জেনে নিনএলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কাকে বলে
সুপ্রিয় পাঠক জেনে নিন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কাকে বলে। এ পোস্টে আরো থাকবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে সম্পর্কে রচনা। এছাড়া আরো থাকবে এক্সপ্রেসওয়ে সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ঢাকা শহরে যানজট কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
দেখা যায় বসে থেকে কাটানোর পরেও নিজস্ব কাজে যাওয়া যায় না। আজকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে সম্পর্কে কিছু আলোচনা করা হবে।
ভূমিকা
দেশের উন্নয়ন করতে হলে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে। আজকে আমাদের পোস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কাকে বলে। রাস্তায় যখন যানজট হয়। বসে থেকে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়। দেখা যায় যানজটের কারণে অনেক কাচামাল বাজারে বেচতে পারে না।
আরও পড়ুনঃ ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার নিয়ম
যার কারনে ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই জন্য ঢাকা শহরের যানজট কমানোর জন্য এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। আসুন এলিভিটেড এক্সপ্রেসওয়ে সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জেনে নিই।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে অনুচ্ছেদ
আমরা এ পোষ্টে জানব এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কাকে বলে। ঢাকা শহরে যানজট কমাতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করা হয়েছে। ১৯.৭৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই প্রকল্পটি একযুগ আগে তৈরি শুরু হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে শুরু করেফার্মগেট ১১.৫ কিলোমিটার উদ্বোধন করা হয়েছে।
এক্স-প্রেসওয়েতে নির্দিষ্ট উঠানামার জায়গা রয়েছে। টোল ছাড়া ৪লেন বিশিষ্ট এই এক্সপ্রেসওয়ে তে কোথাও দাঁড়ানো যাবে না। এক্সপ্রেসওয়েটি হযরত শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে কাওলা থেকে রেললাইন ধরে তেজগাঁও পর্যন্ত।
মগবাজার কমলাপুর হয়ে যাত্রাবাড়ীর কাছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালীতে গিয়ে শেষ হয়েছে। এক্সপ্রেসওয়ে প্রতি কিলোমিটারে খরচ হয়েছে ১৯১ কোটি টাকা। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের তথ্য মতে ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে।
সরকারি বেসরকারি খাতে এই এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের চুক্তির স্বাক্ষর হয়। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণ কাওলা থেকে শুরু করে মগবাজার হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত।
১৯.৭৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। এক্সপ্রেস উঠানামার জন্য ৩১ টি র্যাম্প রয়েছে। র্যাম্পসহ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এর দৈর্ঘ্য ৪৭ কিলোমিটার। এই প্রকল্পটির মোট ব্যয় ৮৯৪০ কোটি টাকা।
এক্সপ্রেসওয়ে হইতে চলাচলের জন্য বিভিন্ন যানবাহনের টোল নির্ধারণ করা হয়েছে। টোলের পরিমাণ সর্বনিম্ন ৮০ টাকা ও সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত একুশে আগস্ট মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগের উপসচিব আবুল হাসানের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
ফার্মগেট পর্যন্ত সব ধরনের বাসের ক্ষেত্রে ১৬০ টাকা টোল নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমান যাত্রীর ভাড়া ৩০ টাকা এই রুটে। এক্সপ্রেসওয়ে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত ১১.৫ কিলোমিটার উদ্বোধন করা হয়েছে।
তেজগাঁও হইতে কুতুবখালী পর্যন্ত বাকি অংশ আগামী বছরে জুন মাসে চালু করা সিদ্ধান্ত হয়েছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প পরিচালক প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে বলেন কাওলা থেকে বনানী অংশটির কাজ শেষ হয়েছে।
কালনা থেকে বনানী সব অবকাঠামো প্রস্তুত আছে। অন্যদিকে বনানী থেকে মগবাজারের অংশ ৪৯.৫% হয়েছে। মগবাজার থেকে কুতুবখালী অংশ ৫% হয়েছে। প্রকল্প পরিচালক আশা করেন আগামী জুন২০২৪ মাসের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন এক্সপ্রেসওয়ে এর কাজ ৬৫% সম্পন্ন হয়েছে। সেতু মন্ত্রণালয় মতে সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্ব পদ্ধতিতে প্রকল্পটিতে বিনিয়োগ করেছে থাইল্যান্ডভিত্তিক কনগ্লোমারেট প্রতিষ্ঠান ইতাল-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড।
, চীনের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান শ্যানডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপ ও সিনোহাইড্রো কর্পোরেশন।প্রকল্পটি এর ইতাল-থাইয়ের শেয়ার৫১% শ্যানডংয়ের ৩৪% আর সিনোহাইড্রোর শেয়ার১৫%। চুক্তি অনুযায়ী এক্সপ্রেসওয়ে এর নির্মাণ সময় সাড়ে তিন বছর।
নির্মাণ পরবর্তী একুশ বছর টোল আদায় করবে ফাস্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের শেয়ার অনুযায়ী লভ্যাংশ পাবে। চুক্তিবদ্ধ সময় শেষ হলে এক্সপ্রেসওয়েটি চলে আসবে বাংলাদেশ সরকারের মালিকানায়।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কাকে বলে
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কাকে বলে বিষয় আলোচনা করা হবে। যেগুলো হাইওয়ে ভূপৃষ্ঠের উপরে নির্মিত করা হয় সেগুলো হাইওয়ে কে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বলে। এক্সপ্রেসওয়েতে সাধারণত ভারী যানবাহন চলাচল করে। এক্সপ্রেসওয়ে সাধারণত যেখানে যানজট অনেক বেশি সেখানে তৈরি করা হয়।
এক কথায় শহরগুলিতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করা হয়। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে তৈরির ফলে যানজট নিরসন হয় ও পরিবেশ দূষণ কমাতে সহায়তা করে।
বাংলাদেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি ২রা সেপ্টেম্বর ২০২৩ সালে উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই এক্সপ্রেস টি বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ।
এটি একটি চারলেনের রাস্তা যেখানে বাস ট্রাক ও ভারী সকল যানবাহন চলাচল করবে। এক্সপ্রেসওয়ে এর বাকি অংশ ২২৪ সালের জুন মাসের মধ্যে শেষ হবে।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দৈর্ঘ্য
ঢাকা শহর যানজট কমাতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হয়। এই এক্সপ্রেসওয়েটির দৈর্ঘ্য ১৯.৭৩ কিলোমিটার। এক্সপ্রেস ওয়েটি বিমানবন্দরের কাছে কাওলা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালীতে গিয়ে শেষ হবে।
ইতিমধ্যে ঢাকার বিমানবন্দরের কাছে কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত ১১.৫ কিলোমিটার উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা ৩রাসেপ্টেম্বর ২০২৩ সালে।
এক্সপ্রেস ওয়েটির র্যাম্প ১৫ টি এর মধ্যে বিমানবন্দরের ২টি,কুড়িলে ৩ টি, বনানীতে ৪ টি মহাখালী তে ৩টি, বিজয় সরণিতে ২টি,ও ফার্মগেটে১টি উদ্বোধন করা হয়। বাকি অংশ ২০২৪ সালের জুন মাস এর মধ্যে শেষ হবে আশা করা যায়।
ঢাকা আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
ঢাকা শহরকে যানজটমুক্ত করার জন্য ঢাকা আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের সিদ্ধান্ত করা হয়। দ্বিতীয় এই এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়েটি ২০২২সালের ১২ ই নভেম্বর নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। এক বছরে প্রায় সাড়ে ৯ শতাংশ কাজের অগ্রগতি হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ডায়াবেটিস চিরতরে নিরাময় এর প্রাকৃতিক উপায়
এই কাজ শেষ করতে বহু ঝামেলায় মুখে পড়তে হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞগণ। বাইপাইল এর ইপিজেড থেকে যাত্রা শুরু করার পর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এর সঙ্গে যুক্ত হবে। এটি যুক্ত হলে ঢাকা যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী থেকে।
বাই পাইলের ইপিজি পর্যন্ত প্রতিদিন গাড়ি সরাসরি যাতায়াত করতে পারবে। এক্সপ্রেস ওয়েটির দূরত্ব দাঁড়াবে ৪৪ কিলোমিটার। সম্প্রীতি এ প্রকল্পটি বিমানবন্দর থেকে আশুলিয়া পর্যন্ত সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় যে কাজের কিছুটা দৃশ্যমান হয়েছে।
আশুলিয়া বেড়িবাধ এলাকায় কিছু পিলার তৈরি হয়েছে। কর্তৃপক্ষ গন বলেছেন নানা সমস্যা মোকাবিলা করে প্রকল্পের কাজ করতে হচ্ছে। আমরা আশা করব এই প্রকল্পের কাজ যেন খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যায়।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন
বহুল প্রতীক্ষিত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ২রা সেপ্টেম্বর ২০২৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন। এক্সপ্রেস ওয়েটির ১৯.৭৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এর মধ্যে ১১.৫ কিলোমিটার উদ্বোধন করা হয়।
বিমানবন্দরের কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত ১১.৫ কিলোমিটার চালু করা হয়। উদ্বোধনের পরে ৩রা সেপ্টেম্বর ২০২৩ সাল সকাল ৬ঃ০০ টা থেকে বিভিন্ন যানবাহন চলাচল শুরু করে। এক্সপ্রেসওয়েটির বাকি অংশ আগামী জুন ২০২৪ সালের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করা যায়।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কাকে বলে বিষয় আলোকপাত করা হলো। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হলো চারলেন বিশিষ্ট একটি রাস্তা। যাহা ভূপৃষ্ঠের উপরে নির্মাণ করা হয়। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে অত্যন্ত শক্তিশালী অবকাটামো। যেখানে বাস ট্রাক সহ বহু ভারি ভারি যানবাহন চলাচল করবে।
আরও পড়ুনঃ জাফরান হেয়ার গ্রোথ থেরাপি ব্যবহারের নিয়ম
সাধারণত যানজট কমানোর জন্য এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে গুলো নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে ও আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নামক দুটি এক্সপ্রেসওয়ে তৈরির কাজ শুরু হয়।
এর মধ্যে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এর বিমানবন্দরের কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত ১১.৫ কিলোমিটার উদ্বোধন করা হয়। বাকি কাজ আগামী ২০২৪ সালের জুন মাসে শেষ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
অপরদিকে আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে খুব ধীরগতিতে চলতেছে। আমরা আশা করি আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে টিও খুব তাড়াতাড়ি নির্মাণ কাজ শেষ হবে। যার দরুন ঢাকা শহর যানজট মুক্ত হোক এটাই কামনা করি।
লেখক এর মন্তব্য
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কাকে বলে এবং এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য এই পোস্টগুলিতে লিপিবদ্ধ করা হলো।
আমরা আশা করি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এর সমস্ত কাজ সমাপ্ত হয়ে ঢাকা শহর যানজটমুক্ত হোক। আশা করি আমাদের এই পোস্ট ভালো লাগবে। ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url