ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার নিয়ম

ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার নিয়ম চালু করা দরকার। এক ধরনের দুগ্ধ জাতীয় খাবার যাহা দুধের ব্যাকটেরিয়াকে গাজন প্রক্রিয়ায় তৈরি করা হয়। দুধের ল্যাক্টোজেন গাজন প্রক্রিয়ায় ল্যাকটি,এসিড,উৎপন্নহয়। ।
মানুষ ৪৫০০ বছর ধরে দই তৈরি করে আসতেছে। সারা পৃথিবীর মানুষ এটা খেয়ে আসতেছে। দুই ধরনের দই আছে। একটি টক দই ও অন্যটি মিষ্টি দই।

ভুমিকা

ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার নিয়ম মেনে চলা দরকার। মিষ্টি দইয়ের অনেক সুনাম রয়েছে। দই আমাদের দেহে প্রোবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। প্রতি ১০০ গ্রাম দই এ পুষ্টি উপাদান আছে। শক্তি ২৫৭ কিলো জুল শর্করা ৪.৭ গ্রাম। চিনি ৪.৭ গ্রাম। স্নেহ পদার্থ ৩.৩ গ্রাম।
আরও পড়ুনঃ ননীবিহীন দুধ খাওয়ার উপকারিতার বিবরন
সু সিক্ত স্নেহ পদার্থ ২.১ গ্রাম। একক অসু সিক্ত ০.৯ গ্রাম। প্রোটিন ৩.৫ গ্রাম। রিবোফ্লাভিন০.১৪ মিলিগ্রাম। ক্যালসিয়াম ১২১ মিলিগ্রাম এছাড়া অ্যামাইনো অ্যাসিড এন্টিঅক্সিডেন্ট ল্যাকটিক সহ আরো অনেক উপাদান আছে। এই পোষ্টে টকদই ও মিষ্টি দই সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।

মিষ্টি দই এর অপকারিতা

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মিষ্টি দই খাওয়া নিষেধ। ডায়াবেটিস রোগীরা মিষ্টি দই খেলে তাড়াতাড়ি রক্তে শর্করা মাত্রা বেড়ে যায়। তারা বহু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তৈলাক্ত খাবারের সময় দই খাওয়া উচিত নয়। তৈলাক্ত খাবারের সঙ্গে দই খেলে শরীরে আরো বেশি ফ্যাট জমে। দই খুব বেশি খাওয়া ঠিক না। বেশী দই খেলে বমন অথবা ডায়রিয়া হতে পারে।

যেদিন মাছ খাবেন মাছের সঙ্গে দই খাবেন না। মাছের সঙ্গে দই খেলে হজমের সমস্যা হয়। কোনরকম তৈলাক্ত খাবার খেলে তার সঙ্গে দই খাবেন না। আম-দই একসঙ্গে খাবেন না খেলে হজমের সমস্যা হবে। দুধের সঙ্গে দই না খাওয়াই ভালো দুধের সঙ্গে দই খেলে হজমের সমস্যা বুক জ্বালা বমি বমি সমস্যা হতে পারে।

মুখে টক দই এর উপকারিতা

ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার নিয়ম মেনে চলা দরকার। মুখে টক দই ব্যবহারে অনেক উপকার পাওয়া যায়। মধু ও টক দই একসঙ্গে মিশিয়ে মুখমণ্ডল এর ত্বকে অথবা অন্যান্য ত্বকে সমান করে মেখে দিতে হবে। অতঃপর ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে। কয়েকদিনে এভাবে করলে ত্বক উজ্জ্বল মসৃণ ও মোলায়েম হবে।

টক দই ও মধু একত্রে খেলেও ত্বকে ফ্রী রেডিকেলের হাতথেকে রক্ষা করে। দুই চামচ টক দই সঙ্গে এক চামচ মধু মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি ভালোভাবে মুখে ও হাতে লাগিয়ে দিন। ৩০ মিনিট পরে ঠান্ডার জল দিয়ে মুখ ও হাত ধুয়ে ফেলুন।

সপ্তাহে এভাবে আপনি একবার করে ব্যবহার করবেন। ত্বক উজ্জ্বল হবে। ব্রণের দাগ থাকবে না কালো দাগ থাকলে উঠে যাবে। এছাড়া এই মধু ও টক দই মিশ্রণ মাথার চুলেও ব্যবহার করতে পারেন। চুল ঝরঝরে হবে মাথায় খুশকি থাকবে না।

ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার নিয়ম

শরীরে ওজন বৃদ্ধি হলে খুব দ্রুত ওজন কমানো কষ্টকর। ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার নিয়ম মেনে চলতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম হাটাহাটি সঙ্গে ডায়েট চার্ট নিয়মতান্ত্রিকভাবে মেনে চললে আস্তে আস্তে ওজন কমে যাবে। ডায়েট চাটের মধ্যে টক দই রাখা যায়। টক দই যেহেতু শর্করা কম সেহেতু ওজন কমাতে সহায়তা করে।

খাবার তালিকায় দই অথবা অন্য কোন উপাদানের সঙ্গে রেখে খেতে হবে যেন স্বাভাবিক খাবার চাহিদা কমে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে টক দই ওজন কমানোর জন্য ভালো বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে গ্রহণ করা যেতে পারে। টমেটো কুচি, পেঁয়াজকুচি, জিরা গুড়া, কাঁচামরিচ কুচি এবং সঙ্গে টক দই নিয়ে মিশিয়ে রায়তা বানিয়ে নিন।

এই রায়তা খেলে ওজন কমে যাবে। চিয়া বীজ ভিজিয়ে রেখে টক দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেয়ে নিন। এছাড়া স্মুদি তৈরি করা যায়। নানান রকম ফল দুধ সামান্য টক দই চিয়া বীজ একসঙ্গে ব্লেন্ডারে পেস্ট করতে হবে। কাচের গ্লাসে স্মুদি ঢেলে খেয়ে নিন।

সব সময় পেট ভরা থাকবে অন্য কিছু খাওয়ার চাহিদা থাকবে না। ওজন কমে যাবে। টক দইয়ের সঙ্গে ফল খেতে পারেন। আপেল, কলা, পেয়ারা, ডালিম, তরমুজ ইত্যাদি ছোট করে কেটে টক দই মিশে খেয়ে নিবেন। খাবারে প্রচুর খাইবার আছে ও ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ আছে।

বাদামের সঙ্গে টক দই খেজুর আখরোট ইত্যাদি মিশিয়ে খেয়ে নিতে পারেন। অতিরিক্ত ক্যালরি নষ্ট করে ওজন কমাতে সাহায্য করবে। ওটস এর সঙ্গে দই খাওয়া যায়। অতএব এগুলো নিয়ম মেনে টক দই খেলে ওজন কমার সম্ভাবনা রয়েছে।

রাতে টক দই খাওয়ার উপকারিতা 

আয়ুর্বেদ মতে টক দই দেহে কাফা দশা বাড়িয়ে দেয়। রাতে টক দই খেলে শ্লেষ্মার উৎপাদন বাড়ায়। রাতে ঘুমানোর সময় টক দই খেয়ে ঘুমাতে পারেন। টক দই খেয়ে ঘুমালে ঘুম ভালো হবে ক্যালসিয়াম মিনারেল ও এমাইনো এসিড থাকায় শরীরের ভারসাম্য রক্ষা হবে।

সকালে ঘুম থেকে উঠে ক্লান্তি মনে হবে না। হাড় ও মাংসপেশী মজবুত হবে। তাই আসুন আমরা নিয়মিত টক দই খেয়ে আমাদের শরীরে বিভিন্ন জৈবিক চাহিদা পূরণ করি এবং পুষ্টি উপাদানগুলো গ্রহণ করে শরীরের সুস্থ রাখি।

মিষ্টি দই এর উপকারিতা

দই একটি উৎকৃষ্ট উপাদেয় খাবার। দই কে বলা হয় প্রবায়োটিক। মিষ্টি দই খেলে দইয়ে থাকা ব্যাকটেরিয়া গুলো হজমের সহযোগিতা করে। সাধারণত দেহে থাকা সকল খারাপ ব্যকটেরিয়া গুলো ধ্বংস করে দেয়। কোষ্ঠকাঠিন্য ও পেটের গ্যাস কমায়।
আরও পড়ুনঃ অলিভ অয়েল তেল ব্যবহারের নিয়ম
মিষ্টি দই খেলে দইয়ের ভিতর ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস থাকায় হাড় ও মাংসপেশী আরো বেশি মজবুত হয়। অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকি কমায়। মিষ্টি দই খেলে এর ভিতরে থাকা ব্যাকটেরিয়া ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে সর্দি-কাশি ঠান্ডা লাগা ইত্যাদি প্রতিরোধ করে। 
এছাড়া দইয়ে অ্যামাইনো এসিড থাকার জন্য শারীরিক গঠনে ভূমিকা রাখে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। মিষ্টি দই খেলে মিষ্টি দইয়ে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো করে।ত্বক নরম ও তেলতেলে করে। মিষ্টি দইয়ে ক্যালসিয়াম ভিটামিন ডি ও প্রোটিন থাকায় হাড় ও দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

 ভিটামিন শোষণ করে পেশী উন্নত রাখে। মিষ্টি দইয়ে প্রপাটিক থাকার জন্য হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।অন্ত্রে কোন ব্যাকটেরিয়া জনিত সমস্যা হলে ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। দই খেতে অনেক মজা এবং বৈচিত্র স্বাদের। যদি বগুড়া তৈরি দই হয় তাহলে খেতে অনেক সুস্বাদু।

 দই কেও অপছন্দ করে না। দই এর শর্করা দ্রুত শক্তিতে রূপান্তরিত করে যার কারণে দই খেলে শক্তি বৃদ্ধি হয়। দইয়ের শরকরা ও প্রটিন মিশ্রণ থাকায় খাবার পরে দই খাওয়াতে তৃপ্তি বাড়াতে পারে। তৃষ্ণা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া অতিরিক্ত খাওয়া হলে দই সে খাবার হজম করে।

টক দই এর উপকারিতা

ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার নিয়ম মেনে চললে অনেক উপকার রয়েছে। খুব বেশি না খাওয়াই ভালো। নিয়মতান্ত্রিক খাওয়া দরকার। পূর্ণবয়স্ক 200 গ্রাম টক দই খাবেন কিশোরেরা ১০০ গ্রাম টক খাবেন। টক দইয়ে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, প্রয়োজনীয় ফ্যাট, রাইবোফ্লাভিন, ভিটামিন এ, ও ভিটামিন সি।

ভিটামিন বি ৬ ও ভিটামিন বি ১২ আরো অনেক উপাদান রয়েছে।যা শরীরের স্বাস্থ্য ভালো রাখে ।হাড় ও বেশি স্বাস্থ্য ভালো রাখে। শরীরে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করে। রোগ প্রতিরোধে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। অন্ত্রে খারাপ ব্যাকটেরিয়া দূর করে।

ভালো ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে।ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। টক দই দুধের ঘাটতিও পূরণ করে। ওজন কমাতে চাইলে আপনার খাবারে টক দই রাখুন। এছাড়া অনেক সুস্বাদু রান্নাতে টক দই ব্যবহার হয়।

যেমন রোস্ট তৈরিতে টক দই ব্যবহার করা হয়।সুস্বাদু বিরিয়ানি অথবা কাচ্চিতেও টক দই ব্যবহার করা হয়। নিয়মিত টক দই খেলে কোলন ক্যান্সার, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল সম্যো দূর করে। তাই আমরা নিয়মিত টক দই খেয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করব।

টক দই খাওয়ার অপকারিতা

যাদের শরীর ফোলা ভাব আছে, কাশি আছে অথবা প্রদাহ জনিত সমস্যা আছে তাদের দই না খাওয়াই ভালো। দুধ ও টক দই একসঙ্গে খাবেন না। হজমের সমস্যা হবে এবং ডায়রিয়া হতে পারে।

চিনি দিয়ে টক দই না খাওয়ায় ভালো। টক দই গরম করে খাবেন না।মাছ বা মাংস খাওয়ার পরে টক দই খাবেন না। সমস্যা হবে এমনকি ডায়রিয়া হতে পারে। চিনি মিশিয়ে টক দই খাবেন না। চিনি মিশিয়ে টক দেখে ডায়াবেটিসের সমস্যা হতে পারে।

লেখক এর মন্তব্য

দই ও টক দই অনেক উপকারী খাবার। যেহেতু গোটা বিশ্বব্যাপী এন্টিবায়োটিক এর পরিবর্তে প্রোবায়োটিক ব্যবহারের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার নিয়ম চালু করা দরকার। যার দ্বারা শরীরে প্রবায়োটিক প্রবেশ করবে।

ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া গুলো দূর করা যাবে। এই পোস্টে টক দই ও মিষ্টি দইয়ের উপকারিতা বিভিন্ন চিকিৎসার ব্যাবহার আলোচনা করা হয়েছে। আশা করা যায় উপকৃত হবেন। পোস্টগুলো ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করবেন।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url