অবস্থায় কুলকুচি করলে এই রোগে উপকার পাওয়া যায়।যাদের হাঁপানির টান আছে তারা বাসক পাতা শুকনো করে, ওই পাতা বিড়ি বানিয়ে ধূমপান করলে শ্বাসকষ্ট নিরাময় হয়।

যাদের ঘামের গন্ধ হয় তারা বাসক পাতার রস গায়ে লাগালে দুর্গন্ধ দুর হয় । এই রস নিয়মিত শরীরে ব্যবহার করলে রঙ ফর্সা হয়।এক কলসি পানিতে তিন-চারটি বাসক পাতা তিন-চার ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখার পর সেই পানি বিশুদ্ধ হয় এবং ব্যাবহার করা যায় ।এছাড়া বাসক পাতার উপকারিতা, ব্যবহার ও ঔষধি গুণ আছে।

বাসকের পাতা খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয় এবং পাতা থেকে হলুদ রং পাওয়া যায়। ফল প্যাকিং এবং সংরক্ষণ কাজে ব্যবহৃত হয়।। বাসক পাতায় অ্যান্টি-মাইক্রোবাল উপাদান আছে যা যক্ষ্মা কমাতে সাহায্য করে ।বাসক পাতার সেবনে আমাদের শরীরের রক্ত পরিষ্কার করে।এছাড়া রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনকরতে ও রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

বাসক পাতার অপকারিতা

বাসক পাতার বেশী ব্যবহার করলে বমিভাম, পেটের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে।গর্ভবতী মহিলাদের বাসক পাতা খাওয়া ঠিকনা। বাসক পাতায় এমন কিছু উপাদানঅছে যা গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর শারীরিক সমস্যাকারণ হতে পারে।বাসক পাতা মধুমেহ রোগে উপশমে নিরাময় হয় । তবে বেশী খেয়ে ফেললে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যেতে পারে এবং ডায়বেটিস রোগীদের অস্বত্বি হতে পারে ।

বাসক পাতা সংক্রান্ত কিছু তথ্য

বাসক পাতার উপকারিতা, ব্যবহার ও ঔষধি গুণ আছে। বাসক পাতা বেটে রস করে অথবা জলে ফুটিয়ে খাওয়া যায় । বাসক পাতা জলে ফুটিয়ে ব্যবহার করতে হলে ভাল করে বাসক পাতা ধুয়ে জলে ফুটিয়ে ছেঁকে নিয়ে ঠান্ডা হলে পান করুন। সর্দি-কাশির জন্য প্রতিদিন ২থেকে৩টির বেশী পাতা খাওয়া ঠিকনা ।

লেখকের মন্তব্য

বাসক পাতার উপকারিতা, ব্যবহার ও ঔষধি গুণ আছে।বিভিন্ন যায়গায় অনেক উদ্ভিদ অবহেলায় পড়ে থাকে যার অনেক অর্থনৈতিক গুরুত্ত আছে । তার মধ্যে বাসক একটি ।এ উদ্ভিদের অনেক গন্ধ থাকায় পশু-পাখি ক্ষতি করেনা ।এই জন্যে আমরা এ উদিভদ সহজে চাষ করতে পারি ।এই উপকারী উদ্ভিদের পোষ্টটি আশা করি ভালো লাগবে ।ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করবেন ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url